বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

‘জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধি রাজনৈতিক, আমলাদের দায় নেই’

  •    
  • ১১ নভেম্বর, ২০২১ ১৯:০৪

জ্বালানি সচিব আনিছুর রহমান বলেন, ‘আমদানি করা জ্বালানি তেলের ৭৩ ভাগই ডিজেল। অকটেন ও পেট্রল খুবই কম আমদানি করা হয়। ফলে এই দুটি পণ্যের দাম বাড়ানোর কোনো পরিকল্পনা আমরা করিনি। অযথা গুজব রটানোর দরকার নেই।’

জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধি নিয়ে বিতর্কের মধ্যে জ্বালানি সচিব আনিছুর রহমান বলেছেন, ‘তেলের মতো স্পর্শকাতর পণ্যের দর বাড়ানোর ক্ষমতা আমলাদের নেই, সাম্প্রতিক দাম বৃদ্ধি হয়েছে রাজনৈতিক সিদ্ধান্তে।’

বৃহস্পতিবার ফোরাম ফর এনার্জি রিপোর্টার্স অফ বাংলাদেশ (এফইআরবি) আয়োজিত ওয়েবিনারে এ মন্তব্য করেন জ্বালানি সচিব।

তিনি বলেন, ‘আমদানি করা জ্বালানি তেলের ৭৩ ভাগই ডিজেল। অকটেন ও পেট্রল খুবই কম আমদানি করা হয়। ফলে এই দুটি পণ্যের দাম বাড়ানোর কোনও পরিকল্পনা আমরা করিনি। অযথা গুজব রটানোর দরকার নেই। আর ডিজেলের তুলনায় কেরোসিনের ব্যবহার মাত্র ১ দশমিক ৬ ভাগ। কিন্তু মিশ্রণের কারণে সমন্বয় করতে গিয়ে একই হারে দাম বাড়ানো হয়েছে।’

আনিছুর রহমান বলেন, ‘জেট ফুয়েল, এইচএফও, এলপিজির দাম নিয়মিত সমন্বয় করছে বিপিসি। ডিজেলের দাম নিয়মিত কমানো-বাড়ানো হলে তো পরিবহনে কোনও পরিবর্তন আসবে না। এটা নিয়ন্ত্রণ করা আমাদের দায়িত্ব হলেও নেতাদের নানা দাবি। যাত্রীদের জিম্মি করে বেশি ভাড়া আদায় আমাদের পক্ষে নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন।’

তিনি আরও বলেন, ‘আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম কমে এলে সঙ্গে সঙ্গে দর সমন্বয় করা হবে। কিন্তু পরিবহনের বিষয়ে আমাদের কিছু করার নেই। আমরা বুঝতে পারছি, সাময়িকভাবে অর্থনীতিতে একটু চাপ পড়বে। কোভিড-উত্তর রিকভারিতে একটু সমস্যা হবে। কিন্তু আমাদের উপায় ছিল না। আন্তর্জাতিক বাজারে সব পণ্যের দাম বেড়েছে। গ্যাস সরবরাহের পাইপের দামও বেড়েছে। আমরা অনেক প্রকল্প রিভাইস করেছি। সারের দামও বেড়েছে। একই অবস্থা এলএনজির ক্ষেত্রেও।’

ওয়েবিনারে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের (বিপিসি) চেয়ারম্যান এবিএম আজাদ বলেন, ‘জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধির রাজনৈতিক সিদ্ধান্তটি বিপিসি শুধু বাস্তবায়ন করেছে। এককভাবে জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানোর এখতিয়ার নেই বিপিসির। বিপিসি আমদানি করে, বিক্রি করে। এর মূল্য বৃদ্ধির বিষয়টি সরকারের সিদ্ধান্ত।’

তিনি বলেন, ‘বিপিসি গত কয়েক বছরে যে মুনাফা করেছে তা দিয়ে দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য বেশকিছু প্রকল্প নেয়া হয়েছে। এতে ৩০ থেকে ৩৫ হাজার কোটি টাকা খরচ করা হয়েছে। শুধু এসপিএম বাস্তবায়ন হলেই মাসে আটশ’ কোটি টাকা সাশ্রয় হবে।’

বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) চেয়ারম্যান প্রকৌশলী বেলায়েত হোসেন বলেন, ‘জ্বালানি তেল ছাড়াও গ্যাসের দাম চার থেকে পাঁচ গুণ এবং কয়লার দাম পাঁচ গুণ বেড়েছে। সবকিছু একসঙ্গে জাতির কাঁধে ভর করেছে। ২০২০ সালের জুলাই থেকে চলতি বছরের জুন পর্যন্ত বিদ্যুতের উৎপাদন খরচ ছিল ৫০ হাজার কোটি টাকা। ক্যাপাসিটি ২৫ হাজার কোটি টাকা, জ্বালানি ২৫ হাজার কোটি টাকা। এই খাতে ১১ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি দিতে হয়েছে।’

জ্বালানি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ড. ইজাজ হোসেন বলেন, ‘ডিজেল ব্যবহার করে নিম্ন আয়ের সাধারণ মানুষ। তাই এতোদিন পেট্রল ও অকটেনের তুলনায় কম দাম রাখার দর্শন কাজ করতো। আমরা কি সেই দর্শন থেকে বের হয়ে আসছি?’

ক্যাবের জ্বালানি বিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. শামসুল আলম বলেন, ‘তেলের দাম বাড়ানোর প্রক্রিয়াটি আইনসিদ্ধ হয়নি। আইনে জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানোর এখতিয়ার বিইআরসিকে দেয়া হয়েছে।’

‘অবিলম্বে তেলের দাম বৃদ্ধির আদেশ প্রত্যাহার করে বিইআরসিতে পাঠিয়ে দেয়া হোক। তারা যাচাই-বাছাই করে দেখুক আদৌ তেলের দাম বাড়ানোর প্রয়োজনীয়তা আছে কিনা। বিপিসির কার্যক্রমও নিরীক্ষা করা উচিত। তাদের আয়-ব্যয়ে স্বচ্ছতা নেই।’

এফইআরবি চেয়ারম্যান অরুণ কর্মকারের সভাপতিত্বে ওয়েবিনার সঞ্চালনা করেন সংগঠনটির নির্বাহী পরিচালক শামীম জাহাঙ্গীর।

সমাপনি বক্তব্যে অরুণ কর্মকার বলেন, ‘জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির ক্ষেত্রে রাজনৈতিক সুবিবেচনা আসেনি। পরিবহন সেক্টরের বিষয়ে সরকারের নিয়ন্ত্রণ থাকবে না কেন, এটা নিয়ে সরকারের ভাবা উচিত। আমাদের মূল লক্ষ্য সাধারণ মানুষের ভোগান্তি কমানো, সেটা সবারই লক্ষ্য হওয়া উচিত।’

ওয়েবিনারে আরও বক্তব্য দেন বিকেএমইএ’র নির্বাহী সভাপতি একেএম হাতেম, সিপিডির পরিচালক (গবেষণা) খোন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম, বিজেএমইএ পরিচালক মহিউদ্দিন রুবেল ও যাত্রী কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোজাম্মেল হক চৌধুরী।

এ বিভাগের আরো খবর