রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসা শেষে হাসপাতাল ছেড়েছেন বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। উঠেছেন রাজধানীর গুলশানে নিজ বাসা ফিরোজায়।
রোববার বিকেল ৪টা ৫০ মিনিটে হাসপাতাল থেকে বাসার উদ্দেশে রওনা হন খালেদা জিয়া। ফিরোজায় পৌঁছান ৫টা ৩২ মিনিটে। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকোর স্ত্রী শর্মিলা রহমানও। ছিলেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, ব্যক্তিগত চিকিৎসক ও বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান এ জেড এম জাহিদ হোসেনও।
বিএনপির কয়েকটি সূত্র জানিয়েছে, খালেদা জিয়া শারীরিকভাবে সুস্থ বোধ করায় তাকে এখন থেকে বাসায় রেখে চিকিৎসা দেয়া হবে।
গত ১২ অক্টোবর খালেদা জিয়াকে এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তখন বলা হয়, খালেদা জিয়া কিছুদিন ধরে জ্বরে ভুগছিলেন। জ্বর সেরে গেলেও শারীরিক দুর্বলতাসহ স্বাস্থ্যগত নানা জটিলতা দেখা দেয়ায় স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য তাকে এভারকেয়ার হাসপাতালে নেয়া হয়। কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর চিকিৎসকদের পরামর্শে খালেদাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
গত ২৫ অক্টোবর খালেদা জিয়ার শরীর থেকে নেয়া টিস্যুর বায়োপসি করা হয়। এ পরীক্ষার পর তার চিকিৎসকরা জানান, খালেদা জিয়া সুস্থ হয়ে উঠছেন। বায়োপসিসহ বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষার রিপোর্ট পর্যালোচনা করে তাকে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
গত এপ্রিল মাসে করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হন সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী। বাসায় চিকিৎসা নিয়ে করোনা থেকে সেরে উঠলেও শারীরিক জটিলতা দেখা দেয়ায় ২৭ এপ্রিল খালেদা জিয়াকে এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। একপর্যায়ে শ্বাসকষ্ট দেখা দিলে তাকে সিসিইউতে নেয়া হয়। গত ১৯ জুন তিনি বাসায় ফেরেন।
গুলশানের বাসভবন ফিরোজায় খালেদা জিয়াকে বহনকারী গাড়ি পৌঁছালে ঘিরে ধরেন বিএনপির নেতা-কর্মীরা। ছবি: নিউজবাংলা
এর মধ্যে করোনার টিকা নিতে খালেদা জিয়া দুই দফায় মহাখালীর শেখ রাসেল ন্যাশনাল গ্যাস্ট্রোলিভার ইনস্টিটিউট অ্যান্ড হাসপাতালে যান।
৭৭ বছর বয়সী সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া দুর্নীতির দুই মামলায় দণ্ডিত। দণ্ড নিয়ে তিন বছর আগে তাকে কারাগারে যেতে হয়।
২০০৮ সালের ৮ মার্চ জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় পাঁচ বছরের কারাদণ্ড হয় খালেদার। পরে উচ্চ আদালত সাজা বাড়িয়ে ১০ বছর করে। ওই বছরই জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় তাকে সাত বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়।
২০২০ সালের মার্চে দেশে করোনা সংক্রমণ দেখা দেয়ার পর বিএনপি নেত্রীকে দেশের বাইরে না যাওয়া ও বাড়িতে বসে চিকিৎসা নেয়ার শর্তে ছয় মাসের জন্য দণ্ড স্থগিত করিয়ে মুক্তি দেয়া হয়। এরপর দফায় দফায় বাড়ানো হয় দণ্ড স্থগিতের মেয়াদ।
সাবেক প্রধানমন্ত্রীর আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস, হাঁটুর জটিলতা ছাড়াও নানা ধরনের রোগ আছে বলে তার দলের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। ২০১৭ সালে যুক্তরাজ্যে তার চোখেও অপারেশন করা হয়।