রাজনীতি আর রাজনীতিবিদদের হাতে নেই বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন।
একাদশ জাতীয় সংসদের পঞ্চদশ অধিবেশনে বৃহস্পতিবার স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে বিশেষ আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এ মন্তব্য করেন।
মেনন বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু আমলাতন্ত্রকে জনপ্রতিনিধিদের অধীন করেছিলেন। এখন জনপ্রতিনিধিরা আমলাতন্ত্রের অধীন। তারা রাজনৈতিক দুর্বৃত্ত বলতেও দ্বিধা করে না। শুধু তাই নয়, তারা বলেন, তারাই দেশ পরিচালনা করবেন।’
রাজনীতিতে ব্যবসায়ীদের সংখ্যা ক্রমাগত বাড়তে থাকা নিয়েও শঙ্কা প্রকাশ করেন এই রাজনীতিক।
তিনি বলেন, ‘ব্যবসায়ীদের রাজনীতি করতে বাধা নেই, কিন্তু রাজনীতি যখন ব্যবসা হয়ে দাঁড়ায়, তখন নিশ্চয়ই আপত্তি থাকবে। রাজনীতি আর রাজনীতিবিদের হাতে নেই।’
ক্রিকেট মাঠে পাকিস্তানের পতাকা ওড়ানো নিয়ে প্রশ্ন তোলেন এ বামপন্থি নেতা।
তিনি বলেন, ‘ক্রিকেট মাঠে পাকিস্তানি পতাকা ওড়ানো হয়। সেটা পরিকল্পিত কি না আমি জানি না, তবে এটা আমাদের ব্যর্থতা; আমাদের স্বীকার করতে হবে।’
সংসদে আলোচনায় সরকারের অর্জনগুলো ধরে রাখতে নির্বাচন কমিশনের মতো প্রতিষ্ঠানগুলোকে স্বাধীন, নিরপেক্ষ করার ওপর জোর দেন জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য আনিসুল ইসলাম মাহমুদ।
প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আপনি কষ্ট করে যে অর্জনগুলো করছেন, সেই অর্জনগুলো কিন্তু ভবিষ্যতে ধরে রাখা যাবে না। গণতন্ত্রের মূল মন্ত্র হচ্ছে নির্বাচন। সেই নির্বাচনকে আমাদের সম্পূর্ণভাবে নিরপেক্ষ করতে হবে এবং এর জন্য যে প্রতিষ্ঠানগুলো শক্তিশালী করা দরকার, সেগুলো শক্তিশালী করতে হবে।’
দেশে অনেক অর্জন হয়েছে স্বীকার করে এই এমপি বলেন, ‘সেই অর্জনকে ধরে রাখার জন্য আমাদের যে প্রতিষ্ঠানগুলো আছে, সেই প্রতিষ্ঠানগুলোকে শক্তিশালী করতে হবে। সংবাদমাধ্যমের সম্পূর্ণ স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে হবে। আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করতে হবে।’
ধর্ম নিয়ে রাজনীতি না করতে সবার প্রতি অনুরোধ জানিয়ে মেনন বলেন, ‘আমরা ধর্মকে ইস্যু করব না; ধর্মকে ইস্যু করে চলব না। ধর্মকে ইস্যু করে এই সমাজকে অস্থিতিশীল করবেন না। যারা ধর্মকে ইস্যু করছেন, তারা দেশের জন্য কোনো কাজ করছেন না, দেশকে অস্থিতিশীল করছেন। এতে অমঙ্গল বয়ে আসে।’
আলোচনায় অংশ নিয়ে সরকারের উন্নয়ন-অগ্রযাত্রা নিয়ে কথা বলেন তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ।
তিনি বলেন, ‘আমরা শুধু বস্তুগত উন্নয়নের মাধ্যমে একটি উন্নত রাষ্ট্র নির্মাণ করতে চাই, তা নয়। ২০৪১ সাল নাগাদ এমন একটি রাষ্ট্র রচনা করতে চাই, যে রাষ্ট্র মানবিকতার উদাহরণ, যে রাষ্ট্র সামাজিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে উদাহরণ, যে রাষ্ট্রে বস্তুগত উন্নয়নের পাশাপাশি মানবিকতার উন্নয়ন হবে।’