বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধনের সুপারিশ

  •    
  • ৭ ডিসেম্বর, ২০২১ ২২:৪৮

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বর্তমান আইনে পাবলিক প্লেস ও পরিবহনে ধুমপানে বিধিনিষেধ নেই। এর জন্য শাস্তিমূলক কোনো ব্যবস্থা নেই।

তামাকজাত পণ্যের ব্যবহার নিরুৎসাহিত করতে বিদ্যমান আইন সংশোধনের সুপারিশ করা হয়েছে।

মঙ্গলবার রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে এক আলোচনা সভায় সংশ্লিষ্টখাতের বিশেষজ্ঞরা এই সুপারিশ করে বলেন, বর্তমান আইনে পাবলিক প্লেস ও পরিবহনে ধুমপানে বিধি নিষেধ নেই। এর জন্য শাস্তিমূলক কোনো ব্যবস্থা নেই।

আলোচকরা বলেন, বিক্রয়স্থলে তামাকপণ্য প্রদর্শন এবং তামাক কোম্পানির সামাজিক দায়বদ্ধতা কর্মসূচি (সিএসআর) সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ না থাকায় প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত ২০৪০ সালের মধ্যে তামাকমুক্ত বাংলাদেশ অর্জনে যথেষ্ট অগ্রগতি নেই। প্রচলিত তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনকে শক্তিশালী করতে অনেক বিষয় সংশোধন করতে হবে। তা না হলে প্রধানন্ত্রীর ঘোষিত লক্ষ্য অর্জন কঠিন হবে।

ক্যাম্পেইন ফর টোব্যাকো ফ্রি কিডস্ (সিটিএফকে)- এর সহায়তায় ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির আইন বিভাগ এই আলোচনা সভার আয়োজন করে। এতে 'টোবাকো কন্ট্রোল রুলস ইন বাংলাদেশ: এনালাইসিস অব গ্যাফস এন্ড প্রোপোসড রিফর্মস' শীর্ষক গবেষণার ফলাফল তুলে ধরা হয়।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি আ. ফ. ম. রুহুল হক। বিশেষ অতিথি ছিলেন স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব কাজী জেবুন্নেছা বেগম, জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ সেলের সমন্বয়কারী ও অতিরিক্ত সচিব হোসেন আলী খোন্দকার এবং ক্যাম্পেইন ফর টোব্যাকো ফ্রি কিডস্ (সিটিএফকে) এর সাউথ এশিয়া প্রোগ্রামের রিজিওনাল ডিরেক্টর বন্দনা শাহ।

ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য অধ্যাপক ড. গণেশ চন্দ্র সাহা অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন। গবেষণার ফলাফল তুলে ধরেন ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান এবং টোব্যাকো কন্ট্রোল অ্যান্ড রিসার্চ সেল এর প্রেসিডেন্ট ব্যরিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী।

আলোচনা পর্বে অংশ নেন ক্যাম্পেইন ফর টোব্যাকো ফ্রি কিডস (সিটিএফকে), বাংলাদেশ এর লিড পলিসি অ্যাডভাইজার মো. মোস্তাফিজুর রহমানসহ জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ সেল, তামাকবিরোধী সংগঠন এবং সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা।

গবেষণায় বলা হয়, গ্লোবাল অ্যাডাল্ট টোব্যাকো সার্ভে (গ্যাটস) ২০১৭ এর তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশে ৩৫ শতাংশ প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ তামাক ব্যবহার করেন। দেশে প্রায় ৩ কোটি ৭৮ লাখ মানুষ আছেন যারা সরাসরি তামাক ব্যবহার করেন। এছাড়া ধূমপান না করেও প্রায় ৩ কোটি ৮৪ লক্ষ প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ বিভিন্ন পাবলিক প্লেস, কর্মক্ষেত্র ও পাবলিক পরিবহনে পরোক্ষ ধূমপানের শিকার হন।

বাংলাদেশে প্রতিবছর ১ লাখ ৬১ হাজার মানুষ তামাকজনিত রোগে মারা যায়। ২০১৭-১৮ অর্থবছরে তামাক ব্যবহারের অর্থনৈতিক ক্ষতির পরিমাণ ছিল ৩০ হাজার ৫৬০ কোটি টাকা।

ড. আ. ফ. ম. রুহুল হক বলেন, এই গবেষণার ফলাফল নীতি-নির্ধারকদেরকে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধন বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে।

কাজী জেবুন্নেছা বেগম বলেন, তামাক নিয়ন্ত্রন আইনটি সংশোধন করে যুগপোযোগী করা অত্যন্ত প্রয়োজন। আমরা আইনটি সংশোধনের কাজ করছি। আশাকরি খুব শিগগিরই সংশোধনীর খসড়াটি চূড়ান্ত করতে পারবো।

ব্যরিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষিত ২০৪০ সালের মধ্যে তামাকমুক্ত বাংলাদেশ গড়তে এই গবেষণা গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে।

গবেষণায় তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন শক্তিশালী করতে যেসব সুপারিশ করা হয় সেগুলো হলো:

সব পাবলিক প্লেস, কর্মক্ষেত্র ও পাবলিক পরিবহনে ‘ধূমপানের জন্য নির্ধারিত স্থান’ রাখার বিধান বিলুপ্ত করা। বিক্রয়স্থলে তামাকজাত দ্রব্য প্রদর্শন নিষিদ্ধ করা, তামাক কোম্পানির ‘সামাজিক দায়বদ্ধতা কর্মসূচি’ বা সিএসআর কার্যক্রমসহ সব ধরনের পৃষ্টপোষকতা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করা।

সচিত্র স্বাস্থ্য সতর্কবার্তার আকার বৃদ্ধি করে ন্যূনতম ৮৫ শতাংশ নির্ধারণসহ তামাকপণ্য মোড়কজাতকরণে কঠোর বিধিনিষেধ (প্লেইন প্যাকেজিং) আরোপ করা। বিড়ি-সিগারেটের খুচরা শলাকা এবং প্যাকেটবিহীন জর্দা-গুল বিক্রয় নিষিদ্ধ করা। ই-সিগারেট, হিটেড টোব্যাকো প্রোডাক্টস (এইচটিপি) ও নিকোটিন পাউচসহ সকল ইমার্জিং টোব্যাকো প্রোডাক্টস আমদানি, উৎপাদন ও বিক্রয় নিষিদ্ধ করা।

এ বিভাগের আরো খবর