বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

তীর রক্ষার ব্লকে মরছে বলেশ্বর

  •    
  • ৭ নভেম্বর, ২০২১ ০৮:২২

নদীর পাড়ের বাসিন্দা আসাদুজ্জামান আসাদ, সোহেল হোসেন ও হাসান মৃধাসহ বেশ কয়েকজন জানান, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান অপরিকল্পিতভাবে মাঝ নদী পর্যন্ত ব্লক ডাম্পিং করে রেখেছে। দীর্ঘদিন পার হলেও ব্লক প্লেসিংয়ের কাজ শুরু করেনি। ব্লকের আশপাশে পলি জমে ভরাট হয়ে যাচ্ছে নদীর তলদেশ। এ অবস্থায় তীরে ভিড়তে পারছে না কোনো নৌযান।

তীর সংরক্ষণে পানি উন্নয়ন বোর্ডের ফেলা ব্লকে পিরোজপুরের বলেশ্বর নদের একাংশ ভরাট হয়ে গেছে।

স্থানীয়দের অভিযোগ, নদীতে ব্লক ফেলার জন্য তীরে ভিড়তে পারছে না নৌযান। এ জন্য প্রতিদিন নদী পারাপারে সমস্যায় পড়ছেন স্কুল-কলেজ শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষ। ব্যাহত হচ্ছে ব্যবসা-বাণিজ্য। দ্রুত বিষয়টির সুরাহা চেয়েছে এলাকাবাসী।

পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) বলছে, প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার আগেই সমস্যার সমাধান হবে।

পিরোজপুরের পাশ দিয়ে বয়ে চলা খরস্রোতা নদ বলেশ্বর। এটি মূলত দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের পিরোজপুর, বাগেরহাট, বরগুনা জেলার একটি নদী । বলেশ্বরের দৈর্ঘ্য ১৪৬ কিলোমিটার, গড় প্রস্থ ১৬৪৪ মিটার এবং প্রকৃতি সর্পিলাকার। এর উৎসস্থল কালীগঙ্গা নদী। বলেশ্বর নদ দক্ষিণে প্রবাহিত হয়ে হরিণঘাটা নদীর সঙ্গে মিলে বঙ্গোপসাগরে পড়েছে।

সম্প্রতি নদীটি রক্ষণাবেক্ষণের উদ্যোগ নেয় পাউবো।

বলেশ্বর নদের পুরাতন খেয়াঘাট থেকে ২১৯ মিটার এলাকায় ৩৬ হাজার ৭১৮টি ব্লক ডাম্পিং এবং প্লেসিং করা হচ্ছে। এ কাজের দায়িত্বে আছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মুনা ও মাইশা ট্রেডার্স। এ প্রকল্পের কাজ ২০২০ সালের ২৫ মে শুরু হয়। ২০২১ সালের ৩০ মে শেষ হওয়ার কথা ছিল।

নদীর পাড়ে গিয়ে দেখা যায়, কাজ এখনও শেষ হয়নি। এলোমেলো ব্লক ফেলার কারণে খেয়াঘাটে নৌকা ভিড়তে অসুবিধা হচ্ছে। অনেক সময় নৌকার তলা ভেঙে অহরহ ঘটছে দুর্ঘটনা।

নদীর পাড়ের বাসিন্দা আসাদুজ্জামান আসাদ, সোহেল হোসেন, হাসান মৃধাসহ বেশ কয়েকজন জানান, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান অপরিকল্পিতভাবে মাঝ নদী পর্যন্ত ব্লক ডাম্পিং করে রেখেছে। দীর্ঘদিন পার হলেও ব্লক প্লেসিংয়ের কাজ শুরু করেনি। ব্লকের আশপাশে পলি জমে ভরাট হয়ে যাচ্ছে নদীর তলদেশ। এ অবস্থায় তীরে ভিড়তে পারছে না কোনো নৌযান।

স্থানীয়রা জানান, পরিবহন সুবিধার জন্য স্থানীয় ব্যবসায়ীরা ঢাকা থেকে নৌপথে বড় বড় কার্গো ট্রলারে মালপত্র এনে এখানে খালাস করতেন। এখন কােনো নৌযানই ভিড়তে পারছে না। এর প্রভাব পড়েছে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দামে। মালপত্রের দাম দিন দিন বাড়ছে।

নদী ভরাট ও জনগণের সমস্যার কথা স্বীকার করেন পিরোজপুর পৌরসভার কাউন্সিলর ইশিতা বেগম হ্যাপি। তিনি জানান, জনগণের সমস্যা নিরসনে শিগগিরই ব্যবস্থা নেবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। এ ব্যাপারে পৌরসভার পক্ষ থেকে পানি উন্নয়ন বোর্ডের সঙ্গে কথা বলা হবে।

প্রকল্পটি যেন পরিকল্পিতভাবে বাস্তবায়িত হয়, সেদিকে কার্যকর পদক্ষেপ নেয়ার দাবি জানিয়েছেন পরিবেশবাদীরা।

বেলার বরিশাল বিভাগীয় সমন্বয়কারী লিঙ্কন বায়েন বলেন, ‘বলেশ্বর নদের পানি শোধন করে পিরোজপুর পৌরবাসীর পানির চাহিদা পূরণ হয়। নদী ভরাটে পানির স্বল্পতা দেখা দেবে, এতে স্থানীয়দের জীবন হুমকির মুখে পড়বে।’

প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার আগেই সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিয়েছেন পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী মাহবুবে মওলা মোহাম্মদ মেহেদি হাসান।

তিনি বলেন, ‘দুটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে এ কাজের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। নদী ভরাটসহ বিভিন্ন সমস্যার অভিযোগ এসেছে। আমরা এর সমাধানে উদ্যোগ নিচ্ছি প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার আগেই।’

এ বিভাগের আরো খবর