বগুড়ার সারিয়াকান্দিতে গ্রাহকের প্রায় এক কোটি টাকা লোপাট করে গা ঢাকা দেয়ার অভিযোগ উঠেছে বাঁধবাসী একতাবদ্ধ শ্রমজীবী সমবায় সমিতি লিমিটেডের পরিচালকদের বিরুদ্ধে।
উপজেলার পৌর এলাকাসহ বাইরের বিভিন্ন ইউনিয়নে এই সমিতির সদস্য সংখ্যা প্রায় ৬০০ জন। পরিচালকরা সদস্যদের কাছ থেকে মাসিক সঞ্চয় ও সাপ্তাহিক সঞ্চয়ের কথা বলে টাকা তুলতেন।
এ বিষয়ে সমিতির সদস্য পৌর এলাকার হিন্দুকান্দি গ্রামের শমশের আলী সারিয়াকান্দি থানায় একটি লিখিত অভিযোগও দিয়েছেন।
অভিযোগে বলা হয়েছে, ২০০৪ সালে সারিয়াকান্দি সদর ইউনিয়নের দীঘলকান্দি ছয় মাথার মোড়ে বাঁধবাসী একতাবদ্ধ শ্রমজীবী সমবায় সমিতি লিমিটেড নামে একটি সমিতি স্থাপিত হয়। সদর ইউনিয়নের দীঘলকান্দি গ্রামের খোরশেদ আলী, টুকু মিয়া, জহির রায়হান, রহিম মিয়া এবং মিঠু মিয়া ওই সমবায় সমিতি খুলে শমসের আলীর কাছ থেকে দীর্ঘ কয়েক বছরে ১৮ লাখ ২১ হাজার ৫০০ টাকা নিয়েছেন। বর্তমানে তাদের কাউকেই এখন তিনি খুঁজে পাচ্ছেন না।
পৌর এলাকার চা দোকানি লিচু মিয়া জানান, তার ওই সমিতিতে প্রায় সাত লাখ টাকা জমা আছে।
সদর ইউনিয়নের পারতিত পরল গ্রামের সঞ্চিতা বেগম বলেন, ‘আমার স্বামী রাজমিস্ত্রির কাজ করেন। অনেক কষ্টে আমাদের সংসার চলে। মানুষের বাড়ি থেকে পানি নিয়ে এসে খাই। বাড়িতে টিউবওয়েল বসানোর জন্য সমিতিতে গত বছর থেকে দুই নামে দৈনিক ৫০ টাকা করে জমা করছি। সর্বমোট ৩১ হাজার টাকা জমা হয়েছে। সমিতির লোকদের উধাওয়ের কথা শুনে আমার সংসারে নানা ধরনের অশান্তি হচ্ছে।’
আমেনা বেগম নামে আরেক সদস্য বলেন, ‘দুই বছর ধরে আমি ওই এনজিওতে সঞ্চয় রাখছি। এখন দেখি ওই এনজিওর লোকজন নেই। আমার অনেক টাকা ছিল ওখানে। আমি টাকা না পেলে মারা যাব।’
সারিয়াকান্দি পৌরসভার মেয়র মতিউর রহমান মতি বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে সমিতির অনেক সদস্য আমার কাছে অভিযোগ নিয়ে আসছে। অসহায়দের টাকা ফিরিয়ে দিতে আমি তাদেরকে প্রশাসনের সহায়তার বিষয়ে আশ্বস্ত করেছি।’
সারিয়াকান্দি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান বলেন, ‘এ বিষয়ে একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। মানবিক দিক বিবেচনায় সমিতির অসহায় সদস্যদের টাকা উদ্ধারের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হবে।’