বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

‘আমাদের কুত্তার মতো পিটিয়েছে’

  •    
  • ১২ নভেম্বর, ২০২১ ০০:২৮

শামীম ওসমান বলেন, ‘এখন নারায়ণগঞ্জ আপনি সামাল দেন। দেখি আপনি পারেন কি না আর আমি পারি কি না। আপনি ছাত্রলীগের জয়েন্ট সেক্রেটারিকে চোরের মতো মারবেন?’

নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে একটি কেন্দ্র দখলের চেষ্টার সময় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে লাঠিচার্জ করেছে র‍্যাব। এসময় মহানগর ছাত্রলীগের নেতারা মারধরের শিকার হয়েছেন এমন অভিযোগে বাহিনীটির এক কর্মকর্তার ওপর চটেছেন নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সাংসদ শামীম ওসমান।

তার কাছে ছাত্রলীগ নেতারা আহাজারি করে র‍্যাবের বিরুদ্ধে মারধরের নালিশ দিচ্ছেন এমন ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। তবে তাদের মারধরের অভিযোগ অস্বীকার করেছে র‍্যাব।

বৃহস্পতিবার দুপুরে এনায়েতনগর ইউনিয়নের সাত নম্বর ওয়ার্ডের ৬৯নং পশ্চিম মাসদাইর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে এ ঘটনা ঘটে।

স্থানীয়রা জানান, দুপুরে পশ্চিম মাসদাইর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ঢুকে নারায়ণগঞ্জ মহানগর ছাত্রলীগের সভাপতি হাবিবুর রহমান রিয়াদ, যুগ্ম সম্পাদক রাকিবুল ইসলামসহ তাদের শতাধিক লোকজন। তারা ইউপি সদস্য প্রার্থী শাহজাহান মাতবরের পক্ষে স্লোগান দিয়ে প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করেন।

তারা জানান, এ নিয়ে আরেক সদস্য প্রার্থী জাকারিয়া জাকির অভিযোগ তোলেন, ছাত্রলীগ নেতারা কেন্দ্রে ঢুকে সিল মারছে। উত্তেজনা দেখা দিলে লাঠিচার্জ করে পুলিশ ও র‌্যাব সদস্যরা। তখন রিয়াদ তার সঙ্গে থাকা কয়েকজনকে নিয়ে স্কুলের বাথরুমে আটকা পড়েন। কিছুক্ষণ পর পুলিশ ও বিজিবির তৎপরতায় পরিস্থিতি শান্ত হলে তারা বেরিয়ে যান। এর পরপরই ভোটকেন্দ্রের বাইরে একটি ককটেল বিস্ফোরিত হয়।

স্থানীয়রা আরও জানান, ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের ওপর লাঠিচার্জের ঘটনার পর বিকেল সোয়া ৩টার দিকে ওই কেন্দ্রে যান শামীম ওসমান। ওই সময় তার কাছে নালিশ করে ছাত্রলীগ নেতারা। মহানগর ছাত্রলীগের সভাপতি হাবিবুর রহমান রিয়াদ ও যুগ্ম সম্পাদক রাকিবুল আহাজারিও করেন।

রাকিবুল বলেন, ‘আমাদের কুত্তার (কুকুরের) মতো পিটিয়েছে।’

একই কথা বলেন রিয়াদও। তারা নিজেদের হাত দেখিয়ে সাংসদ শাশীম ওসমানের কাছে নালিশ করেন।

এসময় কেন্দ্রের ভেতর থেকে বেরিয়ে আসেন র‌্যাব কর্মকর্তা স্কোয়াড্রন লিডার এ কে এম মনিরুল আলম। তাকে শামীম ওসমান জিজ্ঞাসা করেন, ‘ওদের মারছে কেন?’

জবাবে র‌্যাব-১১ এর কর্মকর্তা মনিরুল আলম বলেন, ‘ওদেরকে মারি নাই স্যার। ওরা দেখেন এসব জিনিসপত্র নিয়ে (ধারাল অস্ত্র ও লাঠিসোটা) আসছে। ওখানে ককটেল আছে। তারা এখানেই ছিল। আপনি সবাইকে জিজ্ঞাসা করেন।’

জবাবে শামীম ওসমান বলেন, ‘এখন নারায়ণগঞ্জ আপনি সামাল দেন। দেখি আপনি পারেন কি না আর আমি পারি কি না। আপনি ছাত্রলীগের জয়েন্ট সেক্রেটারিকে চোরের মতো মারবেন?’

র‌্যাব কর্মকর্তা বলেন, ‘চোরের মতো পিটানো হয় নাই স্যার। তাদের প্রতিহত করা হয়েছে এগুলো নিয়ে আসায়।’

এসময় সাংবাদিকেরা শামীম ওসমানের সঙ্গে কথা বলতে চাইলে তিনি কিছুই বলেননি। একপর্যায়ে তিনি কেন্দ্র থেকে চলে যান।

এ বিষয়ে র‌্যাব-১১ এর স্কোয়াড্রন লিডার একেএম মনিরুল আলম বলেন, ‘ভোটকেন্দ্র দখল করে জাল ভোট দেয়ার চেষ্টা চলছে এমন তথ্য পেয়েছিলাম। সেখানে গিয়ে আমরা বহিরাগত লোকজনদের দেখেছি। কেন্দ্রের ভেতর থেকে উত্তেজনা দেখা দিলে শৃঙ্খলা ফেরানো চেষ্টা করে পুলিশ ও র‌্যাব সদস্যরা। সেখান থেকে বিপুল পরিমাণ লাঠি, দুটি ছোরা এবং একটি তাজা ককটেল উদ্ধার করা হয়েছে।’

এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ মহানগর ছাত্রলীগের সভাপতি হাবিবুর রহমান রিয়াদ বলেন, ‘আমরা কেন্দ্রে গিয়েছি। আমরা নৌকার পক্ষে কাজ করেছি। আমাদের অবরুদ্ধ করে রাখা হয়নি। দুই ইউপি সদস্য প্রার্থীর লোকজনের মধ্যে ঘটনা ঘটেছে।’

তিনি দাবি করেন, র‌্যাব তাদের ওপর অযথা হমলা চালিয়েছে। তারা কিছুই করেননি।

ঘটনাস্থল থেকে দেশীয় অস্ত্র ও ককটেল উদ্ধারের ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘সেগুলো আমাদের নয়।’

নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার নির্বাচন কর্মকর্তা আফরোজা খাতুন বলেন, ‘প্রার্থীর এজেন্টকে বের করে দেয়া নিয়ে একটা ঝামেলা সৃষ্টি হয়েছে সেখানে, এমন খবর পেয়েছি। পরে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের পাঠানো হয়। তারা গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।’

ঘটনাস্থল থেকে অস্ত্র ও ককটেল উদ্ধারের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এ বিষয়ে আমি কিছু জানি না। কেউ আমাকে জানায়নি।’

সাংসদ শামীম ওসমানের সঙ্গে র‍্যাব কর্মকর্তাদের কথোপকথনের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘এ বিষয়ে ওই ভোটকেন্দ্রের প্রিজাডিং অফিসার আমাকে কিছুই জানায়নি। তবে আমরা বিষয়টি জানতে পেরেছি। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও বিষয়টি জেনেছেন। তারা বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখবেন।’

এ বিভাগের আরো খবর