বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার সুস্থ হওয়াকে বিপদ মনে করে তাকে দেশের বাইরে চিকিৎসার জন্য পাঠানোর অনুমতি দিচ্ছেন না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের উদ্যোগে রাজধানীর নয়াপল্টনে খালেদা জিয়ার মুক্তি ও তাকে বিদেশে উন্নত চিকিৎসার দাবিতে বিক্ষোভ মিছিলে তিনি এ মন্তব্য করেন।
সরকার ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সমালোচনা করে রিজভী বলেন, ‘আপনাদের উদ্দেশ্য খারাপ। আপনারা খালেদা জিয়ার জীবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলছেন। আপনি (প্রধানমন্ত্রী) চান খালেদা জিয়ামুক্ত বিএনপিমুক্ত বাংলাদেশ। এইটা আপনার ইচ্ছা। সে কারণে যে করেই হোক খালেদা জিয়াকে পৃথিবী থেকে সরিয়ে দিতে হবে।’
বিএনপি নেত্রীকে প্রধানমন্ত্রী হুমকি মনে করেন বলে মন্তব্য রিজভীর। তিনি বলেন, ‘খালেদা জিয়ার সুস্থ হওয়াকে তিনি বিপদ মনে করছেন। এই বিপদ দেখেই নানা টালবাহানা করছেন। কোনো টালবাহানা চলবে না, আপনি কিছুই করতে পারবেন না।
‘খালেদা জিয়ার কিছু হলে যে আগুন জ্বলবে, এই আগুন মিট মিট করে জ্বলবে না, এই আগুন ধিকি ধিকি করে জ্বলবে না। এই আগুন দাউ দাউ করে জ্বলবে এবং অত্যাচারীদের সকল শৃঙ্খল ছারখার করে পুড়িয়ে দেবে।’
১৩ নভেম্বর বিকেলে খালেদা জিয়াকে গুলশানের বাসভবন ফিরোজা থেকে এভারকেয়ারে ভর্তি করা হয়। শারীরিক অবস্থার কিছুটা অবনতি হওয়ায় পরের দিন ভোরে তাকে সিসিইউতে নেয়া হয়। সেখানেই চিকিৎসা চলছে তার।
বিএনপি থেকে বলা হচ্ছে, তাদের নেত্রীর অবস্থা আশঙ্কাজনক, ভ্যারি ক্রিটিক্যাল। জরুরি ভিত্তিতে তাকে বিদেশে নিয়ে চিকিৎসা করানো দরকার।
তবে এ বিষয়ে কোনো সবুজ সংকেত নেই সরকার থেকে। আইনমন্ত্রী আনিসুল হক জানান, দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি হওয়ায় এবং প্রধানমন্ত্রীর নির্বাহী আদেশে একবার সাজা শিথিল করায় খালেদাকে বিদেশ যেতে অনুমতি দেয়ার আর কোনো আইনি সুযোগ নেই।
আইনমন্ত্রীর এমন মন্তব্যের সমালোচনা করে রিজভী বলেন, ‘আপনি কোথা থেকে আইন পেয়েছেন। আপনি অসত্য কথা বলছেন, আপনি মিথ্যা কথা বলছেন। তিনবারের প্রধানমন্ত্রীকে নির্যাতন করার জন্যই এই কথা বলছেন মিথ্যাবাদী আইনমন্ত্রী।’
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের সমালোচনা করে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘গতকাল আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন বিএনপি নাকি চোরাগলি দিয়ে ক্ষমতায় যাওয়ার চেষ্টা করছে। কোথায় আমরা চেষ্টা করলাম? আমরা তো রাজপথে দাঁড়িয়ে আছি, রাজপথেই চেষ্টা করছি। আমাদের ওপর জুলুম-নির্যাতন নেমে আসছে তার পরও আমরা রাজপথে আছি।
‘আজকে জাতীয়বাদী মহিলা দলের একটা মৌন মিছিল, যেখানে কোনো আওয়াজ হবে না সেই কর্মসূচিতেও পুলিশ বাধা দিচ্ছে। আপনারা কী এমন করছেন যে আপনাদের এত ভয়। মহিলা দলের একটা প্রোগ্রাম ঠিকমতো করতে দেন না। কেন এত ভয়? ভয় থাকে চোরদের, যারা চোরাপথে ক্ষমতায় গিয়ে থাকে তাদের ভয় থাকে। বেগম খালেদা কিন্তু কোনো দিন চোরাগলির ভোট করেননি। তিনি কখনও নিশিরাতের প্রধানমন্ত্রী হননি। তার বিরুদ্ধে প্রত্যেকটি ভোটে আওয়ামী লীগ অংশগ্রহণ করেছে শেখ হাসিনার নেত্রীত্বে।’
মৌন সমাবেশে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমান, মহিলা দলের সভাপতি আফরোজা আব্বাস, সুলতানা আহমেদ, নিলুফার চৌধুরী মনি, হেলেন জেরিন খানসহ আরও অনেকে।