‘আওয়ামী লীগের টিকেট নিয়ে আপনাদের কাছে এসেছি। আপনাদের কাছে ভোট দাবি করতেছি। আপনারা আগামী ২৬ তারিখে আমাকে ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করবেন। কোনো কেন্দ্র উনি নিজের হাতে নিয়ে যাবে, এগুলো খামাকা কথা। কেন্দ্র দখল করলে আমরা করব, জোর করে ভোট নিলে আমরা নিব, কারণ আমরা সরকারের প্রতিনিধি। ইনশাআল্লাহ।’
শনিবার সন্ধ্যায় নির্বাচনি কার্যালয় উদ্বোধনের সময় এমন বক্তব্য দেন নোয়াখালীর সদর উপজেলার দাদপুর ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান ও আসন্ন ইউপি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী দেলোয়ার হোসেন দেলু। তিনি সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি।
রোববার রাতে এ ঘটনার একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। এমন বক্তব্যের পর নিজেদের আতঙ্কের কথা জানিয়েছেন দাদপুরের ভোটাররা।ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের চতুর্থ ধাপে ২৬ ডিসেম্বর সদর উপজেলার নয়টি ইউনিয়নে ভোট হবে। ইতোমধ্যে ইউনিয়নগুলোতে আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী চূড়ান্ত করা হয়েছে। ৭ ডিসেম্বর অন্য প্রার্থীদের মধ্যে প্রতীক বরাদ্দ দেয়া হবে।
নির্বাচনকে সামনে রেখে শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে দাদপুর ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ড বারাহীপুর এলাকায় নির্বাচনি কার্যালয় উদ্বোধন করেন আওয়ামী লীগ প্রার্থী দেলোয়ার হোসেন দেলু। সেখানে তিনি নিজের নেতাকর্মী ও স্থানীয় ভোটারদের উদ্দেশে বক্তব্য দেন।
একই অনুষ্ঠানে দেলুর কর্মী ইউপি সদস্য জহিরুল ইসলাম বলেন, ‘কেন্দ্রের মধ্যে ১৪৪ ধারা জারি করে দিব। নৌকার বিরুদ্ধে ভোট করলে তাদের তালিকা আমরা কড়া-গণ্ডায় গুনব। প্রশাসন তাদেরকে ধরার জন্য সব সময় প্রস্তুত রয়েছে।’
নৌকার প্রার্থী দেলোয়ার হোসেন দেলু এমন বক্তব্য দেয়ার কথা স্বীকার করেন।
তিনি বলেন, ‘আমি অন্য সূত্র ধরে এ কথা বলেছি। ফেসবুকে ভিডিওটি ছড়িয়ে পড়েছে বলে আমি জানতে পেরেছি। এটি আমার ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী মিজানুর রহমান শিপনের কাজ। এ ঘটনায় আমি থানায় অভিযোগ করব।’
স্বতন্ত্র প্রার্থী মিজানুর রহমান শিপন বলেন, ‘তিনি নিজ মুখে কেন্দ্র দখলের কথা বলেছেন, যার ভিডিও ইতোমধ্যে সবখানে ছড়িয়ে পড়েছে। আমি কেন উনার বিরুদ্ধে অপপ্রচার করব। শুধু এই ভিডিও নয়, নৌকার প্রার্থী ইতোমধ্যে তার সব নির্বাচনি পথসভা, শোডাউন, উঠোন বৈঠকে ভোটের দিন জোর করে কেন্দ্র দখল করে ভোট ছিনিয়ে নেয়া ও ভোটের আগে আমার কর্মীদের এলাকা ছাড়া করার ঘোষণা দিয়ে আসছেন।’
তিনি বলেন, 'চেয়ারম্যান থাকা অবস্থায় তিনি অনেক অনিয়ম করেছেন। এখন আবার ভোটের দিন কেন্দ্র দখল করাসহ আমার লোকজনকে বিভিন্নভাবে হুমকি-ধমকি দিচ্ছেন। আমি এসব বিষয়ে থানায় জিডি করে রেখেছি।'
সদর উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. জুলকার নাঈম বলেন, ‘একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন সম্পন্ন করতে নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে সব ধরনের ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। কোনো প্রার্থী যদি নির্বাচনে প্রভাব বিস্তার করতে এমন ঘোষণা দেন, তাহলে অবশ্যই সংশ্লিষ্ট রির্টানিং কর্মকর্তা এ বিষয়ে আইনি ব্যবস্থা নেবেন।’