বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

তাড়াশ এখন কুমড়ো বড়ির চাতাল

  •    
  • ২৩ নভেম্বর, ২০২১ ১১:০২

আব্দুল মতিন শেখ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এই কুমড়ো বড়ি আমরা বংশ পরায়ণভাবে তৈরি করে থাকি। আমার বাপ-দাদা তৈরি করেছে, আমি তৈরি করেছি, এখন আমার ছেলে আর নাতিপুতি তৈরি করছে।’

সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলায় তৈরি কুমড়ো বড়ির চাহিদা দিন দিন বেড়েই চলছে। ভোজনপ্রেমীদের কাছে এর রয়েছে আলাদা কদর।

কুমড়ো বড়ি তৈরি ও বিক্রি করে জীবিকা চলছে তাড়াশের বেশ কয়েকটি পরিবারের। এ বড়ি সারা বছর তৈরি করা গেলেও এর মূল মৌসুম শীতকাল। এ সময় তৈরি হয় সবচেয়ে বেশি। শীতের সবজির সঙ্গে কুমড়ো বড়ির একটা যোগসূত্র খুঁজে পান অনেকেই। তাই চাহিদাও বাড়ে এ সময়।

সরেজমিনে তাড়াশ উপজেলার নওগাঁয় গিয়ে দেখা যায়, ১৫ থেকে ২০টি পরিবার কুমড়ো বড়ি তৈরি করে রোদে শুকাচ্ছে। শুকানো হলে বিক্রি করতে গিয়ে যাওয়া হবে আশপাশের সব হাট-বাজারে। এমনকি এ বড়ি তৈরির চাতাল বা খোলা থেকেও সরাসরি দেশের বিভিন্ন স্থানে পাঠানো হয়। চাতালে আসা পাইকাররা কিনে নিয়ে গিয়ে বিভিন্ন স্থানেও বিক্রি করেন।

তাড়াশের নওগাঁ এলাকায় কুমড়ো বড়ি রোদে শুকাচ্ছেন এক কারিগর। ছবি: নিউজবাংলা

এই বড়ি তৈরির কারিগর আব্দুল মতিন শেখ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘কুমড়ো বড়ি আমরা বংশপরায়ণভাবে তৈরি করি। আমার বাপ-দাদা তৈরি করেছে, আমি তৈরি করেছি, এখন আমার ছেলে আর নাতিপুতিরা তৈরি করছে।’

কুমড়ো বড়ি তৈরি করতে প্রথমে খেসারি বা অ্যাঙ্কার ডাল ভিজিয়ে রেখে ঢেঁকি অথবা পাটায় বেঁটে নিতে হয়। তার সঙ্গে অন্য সব উপকরণ মিশিয়ে ছোট ছোট বড়ি করে টিনের তৈরি সিটের উপর শুকানো হয়।

সনাতন পদ্ধতি অর্থাৎ একটা সময় কুমড়ো বড়ি তৈরির জন্য শীল-পাটায় সারা রাত ধরে পরিবারের মেয়েরা ডাল বাটতেন। পরের দিন তা বড়ি বানিয়ে শুকাতে দেয়া হতো।

মতিন শেখ বলেন, ‘বর্তমানে ছেলেপেলেরা ভেলেন্ডার (ব্লেন্ডার) মেশিনের সাহায্যে ঘণ্টার মধ্যেই অনেক ডাউল গুঁড়া করে বড়ি তৈরি করে ফেলে।’

কুমড়ো বড়ি তৈরির কারিগর আব্দুল্লাহ জানান, কুমড়ো বড়ি তৈরি করার আগে পারিবারিক অবস্থা তেমন স্বচ্ছল ছিল না। সংসারে অভাব অনটন লেগেই থাকত। কিন্তু বর্তমানে এ বড়ি তৈরি করে তারা অনেকটাই স্বচ্ছল।

তাড়াশের নওগাঁ এলাকায় কুমড়ো বড়ি রোদে শুকানো হচ্ছে

আল আমিন নামের আরেক কারিগর জানান, কুমড়ো বড়ি তৈরি করতে প্রথমে প্রচুর পরিশ্রম করতে হতো। কিন্তু এখন মেশিনের মাধ্যমে ডাল গুঁড়ো করা হয়, শুধু হাতের মাধ্যমে বড়ি তৈরি করতে রোদে শুকতে হয়। আর এ কাজে সহযোগিতা করে পরিবারের নারী সদস্যরা। সরকারের দেয়া কিছু সুবিধা পেলে বড় পরিসরে বড়ি তৈরি করে রপ্তানি করা সম্ভব বলেও জানান তিনি।

চাতাল মালিক মুনছুর আলী বলেন, ‘আমি একদিনে আমার চাতালে ১২০ থেকে ১৩০ কেজি কুমড়ো বড়ি তৈরি করতে পারি। প্রতি কেজি বড়ি চাতাল থেকে পাইকারি ৭০ থেকে ৮০ টাকায় বিক্রি হয়। খুচরা বাজারে ১০০ থেকে ১২০ টাকায় বিক্রয় করা যায়।’

এ ব্যাপারে তাড়াশ উপজেলা যুব উন্নয়ন অফিসার আ ফ ম নজরুল ইসলাম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘কুমড়ো বড়ি তৈরি করে উপজেলায় অনেক যুবকদের বেকার সমস্যা দূর হচ্ছে। আমরা আমাদের অধিদপ্তর থেকে প্রশিক্ষণ করিয়ে ঋণের ব্যবস্থা করে তাদের ব্যবসা বৃদ্ধিতে সহযোগিতা করব।’

এ বিভাগের আরো খবর