করোনাসহ বিভিন্ন ভাইরাসজনিত রোগ প্রতিরোধে টিকা উৎপাদনে দেশে একটি আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন ভ্যাকসিন ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠা এবং ভ্যাকসিন নীতিমালা প্রণয়নের কথা ভাবছে সরকার।
একাদশ জাতীয় সংসদের চলমান অধিবেশনে বুধবার প্রশ্নোত্তর পর্বে অংশ নিয়ে এ কথা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
লক্ষ্মীপুর-১ আসনের এমপি আনোয়ার হোসেন খানের প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রীর উত্তর টেবিলে উপস্থাপন হয়।
এমপিদের প্রশ্নের উত্তরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ভ্যাকসিন দেয়ার কারণে প্রতি বছর বিশ্বে লাখ লাখ শিশুর প্রাণ রক্ষা করা সম্ভব হচ্ছে। ভ্যাকসিন শরীরে অ্যান্টিবডি তৈরির মাধ্যমে মানবদেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা শক্তিশালী করে। মহামারি করোনা আবির্ভাবের পর থেকে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ভ্যাকসিন আবিষ্কার ও উৎপাদনের গুরুত্ব বহু গুণ বাড়িয়ে দিয়েছে।’
বর্তমান বিশ্ব পরিস্থিতিতে টিকা নিয়ে গবেষণা ও উৎপাদনের প্রয়োজনীয়তা আরও অনুভূত হচ্ছে বলেও জানান সংসদ নেতা।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘মহামারি করোনাভাইরাসসহ বিভিন্ন ভাইরাস প্রতিরোধকল্পে ভ্যাকসিন উৎপাদনের লক্ষ্যে দেশে একটি আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন ভ্যাকসিন ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠা এবং ভ্যাকসিন নীতিমালা প্রণয়নের পরিকল্পনা বর্তমান সরকারের রয়েছে।’
দেশে আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন টিকা ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠা হলে টিকা উৎপাদন ও গবেষণা কাজে প্রশিক্ষণ এবং প্রযুক্তিগত সহায়তা পাওয়া যাবে বলে মনে করেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘এতে দেশের ভ্যাকসিন উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর সক্ষমতা আরও বৃদ্ধি পাবে। ভ্যাকসিন উৎপাদন, প্রয়োগ ও মান নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা আরও যুগোপযোগী হবে।’
তিনি বলেন, ‘নতুন আবিষ্কৃত ভ্যাকসিনের প্রযুক্তি হস্তান্তরের মাধ্যমে দেশেই নতুন ভ্যাকসিন উৎপাদন করা সহজতর হবে। ফলে দেশে স্বল্প মূল্যে ভ্যাকসিন পাওয়া যাবে।’
এ ছাড়া টিকা ইনস্টিটিউট হলে নতুন ভ্যাকসিনের জন্য বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রিকোয়ালিফিকেশন অর্জনের পথ সহজ হবে জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, এটি বাংলাদেশে উৎপাদিত টিকার বৈদেশিক বাজার সম্প্রসারণে সহায়ক হবে।
উন্নয়নশীল দেশের শিশু স্বাস্থ্যের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ সংক্রামক ব্যাধির টিকা সম্পর্কিত গবেষণা, কারিগরি ও প্রযুক্তিগত জ্ঞান ও তথ্য বিনিময়ের মাধ্যমে উন্নত মানের টিকা উৎপাদনে ইউএনডিপির উদ্যোগ ও পৃষ্ঠপোষকতায় ১৯৯৭ সালে দক্ষিণ কোরিয়ার সিউলে ইন্টারন্যাশনাল ভ্যাকসিন ইনিস্টিটিউট প্রতিষ্ঠা হয়।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাসহ ৩৭টি দেশ এ ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠার চুক্তিতে সই করে। শেখ হাসিনা বলেন, ‘১৯৯৬ সালের ২৮ অক্টোবর বাংলাদেশও চুক্তিতে সই করে।’