শব্দদূষণের মারাত্মক ঝুঁকিতে রয়েছে বরিশাল নগরী। ইতিমধ্যে নগরীর তিনটি স্পটকে নীরব এলাকা ঘোষণা করা হলেও সেটি পালন ও কার্যকরে কোনো উদ্যোগ দেখা যাচ্ছে না।
স্পট তিনটি হলো বরিশাল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল, বরিশাল জেনারেল হাসপাতাল ও ল কলেজ এলাকা।
বৃহস্পতিবার দুপুরে বরিশাল জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত পরিবেশ অধিদপ্তরের এক প্রশিক্ষণ কর্মশালায় এ তথ্য জানানো হয়।
‘শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে সমম্বিত ও অংশীদারত্বমূলক প্রকল্প’ এর আওতায় পরিবহন চালক ও লঞ্চ শ্রমিকদের শব্দ সচেতনতামূলক এই প্রশিক্ষণ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়।
এতে প্রধান অতিথি ছিলেন স্থানীয় সরকার বিভাগের পরিচালক মো. শহীদুল ইসলাম।
বরিশাল পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিচালক মো. আব্দুল হালিমের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শাহজাহান হোসেন, বরিশাল বিআরটিএর উপপরিচালক জিয়াউর রহমান, সিভিল সার্জন অফিসের মেডিক্যাল অফিসার মুন্সি মুবিনুল হক।
কর্মশালায় জানানো হয়, বরিশাল নগরীতে শব্দদূষণের মাত্রা হচ্ছে সর্বোচ্চ ১৩১ ডেসিমেল এবং সর্বনিম্ন ১৩১ ডেসিমেল। অথচ শব্দের স্বাভাবিক সহনীয় মাত্রা হচ্ছে ৪০-৪৫ ডেসিমেল। ইতিমধ্যে স্বাভাবিক সহনীয় মাত্রা অতিক্রম করেছে। শব্দদূষণ ৬০ ডেসিমেল হলে মানুষ সাময়িক বধির এবং ১০০ অতিক্রম করলে পুরোপুরি বধির হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে।
সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) বরিশালের উপপরিচালক মো. জিয়াউর রহমান বলেন, ‘যানবাহনে ব্যবহৃত হাইড্রোলিক হর্ন শব্দদূষণের অন্যতম প্রধান কারণ। বরিশালের শতভাগ পরিবহনে এই হর্ন ব্যবহৃত হচ্ছে। অভিযান চালিয়ে এসব হর্ন জব্দ করা হলেও স্থায়ীভাবে বন্ধ করা যাচ্ছে না।’
এর কারণ হিসেবে উপপরিচালক বলেন, ‘হাইড্রোলিক হর্নের দাম কম হওয়ায় দ্রুত সময়ের মধ্যে আবার সেগুলো পরিবহনে স্থাপন করা হয়। কর্মশালায় অংশগ্রহণকারী যানবাহন চালকদের হাইড্রোলিক হর্ন ব্যবহার না করার অঙ্গীকার করানো হয়েছে।’
বরিশাল জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শাহজাহান হোসেন বলেন, ‘সড়কপথে দায়িত্ব পালন করা ট্রাফিক পুলিশ বিভাগের অনেক সদস্য শব্দদূষণের বিরূপ প্রতিক্রিয়ায় নানা জটিল রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন।’
কর্মশালার প্রধান অতিথি স্থানীয় সরকার বিভাগের পরিচালক মো. শহীদুল ইসলাম বলেন, ‘দূষণ রোধে আইন প্রয়োগের আগে সচেতনতা সৃষ্টি হচ্ছে প্রধান কাজ। এরপর অমান্যকারীদের জিরো টলারেন্সে পরিবেশ আইনের আওতায় আনা হবে।’