সরকারি কর্মকর্তাদের বিদেশ ভ্রমনের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের পাশাপাশি মন্ত্রিসভার অনুমতি লাগবে বলে রায় দিয়েছে হাইকোর্ট।
এ সংক্রান্ত একটি রায় বুধবার প্রকাশ হয়েছে। বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরী ও বিচারপতি কাজী জিনাত হকের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেয়। ১৪ পৃষ্ঠার রায়ে আদালত এ পর্যবেক্ষণ দিয়েছে।
রায়ে আদালত বলেন, 'অতিরিক্ত সচিব এবং তার নিচের র্যাঙ্কের কর্মকর্তাদের সব অফিসিয়াল সফরে দেশের বাইরে যেতে শুধু সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়েরই নয়, অর্থ মন্ত্রণালয় এবং মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের আবশ্যিকভাবে অনুমতি নিতে হবে। ফিরে আসার পর সফরের বিস্তারিত তথ্য সম্বলিত একটি প্রতিবেদন অর্থ মন্ত্রণালয় এবং মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে জমা দিতে হবে। এই তিন কর্তৃপক্ষের অনুমতি পাওয়া ছাড়া কোনো সরকারি কর্মকর্তাদের অফিসিয়াল সফরের অ্যালাউ করা যাবে না।'
অর্থের অপচয়রোধে এটির প্রয়োজন বলেও রায়ে উল্লেখ করা হয়।
এর আগে গত ১৭ ডিসেম্বর এ রায় দেয় হাইকোর্ট।
রায়ে বলা হয়, অতিরিক্ত সচিব এবং তার নিচের পদের কর্মকর্তাদের সব অফিসিয়াল সফরে দেশের বাইরে যেতে শুধু সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের নয়, আবশ্যিকভাবে অর্থ মন্ত্রণালয় এবং মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অনুমতিও নিতে হবে। ফিরে আসার পর সফরের বিস্তারিত তথ্য সংবলিত একটি প্রতিবেদন অর্থ মন্ত্রণালয় ও মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে জমা দিতে হবে। এই তিন কর্তৃপক্ষের অনুমতি পাওয়া ছাড়া কোনো সরকারি কর্মকর্তার অফিসিয়াল সফর অ্যালাউ করা যাবে না। রাষ্ট্রের অর্থের অপচয় রোধে এটির প্রয়োজন রয়েছে বলেও রায়ে উল্লেখ করা হয়।
আদালতে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন করপোরেশনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী সাইফুর রশিদ। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল শেখ সাইফুজ্জামান।
মামলার বিবরণে জানা যায়, ২০১৫ সালে বিআইডব্লিউটিসির জন্য ৬ কোটি টাকার ফগলাইট কিনতে যুক্তরাষ্ট্রে যান প্রতিষ্ঠানটির তখনকার চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান, পরিচালক জ্ঞান রঞ্জন শীল, জিএম ক্যাপ্টেন শওকত সরদার ও নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়ের উপসচিব পংকজ কুমার পাল। এই চার সদস্যের মধ্যে ইঞ্জিনিয়ার ছিল মাত্র একজন।
৬ কোটি টাকা দিয়ে ১০টি ফগ লাইট ক্রয় করেন তারা যা ছিল নিম্নমানের। এছাড়া দেশে ফিরে গ্রীষ্মকালেই তারা এই ফগ (কুয়াশা) লাইট পরীক্ষা করেছে। মাওয়া আরিচা ফেরিঘাটে ফগলাইট পরীক্ষা করার পারে দেখা যায়, ৭ হাজার ওয়ার্ডের ফগলাইট কাজ করছে মাত্র ৩ হাজার ওয়ার্ডের সমান। কিন্তু এর মধ্যে টাকা তুলে নেয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান জনি করপোরেশন। তবে অনিয়ম ধরা পড়ায় আটকে দেয়া হয় প্রতিষ্ঠানটির ব্যাংক গ্যারান্টির টাকা।
এরপর ২০১৬ সালে হাইকোর্টের দ্বারস্ত হয় ফগলাইট আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান জনি করপোরেশন। ওই রিটের দীর্ঘ শুনানি শেষে রিটটি খারিজ করে দিয়ে এ রায় দেয় হাইকোর্ট।
সাইফুজ্জামান নিউজবাংলাকে বলেন, অকার্যকর ফগলাইট সরবরাহের জন্য প্রতিষ্ঠানটির ব্যাংক গ্যারান্টি ২৮ লাখ উদ্ধারে করা রিট খারিজ করে দিয়েছে হাইকোর্ট।