কোভিড-১৯ ভাইরাসের নতুন ধরন ‘ওমিক্রন’-এর গতি ভারতে তৃতীয় ঢেউয়ের শঙ্কা বাড়াচ্ছে। প্রতিবেশি দেশটিতে ওমিক্রনে প্রথম আক্রান্তের খবর পাওয়া যায় ২ ডিসেম্বর। ৭ ডিসেম্বর সকাল পর্যন্ত আক্রান্তের সংখ্যা ২৩ জনে পৌঁছেছে। অর্থাৎ পাঁচদিনে সংক্রমণ ১০ গুণের বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে।
ভারতে ওমিক্রনের প্রথম দুটি ঘটনা কর্নাটকে রিপোর্ট করা হয়। ইতোমধ্যে ভারতের পাঁচটি রাজ্যে শনাক্ত হয়েছে। এর মধ্যে মহারাষ্ট্রে ১০, রাজস্থানে ৯, কর্নাটকে ২ এবং দিল্লি ও গুজরাটে একজন করে রোগী পাওয়া গেছে।
রাজস্থানের জয়পুরে ওমিক্রন ধরনে আক্রান্ত নয়জনের সন্ধান পাওয়া গেছে। তারা সবাই একই পরিবারের সদস্য। ওই পরিবারের চার সদস্য দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে ফিরেছিলেন এবং সেখান থেকে ওমিক্রন ছড়িয়ে পড়ে বাকি পাঁচজনের মধ্যে। উদ্বেগের বিষয় হল, এই পরিবার ২৮ নভেম্বর জয়পুরে এক বিয়ের অনুষ্ঠানে যোগ দেয়। এখন প্রশাসন কন্টাক্ট ট্রেসিং করে বাকিদের সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহের চেষ্টা করছে, যাতে এটির ছড়িয়ে পড়া বন্ধ করা যায়।
রাজস্থান ছাড়াও ওমিক্রন মহারাষ্ট্রে দ্রুতগতিতে ছড়িয়ে পড়ার আলামত পাওয়া যাচ্ছে। এখানে মঙ্গলবার পর্যন্ত ১০ জন ওমিক্রন আক্রান্ত বলে শনাক্ত হয়েছে। তারা সবাই দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে ফিরেছেন। মহারাষ্ট্রে ওমিক্রনের প্রথম কেস আসে ৮ ডিসেম্বর। এখানে ডোম্বিলিতে একজন, পিম্পরি চিঞ্চওয়াড়ে দু’জন, পুনেতে একজন এবং মুম্বাইয়ে দু’জনের শরীরে সংক্রমণ পাওয়া গেছে।
রাজস্থান রাজ্যের স্বাস্থ্যমন্ত্রী রাজেশ টোপে বলেছেন, সোমবার জোহানেসবার্গ থেকে মুম্বাই ফিরে আসা দু’জনের শরীরে ওমিক্রন পাওয়া গেছে। তারা ভ্যাকসিনের দুটি ডোজও পেয়েছিলেন। এখন পর্যন্ত পাওয়া ওমিক্রনের রোগীদের মধ্যে একটি বিষয় কমন, এদের কারো মধ্যে শ্বাসকষ্ট বা অক্সিজেনের মাত্রা কমে যাওয়ার মতো গুরুতর লক্ষ্মণ দেখা যায়নি।
জিম্বাবুয়ে থেকে ফিরে আসা একজনকেও গুজরাটের জামনগরে ওমিক্রনে আক্রান্ত পাওয়া গেছে। দিল্লিতে তানজানিয়া থেকে ফিরে আসা একজন ওমিক্রণে আক্রান্ত বলে শনাক্ত হয়েছেন। দিল্লির স্বাস্থ্যমন্ত্রী সত্যেন্দ্র জৈন জানান, তানজানিয়া থেকে ফিরে আসা ওই ব্যক্তি কার বা কাদের সঙ্গে দেখা করেছিলেন সে বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে।
উদ্ভূত পরিস্থিতিতে ওমিক্রন ভারতে করোনার তৃতীয় তরঙ্গের ঝুঁকি বাড়িয়েছে। আইআইটি’র বিজ্ঞানী মণীন্দ্র আগরওয়াল বলেন, ওমিক্রনের কারণে ভারতে করোনার তৃতীয় তরঙ্গ হতে পারে। ফেব্রুয়ারিতে এর সর্বোচ্চ সংখ্যা হতে পারে এবং সে সময় প্রতিদিন এক থেকে দেড় লাখ মানুষ এই ধরনে আক্রান্ত হওয়ার খবর আসতে পারে। একইসঙ্গে তিনি বলেছেন, তৃতীয় ঢেউ এলেও তা করোনা দ্বিতীয় ঢেউয়ের চেয়ে কম বিপজ্জনক হবে।