বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

দেশে ইলিশের দাম বেশি, ভারতে রপ্তানিতে ধস

  •    
  • ৭ নভেম্বর, ২০২১ ০০:১৯

বিশ্বাস ট্রেডার্সের মালিক নূরুল আমিন বিশ্বাস বলেন, ‘এবার প্রতি কেজি ইলিশের রপ্তানি মূল্য ধরা হয়েছে ১০ ডলার। দুই দেশের কাস্টমস থেকে শুল্কমুক্ত সুবিধাও আছে। তারপরও স্থানীয় বাজারে ইলিশসংকট ও দাম অস্বাভাবিক বেশি হওয়ায় এবার অনেকেই ইলিশ রপ্তানি করতে পারেননি। আমি মনে করি, অতিরিক্ত পরিমাণ রপ্তানির অনুমতি দেয়ায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।’

ভারতে এবার ৪ হাজার ৬০০ টন ইলিশ রপ্তানির কথা ছিল। কিন্তু রপ্তানি মূল্যের চেয়ে ভারতের বাজারে ইলিশের মূল্য কম হওয়ায় বেনাপোল বন্দর দিয়ে দুই দফায় ভারতে গেছে মাত্র ১ হাজার ২২৭ দশমিক ৫ টন ইলিশ। এর মধ্যে দুর্গাপূজার আগে প্রথম দফায় ১ হাজার ১৩৭ ও দ্বিতীয় দফায় ৯০ দশমিক ৫ টন ইলিশ রপ্তানি হয়েছে।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয় দুর্গাপূজার আগে ১১৫টি প্রতিষ্ঠানকে ৪০ টন করে মোট ৪ হাজার ৬০০ টন ইলিশ রপ্তানির অনুমতি দেয়। প্রথমে ২২ সেপ্টেম্বর থেকে ১০ অক্টোবরের মধ্যে রপ্তানির আদেশ দেয়া হয়। এর মধ্যে প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় ৪ থেকে ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত প্রজনন মৌসুম হওয়ায় ইলিশ আহরণ, পরিবহন, বিক্রি ও বাজারজাত নিষিদ্ধ ঘোষণা করে। ফলে ৩ অক্টোবর মধ্যরাত পর্যন্ত বেনাপোল বন্দর দিয়ে ভারতে ইলিশ রপ্তানি হয় মাত্র ১ হাজার ১৩৭ টন। এ সময় পর্যাপ্ত ইলিশ না পাওয়ায় ও দাম বেশি হওয়ায় রপ্তানিকারকরা ইলিশ রপ্তানি করতে পারেননি। সে হিসাবে অনুমতি পেয়েও ৩ হাজার ৩৭২ দশমিক ৫ টন ইলিশ রপ্তানি করা যায়নি।

এদিকে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত ২৬ অক্টোবর ভারতে ইলিশ রপ্তানির সময় বাড়িয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে। তাতে বলা হয়, ১১৫টি প্রতিষ্ঠানকে ৪০ টন করে ইলিশ রপ্তানির অনুমতি দেয়া হয়েছিল। কিন্তু ৪ থেকে ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত প্রজনন মৌসুম হওয়ায় সারা দেশে ইলিশ আহরণ, পরিবহন, বাজারজাতকরণ ও বিক্রি নিষিদ্ধ ছিল। যে কারণে অনুমোদন পাওয়া প্রতিষ্ঠানগুলো ইলিশ রপ্তানি করতে পারেনি। এ জন্য অবশিষ্ট ইলিশ রপ্তানির সময় ৫ নভেম্বর পর্যন্ত বাড়ানো হলো। কিন্তু অনুমতি সত্ত্বেও সে পরিমাণ ইলিশ রপ্তানি হয়নি।

রপ্তানিকারকদের বক্তব্য, ভারতে যে দামে ইলিশ রপ্তানি করতে হচ্ছে, তার চেয়ে বেশি দামে বাংলাদেশের বাজার থেকে ইলিশ কিনতে হয়। তার সঙ্গে প্যাকেজিং ব্যয় ও বেনাপোল পর্যন্ত ট্রাক ভাড়া যোগ করলে লাভ তো দূরে থাক, প্রতি টনে হাজার হাজার টাকা লোকসান গুনতে হচ্ছে। সে কারণে ২৮ অক্টোবর থেকে ৪ নভেম্বর পর্যন্ত মাত্র ৯০ দশমিক ৫ টন ইলিশ রপ্তানি হয়েছে।

বেনাপোল মৎস্য পরিদর্শন ও মান নিয়ন্ত্রণ কার্যালয়ের পরিদর্শক আসওয়াদুল ইসলাম বলেন, দ্বিতীয় দফায় ৪ নভেম্বর পর্যন্ত ভারতে ৯০ দশমিক ৫ টন ইলিশ রপ্তানি হয়েছে বেনাপোল বন্দর দিয়ে। এর আগে প্রথম দফায় গিয়েছিল ১ হাজার ১৩৭ টন। সে হিসেবে ৩ হাজার ৩৭২ দশমিক ৫ টন ইলিশ রপ্তানি করা যায়নি।

ইলিশ রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান বিশ্বাস ট্রেডার্সের মালিক নূরুল আমিন বিশ্বাস বলেন, ‘এবার প্রতি কেজি ইলিশের রপ্তানি মূল্য ধরা হয়েছে ১০ ডলার। দুই দেশের কাস্টমস থেকে শুল্কমুক্ত সুবিধাও আছে। তারপরও স্থানীয় বাজারে ইলিশসংকট ও দাম অস্বাভাবিক বেশি হওয়ায় এবার অনেকেই ইলিশ রপ্তানি করতে পারেননি। আমি মনে করি, অতিরিক্ত পরিমাণ রপ্তানির অনুমতি দেয়ায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।’

দেশে ইলিশের উৎপাদন ঘাটতির কারণে ২০১২ সালে ইলিশ রপ্তানি বন্ধ করে দেয় সরকার। পরে বন্ধুত্ব ও সৌহার্দ্যের সম্পর্কের সূত্র ধরে ২০১৯ সাল থেকে প্রতিবছর দুর্গাপূজার আগে ভারতে ইলিশ রপ্তানির অনুমতি দিয়ে আসছে সরকার।

এ বিভাগের আরো খবর