ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের মন্ত্রীরা যেসব কথা বলেন সেগুলো কোনো সুস্থ-সভ্য মানুষের ভাষা হতে পারে না বলে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
সরকারের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আপনাদের মন্ত্রীরা যে ভাষায় কথা বলেন, কোনো সুস্থ-সভ্য মানুষ এ ভাষায় কথা বলতে পারে না।’
রোববার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি ও বিদেশে উন্নত চিকিৎসার দাবিতে জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের সমাবেশে এ কথা বলেন ফখরুল।
সম্প্রতি তথ্য প্রতিমন্ত্রী বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান, বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও তার পুত্র তারেক রহমান সম্পর্কে অশালীন ভাষায় বক্তব্য দেন। সে বিষয়টিকেই সামনে এনে এসব কথা বলেন ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
এরই মধ্যে তথ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসানের ওই বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোতে ভাইরাল হয়েছে। এতে দল এবং দলের বাইরেও সমালোচনার মুখে পড়েন তিনি।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের উদ্দেশে বলেন, ‘তিনি বিএনপির ভুল ছাড়া আর কিছুই দেখতে পান না। শুধু বিএনপি-বিএনপি-বিএনপি। আপনারা বলে থাকেন, বিএনপি নাকি নাই; বিএনপি যদি না-ই থাকে তাহলে বিএনপিকে নিয়ে এত দুঃস্বপ্ন দেখেন কেন?’
সমবেশে মির্জা ফখরুল দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবি করে বলেন, ‘তাকে সম্পূর্ণ মিথ্যা একটি মামলায় কারাগারে পাঠানো হয়েছে। রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তার করে তার সাজা দেয়া হয়েছে। যেখানে লোয়ার কোর্ট থেকে দেয়া হয়েছিল ৫ বছর সাজা, সেখানে হাইকোর্টে দেয়া হয়েছে ১০ বছর। এতেই বোঝা যায় কীভাবে রাষ্ট্রিয় প্রতিষ্ঠানগুলো ব্যবহার করছেন। কীভাবে বিচার বিভাগের স্বাধীনতা হরণ করছেন। গণমাধ্যমকে নিয়ন্ত্রণ করছেন। এই রাষ্ট্রকে একদলীয় রাষ্ট্রে পরিণত করেছেন। সে কারণে খালেদা জিয়াকে চিকিৎসা না দিয়ে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিচ্ছেন।’
তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকার গণতন্ত্রের কথা মুখে বলে, বিশ্বাস করে না। ১৯৭১ সালে স্বাধীনতার পর থেকে তারা একই কাজ করে আসছে। একসময় গণতন্ত্রকে বাদ দিয়ে বাকশাল গঠন করে একনায়কতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছিল।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘বেগম খালেদা জিয়া শুধু বিএনপি নেত্রী বলে আমরা বলছি না, বেগম খালেদা জিয়া এই দেশের মানুষের কল্যাণের জন্য, গণতন্ত্রের জন্য, স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষার জন্য, আপসহীন ভূমিকার জন্য দেশের মানুষই তার মুক্তি চায়।’
শ্রমিকরা সব সময় আওয়ামী লীগ সরকারের কাছে অবহেলিত উল্লেখ করে ফখরুল বলেন, ‘আমাদের দুর্ভাগ্য, যারা ক্ষমতায় আছে তারা বড় মানুষদের কথা চিন্তা করেন। যাদের মিল আছে, ফ্যাক্টরি আছে তাদের প্রণোদনা দেন। কিন্তু যারা মিল ফ্যাক্টরিগুলো চালু রেখেছেন, গাড়ির চাকা চালু রেখেছেন তাদের কোনো প্রণোদনা দেননি।
‘সরকার উন্নয়নের কথা বলে। এই উন্নয়ন কাদের হচ্ছে? সাধারণ মানুষের কোনো উন্নয়ন হচ্ছে না। সে জন্য দেশের মানুষ পরিবর্তন চায়। বিএনপিকে ক্ষমতায় আনতে হবে সেই জন্য বলছি না। এই সরকারকে সরাতে হবে।’
এ সময় উপস্থিত ছিলেন মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমানউল্লাহ আমান, দক্ষিণের আহ্বায়ক আব্দুস সালাম, শ্রমিক দলের সভাপতি আনোয়ার হোসাইন, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কাদের ভূঁইয়া জুয়েলসহ অন্যরা।