বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

পরিবহন ধর্মঘট: অফিসগামী ও শিক্ষার্থীদের দুর্ভোগ

  •    
  • ৬ নভেম্বর, ২০২১ ১১:০৮

ডিজেলের দাম বাড়লেও সিএনজি ও পেট্রলে চলা যানবাহনগুলো ‘সুযোগ পেয়ে’ অতিরিক্ত ভাড়া নিচ্ছে। অতিরিক্ত ভাড়া দিয়েও যানবাহন স্বল্পতায় নির্ধারিত সময়ে গন্তব্যে পৌঁছাতে পারছেন না অনেকে।

জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির সঙ্গে ভাড়া সমন্বয়ের দাবিতে পরিবহন মালিকদের ধর্মঘটের দ্বিতীয় দিনে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন অফিসগামী ও স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা। গণপরিবহন না থাকায় দীর্ঘ পথ পায়ে হেঁটে বা মোটরসাইকেল, সিএনজি, রিকশায় বাড়তি ভাড়ায় গন্তব্যে পৌঁছাতে হচ্ছে তাদের।

ডিজেলের দাম বাড়লেও সিএনজি ও পেট্রলে চলা যানবাহনগুলো ‘সুযোগ পেয়ে’ অতিরিক্ত ভাড়া নিচ্ছে। অতিরিক্ত ভাড়া দিয়েও যানবাহন স্বল্পতায় নির্ধারিত সময়ে গন্তব্যে পৌঁছাতে পারেননি অনেকে।

শনিবার সকাল ১০টায় শুরু হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত সাত কলেজের ভর্তি পরীক্ষা। পরিবহন ধর্মঘটের কারণে সময়মতো কেন্দ্রে পৌঁছাতে বেগ পেতে হয়েছে শিক্ষার্থীদের।

মোহাম্মদপুরের বাসিন্দা নাজমুল, তার অফিস বনানীতে। সাধারণত ভাড়ায়চালিত মোটরসাইকেলে যাতায়াত করেন। ১২০-১৫০ টাকায় নিয়মিত যাতায়াত করতেন তিনি। শুক্রবার অফিস বন্ধ থাকায় বাইরে কোথাও বের হননি।

তবে শনিবার অফিস খোলা থাকায় গণপরিবহনের ধর্মঘটের কথা জেনেও বাধ্য হয়ে বের হয়েছেন জীবিকার তাগিদে। তবে ভাড়া আগের মতো নেই। বেড়েছে অনেক। ১২০ টাকার জায়গায় তাকে মোহাম্মদপুর থেকে বনানীতে পৌঁছতে হয়েছে ২৮০ টাকায়।

নাজমুল বলেন, ‘বাড়তি ভাড়াতেও মোটরসাইকেল পাওয়া যায়নি। মোহাম্মদপুর বাসস্ট্যান্ডে একটি মোটরসাইকেল এসে থামলে ৭-৮ জন যাওয়ার জন্য দরদাম করেছে। এই সুযোগে ভাড়া বেশি চাইছেন চালকরা।’

অতিরিক্ত চাহিদার কারণে বেশি ভাড়াতেও মোটরসাইকেল পেতে দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হয়েছে বলে জানান তিনি।

বাড্ডা লিংক রোড থেকে বাসে চড়ে প্রতিদিন স্কুলে যান বিএফ শাহীন কলেজের শিক্ষার্থী ইশতিয়াক আহমেদ। তাকে মহাখালী পর্যন্ত হেঁটে আসতে হয়েছে।

তিনি বলেন, ‘কোনো বাস পাইনি। রিকশাও অনেক বেশি ভাড়া চাচ্ছে। তাই হেঁটেই আসছি। কয়েকটা বিআরটিসি বাস গেছে, কিন্তু ওঠার মতো কোনো জায়গা ছিল না। যাত্রীতে কানায় কানায় ভর্তি।’

ডিজেলের দাম বেড়েছে, কিন্তু পেট্রলে চলা মোটরসাইকেলে কেন বেশি ভাড়া নিচ্ছেন? এমন প্রশ্নের জবাবে কোনো উত্তর দিতে পারেননি কোনো মোটরসাইকেল চালক। রামপুরা ইউলুপসংলগ্ন স্টপেজে কয়েকজন চালককে এই প্রশ্ন করলে, তারা মুচকি হাসেন।

প্রশ্ন শুনে দরদাম করতে থাকা একযাত্রী বলেন, ‘সুযোগ পাইছে। সব সুযোগের অভাবে ভালো মানুষ। আর সুযোগ পাইলেই আসল চেহারা দেখায়।’

একই প্রশ্ন করা হয় সিএনজিচালিত অটোরিকশা ও রিকশাচালকদের। তারাও কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি।

চালকদের স্বেচ্ছাচারিতায় বিরক্তি প্রকাশের পাশাপাশি সরকারকে দোষারোপ করেন যাত্রীরা। তারা বলছেন, ভাড়া বাড়ালে এই সমস্যা হতে পারে, তা জেনেও সরকার আগে কেন আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেয়নি।

গুলশান-১-এ একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত তাপস বলেন, জ্বালানির দাম যদি বাড়াতেই হবে তাহলে সবার সঙ্গে আলোচনা করে বাড়াত। তাহলে আর এই দুর্ভোগে পড়তে হতো না।

ধর্মঘটের প্রথম দিন শুক্রবার অনেককে ঢাকার বাইরে যেতে বাসস্ট্যান্ডগুলোতে গিয়ে ফিরে আসতে দেখা গেলেও দ্বিতীয় দিনে এর সংখ্যা ছিল খুব কম। হাতে গোনা কয়েকজন যাত্রী বাসস্ট্যান্ডে এসেছেন।

মহাখালী শাহজালাল কাউন্টারের কর্মচারী পরিচয় দিয়ে লালন নামের একজন বলেন, কালকে কিছু মানুষ আসছিল। আজকেও দুয়েকজন যাত্রী আসছে, কিন্তু বাস না পেয়ে ফিরে গেছে।

গত বুধবার রাতে ডিজেলের দাম এক লাফে ১৫ টাকা বা ২৩ শতাংশ বাড়িয়ে ৮০ টাকা নির্ধারণ করে জ্বালানি বিভাগ। বৃহস্পতিবার সকালেই পণ্যবাহী গাড়ির মালিক-শ্রমিকদের সংগঠন ধর্মঘটে যাওয়ার ডাক দেয়। জেলায় জেলায় বাস না চালানোর ঘোষণাও দেয়া হয়।

কেন্দ্রীয়ভাবে বাসমালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন সমিতি বিআরটিএর কাছে ভাড়া যৌক্তিক হারে বাড়াতে আবেদন করে। সে আবেদনে লেখা ছিল, জেলায় জেলায় বাসমালিকরা বলছেন, বিদ্যমান ভাড়ায় যাত্রী পরিবহন করলে তাদের লোকসান হবে। তাই তারা বাস চালাবেন না।

এ বিভাগের আরো খবর