ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের জেরে সহিংসতায় চারজন নিহতের ঘটনার পরদিন ফের সংঘর্ষ হয়েছে নরসিংদী সদরের আলোকবালী ইউনিয়নে।
দুর্গম এই চরাঞ্চলের উত্তরপাড়ায় শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে সংঘর্ষে জড়ায় ইউপি সদস্য পদের দুই প্রার্থীর সমর্থকরা। সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয় পুলিশ।
নরসিংদী সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি-তদন্ত) হারুনুর রশিদ এ তথ্যগুলো নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, সবশেষ পাওয়া তথ্যে সংঘর্ষে দুজন আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।
স্থানীয়রা জানান, বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে আলোকবালী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেন দীপুর অনুসারী ৩ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য প্রার্থী মো. মামুনের লোকজনের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ান ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদুল্লাহ আসাদের অনুসারী ইউপি সদস্য প্রার্থী জব্বর মিয়ার লোকজন।
এই দুই পক্ষের সংঘর্ষে ইউনিয়নের নেকজানপুর গ্রামে গত বৃহস্পতিবার গুলিবিদ্ধ হয়ে চারজনের মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় শুক্রবার সন্ধ্যা পর্যন্ত কোনো মামলা হয়নি। আটকও করা হয়নি কাউকে।
- আরও পড়ুন: নরসিংদীতে নির্বাচনি সহিংসতায় নিহত ৩
এসব ঘটনায় আতঙ্কিত চরাঞ্চলের লোকজন।
সদর থানার ওসি হারুনুর রশিদ জানান, নিহতদের পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় কেউ মামলা করতে আসেনি। এলাকার সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের হয়ে চেয়ারম্যান পদের জন্য মনোনয়ন চেয়েছিলেন বর্তমান চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেন ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ নেতা আসাদুল্লাহ।
দেলোয়ার আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাওয়ায় স্বতন্ত্র হিসেবে নির্বাচন করার ঘোষণা দেন আসাদুল্লাহ।
দলের নেতা-কর্মীদের চাপে আসাদুল্লাহ পরে মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নেন। এরপর থেকে দুই পক্ষের সমর্থকদের মধ্যে বিরোধ প্রকট হয়ে ওঠে।
- আরও পড়ুন: নরসিংদীতে নির্বাচনি সহিংসতায় নিহত বেড়ে ৪
এরই জেরে বৃহস্পতিবার সকালে দুই পক্ষ সংঘর্ষে জড়ায়। গুলিতে প্রাণ যায় নেকজানপুর গ্রামের আমির হোসেন, মো. আশ্রাফুল, খুশি বেগম ও খাইরুল ইসলামের।
গুলিবিদ্ধ আরও ছয়জনকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
এসব বিষয়ে আলোকবালী ৩ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি মামুন হাসান বলেন, ‘নির্বাচনকে ঘিরে উৎসবমুখর পরিবেশ থাকার কথা থাকলেও এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। সবাই এখন ভয়ে আছে। গুলিতে কয়েকজন আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। তারা চিকিৎসা শেষে বাড়িতে এলে আলোচনা সাপেক্ষে আমরা মামলার সিদ্ধান্ত নেব।’