করোনাভাইরাসের দক্ষিণ আফ্রিকান ভেরিয়েন্ট ওমিক্রন আগের ডেল্টা ভেরিয়েন্টের চেয়ে অধিক সংক্রামক বলে ধারণা করা হচ্ছে। এর বিস্তার রোধে সামাজিক, রাজনৈতিকসহ সব ধরনের জনসমাগম নিরুৎসাহিত করতে সরকার ১৫ দফা নির্দেশনা দিয়েছে।
রোববার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (ডিজিজ কন্ট্রোল) প্রফেসর ডা. নাজমুল ইসলামের সই করা এক নোটিশে এসব নির্দেশনা দেয়া হয়।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর মনে করছে, দেশে ওমিক্রন সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়লে তা সামাল দেয়া কঠিন হয়ে পড়বে। আগে থেকে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা না নিলে তা দ্রুত ছড়িয়ে পড়ার শঙ্কা রয়েছে। বিশেষ করে সব বন্দর ও জনসমাগমের স্থানগুলোতে কঠোরভাবে স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করা দরকার।
এমন পরিস্থিতিতে সব ধরনের জনসমাগম নিরুৎসাহিত, দেশের সব বন্দরে হেলথ স্ক্রিনিং জোরদার, পর্যটন কেন্দ্রে অর্ধেক সংখ্যক মানুষের অংশ নেয়া, রেস্টুরেন্টে বসে খাওয়া নিয়ন্ত্রণসহ ১৫টি নির্দেশনা দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, দক্ষিণ আফ্রিকা, নামিবিয়া, জিম্বাবুয়ে, বতসোয়ানা, এসওয়াতিনি, লেসোথো এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ঘোষণা অনুযায়ী অন্য দেশ থেকে আসা যাত্রীদের বন্দরগুলোতে স্বাস্থ্য পরীক্ষা জোরদার করতে হবে। সব বন্দরে স্ক্রিনিং জোরদার করতে হবে।
এ ছাড়া সব ধরনের সামাজিক, রাজনৈতিক, ধর্মীয় ও অন্যান্য জনসমাগম নিরুৎসাহিত করতে হবে। প্রয়োজনে বাইরে গেলে প্রত্যেক ব্যক্তিকে সবসময় সঠিক নিয়মে মাস্ক পরাসহ সব স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে। রেস্তোরাঁয় বসে খাওয়ার ব্যবস্থা ধারণক্ষমতার অর্ধেক বা তার চেয়ে কম করতে হবে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, সব ধরনের জনসমাগম, পর্যটন স্থান, বিনোদন কেন্দ্র, কমিউনিটি সেন্টার, হল, থিয়েটার হল ও বিয়ে, পিকনিকসহ সামাজিক অনুষ্ঠানে ধারণক্ষমতা বা তার অর্ধেকের কম সংখ্যক লোক অংশগ্রহণ করবে।
মসজিদসহ সব উপাসনালয়ে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা নিশ্চিত করতে হবে বলেও নির্দেশনাতে উল্লেখ আছে।
এতে আরও বলা হয়, গণপরিবহন, সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও কোচিং সেন্টারে স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করতে হবে। স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানে সেবা গ্রহীতা, সেবা প্রদানকারী ও স্বাস্থ্যকর্মীদের সঠিকভাবে মাস্ক পরাসহ স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে ভ্যাকসিন কার্যক্রম পরিচালনা করতে হবে।
আক্রান্ত দেশগুলো থেকে আসা যাত্রীদের ১৪ দিন কোয়ারেন্টিন নিশ্চিত করার বিষয়টিও জোরালোভাবে উল্লেখ করা হয়েছে বিজ্ঞপ্তিতে।
নির্দেশনায় বলা হয়েছে, করোনা উপসর্গ দেখা দিলে ও সন্দেহজনক করোনা রোগীদের আইসোলেশনে রাখতে হবে। করোনা রোগীর ঘনিষ্ঠ সংস্পর্শে যাওয়া ব্যক্তিদের কোয়ারেন্টিনে থাকতে হবে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বলছে, করোনা লক্ষণযুক্ত ব্যক্তিকে আইসোলেশনে রাখা ও তার নমুনা পরীক্ষার জন্য স্থানীয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সমন্বয় করে সহায়তা করা যেতে পারে। অফিসে ঢোকা ও অবস্থানকালে মাস্ক পরাসহ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার বিষয়টি দাপ্তরিকভাবে নিশ্চিত করতে হবে।
করোনা নিয়ন্ত্রণ ও সচেতনতা তৈরি করতে কমিউনিটি পর্যায়ে মাইকিং ও প্রচারণা চালানো যেতে পারে বলেও সুপারিশ করেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এ ক্ষেত্রে মসজিদ, মন্দিরের মাইক ব্যবহার এবং ইউনিয়ন পরিষদের সদস্যদের সম্পৃক্ত করা যেতে পারে।