শরীয়তপুরের জাজিরা প্রান্তে পদ্মা সেতুতে ওয়াটার প্রুফিং শেষে ১০০ মিলিমিটার পুরু কার্পেটিং চলছে।
সেতুর প্রকল্প পরিচালক শফিকুল ইসলাম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘কয়েক দিন আগে থেকে কার্পেটিংয়ের কাজ শুরু হয়েছে। সেতু নির্মাণের আর ১০টি আইটেমের মতো এটিও একটি আইটেম। ব্রিজের ওপর যে রকম কার্পেটিং হয়, সে রকমই।’
তিনি আরও বলেন, ‘পুরো সেতুর কার্পেটিং শেষ হতে মার্চ-এপ্রিল পর্যন্ত সময় লাগবে। তবে এটা ডিপেন্ড করে- আজকে কাজ হচ্ছে, কালকে নাও হতে পারে। প্রতিদিনই কাজ হবে নট দ্যাট। যন্ত্রপাতির কিছু বিষয় থাকে। সবকিছু মিলিয়ে টাইম টু টাইম কাজ হবে। তবে আমাদের টার্গেট মার্চ-এপ্রিলের মধ্যে শেষ করা।’
- আরও পড়ুন: মহাযজ্ঞ বদলে দিচ্ছে চার জেলা
চলতি বছরের ২৩ আগস্ট পদ্মা সেতুতে শেষ রোড স্লাব বসানো হয়। এতে সেতুর মুন্সিগঞ্জের মাওয়া ও শরীয়তপুরের জাজিরা প্রান্ত সড়কপথে যুক্ত হয়।
সেতুর সহকারী প্রকৌশলী হুমায়ূন কবীর জানান, সেতুতে নানামুখী কাজ চলছে। এর মধ্যে ওয়াটার প্রুফিং শেষে কার্পেটিং শুরু হয়েছে।
তিনি বলেন, “কার্পেটিংয়ের আগে স্লাবের ওপর প্রথমে দুই মিলিমিটারের পানি নিরোধক স্তর ‘ওয়াটার প্রুভিং মেমব্রেন’ দেয়া হয়। এটি অনেকটা প্লাস্টিকের আচ্ছাদনের মতো। এর ওপর কয়েক স্তরের কার্পেটিং হবে, যার পুরুত্ব হবে ১০০ মিলিমিটার।”
সেতুর নির্বাহী প্রকৌশলী দেওয়ান মো. আব্দুল কাদের বলেন, ‘১৩ জুলাই জাজিরা প্রান্তে ৪১ নম্বর স্প্যানের রোডওয়েতে পরীক্ষামূলকভাবে কার্পেটিং করা হয়। পরে ৪০ নম্বর পিলার থেকে কাজ শুরু হয়েছে। প্রথমে ৬৩ দশমিক ৫ মিলিটার পুরু পিচ দেয়া হচ্ছে। এর ওপর আরও পিচ দিয়ে ১০০ মিলিমিটার পুরু করা হবে। কার্পেটিং-এর পাশাপাশি সামনের মাসে সড়কবাতির কাজও শুরু হবে।’
২০০৭ সালের আগস্টে পদ্মা সেতুর প্রকল্প অনুমোদন দেয় তৎকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার, ব্যয় ধরা হয়েছিল ১০ হাজার ১৬১ কোটি টাকা। সর্বশেষ ব্যয় ধরা হয় ৩০ হাজার ১৯৩ কোটি টাকা। দ্বিতল এই সেতুর ওপর দিয়ে যানবাহন ও নিচ দিয়ে রেল চলাচল করবে।
পদ্মায় মূল সেতু নির্মাণের কাজ করছে চীনের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি লিমিটেড। ২০১৫ সালের ৭ নম্বর পিলার বসানোর মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিক কাজ শুরু হয়।
পরে একে একে ৪২টি পিলারে ১৫০ মিটার দৈর্ঘ্যের ৪১টি স্প্যান বসিয়ে ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ পদ্মা সেতু পুরোপুরি দৃশ্যমান হয় ২০২০ সালের ১০ ডিসেম্বর।
২০২০-এর জুন মাসে শেষ হওয়ার কথা ছিল বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় এই সেতুর কাজ। তবে করোনা মহামারি ও প্রবল বন্যায় কাজের ব্যাঘাত হওয়ায় আরও দুই বছর বেড়েছে প্রকল্পের মেয়াদ।