লালমনিরহাটের কালীগঞ্জে ভোটকেন্দ্রের টয়লেটে পাওয়া নৌকার সিল মারা ব্যালট পেপার নিয়ে বিএনপি নেতা স্বতন্ত্র প্রার্থী ও আওয়ামী প্রার্থী পাল্টাপাল্টি অভিযোগ করেছেন।
বিএনপি নেতার দাবি, নৌকার সমর্থকরা ব্যালটে নিজেদের সিল মেরে সময়ের অভাবে বাক্সে ফেলতে না পেরে টয়লেটে ফেলে গেছে।
আওয়ামী লীগ নেতা বলেন, ভোটের ফল কারচুপি করার জন্য গণনার সময় এই ব্যালটগুলো সরিয়ে ফেলা হয়েছে।
গত ২৮ নভেম্বর কালীগঞ্জের চন্দ্রপুর ইউনিয়নে ভোট হয়। ফল গণনা শেষে নির্বাচন অফিস থেকে জানানো হয়, আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মাহাবুবুর রহমান নৌকা প্রতীকে ৯ হাজার ৮৪০ এবং তার প্রতিদ্বন্দ্বী মোটরসাইকেল প্রতীকের বিএনপি নেতা জাহাঙ্গীর আলম একই ভোট পেয়েছেন।
জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মঞ্জুরুল হাসান জানান, নির্বাচনি আইন অনুযায়ী সমপরিমাণ ভোট পাওয়া ওই দুই প্রার্থীর মধ্যে পুনরায় ভোট হবে।
কালীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক ও মোটরসাইকেল প্রতীকের প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলম ২৯ নভেম্বর রাতে নিজ বাড়িতে সংবাদ সম্মেলন করেন।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘নৌকার কর্মী-সমর্থকরা নৌকার সিল মারা ব্যালট গোসাইরহাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রের টয়লেটে ফেলে রাখে। সোমবার সকালে স্থানীয়রা ২০টি ব্যালট উদ্ধার করে আমার কাছে নিয়ে আসে। আমি বিষয়টি তাৎক্ষণিকভাবে রিটার্নিং কর্মকর্তাকে জানাই।
‘আমি মনে করি ভোট বাক্সে রাখার সময় না পেয়ে নৌকার কর্মীরা এসব ফেলে রেখে চলে গেছে। এভাবে নিজেরা সিল মেরে ভোট বাড়ানোয় দুজনের ফল সমান হয়ে যায়। এ কারণে ফল স্থগিত করা হয়েছে। আমি এই ইউনিয়নে পুনরায় ভোট দাবি করছি।’
সংবাদ সম্মেলনে জাহাঙ্গীর অভিযোগ করেন, ‘মোটরসাইকেল প্রতীক এগিয়ে থাকা সত্ত্বেও প্রতিপক্ষ নৌকা প্রতীকের প্রার্থীরা উত্তর বালাপাড়া ভোটকেন্দ্র দখল করে প্রিসাইডিং কর্মকর্তাকে রুমে তালাবদ্ধ করে রাখে। গণনা পর্যবেক্ষণকারী পোলিং এজেন্টদের ঘুষি মেরে ও ভয়ভীতি দেখিয়ে বুথ আটকে নানা অনিয়ম করেছে।’
এই ইউনিয়নের নৌকার প্রার্থী মাহাবুবুর রহমান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘স্থানীয় সমর্থকদের মাধ্যমে নৌকায় সিল মারা ব্যালটের বিষয়ে শুনেছি। আমার প্রশ্ন, এসব ব্যালট তাদের কাছে কেন? এটা তো আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উদ্ধার করার কথা।
‘নৌকার ভোট কমানোর জন্যই গণনার সময় ব্যালট চুরি করে বাইরে ফেলে দেয়া হয়েছে। আমি প্রশাসনকে মৌখিকভাবে জানিয়েছি। এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ দেব।’
তিনি বলেন, ‘সংবাদ সম্মেলনে দেখানো নৌকার সিল মারা ব্যালটগুলো গণনায় অন্তর্ভুক্ত করে আমাকে বিজয়ী ঘোষণা করা হোক। তা ছাড়া এসব ব্যালট তারা প্রশাসনকে না জানিয়ে নিজেদের জিম্মায় কেন রেখেছে? আমি সুষ্ঠু তদন্ত করে ন্যায়বিচার চাই।’