কক্ষে একা নারী। মাদকাসক্ত ব্যক্তির প্রয়োজন টাকা। হঠাৎ কক্ষের কাটআউট পড়ে বিদ্যুৎ চলে যাওয়ায় মাদকাসক্তের মাথায় খুন চড়ে বসে।
তিনি প্রথমে নারীকে ছুরি দিয়ে আঘাত করেন। পরে বালিশ চাপা দিয়ে শ্বাসরোধে তাকে হত্যা করে স্বর্ণালংকার নিয়ে পালিয়ে যান।
রাজধানীর বংশালের সিদ্দিক বাজার এলাকায় গত ২৪ অক্টোবর রাত সাড়ে ৯টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
ক্লুলেস এ হত্যার রহস্য উদ্ঘাটনের পাশাপাশি সন্দেহভাজন আরিফ গাজীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। খুন হওয়া নারীর নাম পান্না বেগম।
খিলগাঁও নন্দীপাড়া এলাকার ছোট বটতলার ভাড়া বাসা থেকে বুধবার আরিফকে গ্রেপ্তার করে পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) লালবাগ বিভাগের কোতোয়ালি জোনাল টিম।
যেভাবে খুন
ডিবির লালবাগ বিভাগের অতিরিক্ত উপকমিশনার সাইফুর রহমান আজাদ নিউজবাংলাকে গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। একই সঙ্গে তিনি অক্টোবরের শেষ সপ্তাহের ঘটনার বর্ণনা করেছেন।
তিনি বলেন, পান্না বেগমের বড় ছেলের স্ত্রীর বাল্যবন্ধু ছিলেন আরিফ গাজী। সেই সুবাদে পান্নাদের বাসায় নিয়মিত আসা-যাওয়া করতেন তিনি। গত ২৪ অক্টোবর সন্ধ্যায় পান্নাদের বাসায় গিয়ে তার সঙ্গে কথাবার্তা বলেন এবং চা-নাশতা করেন আরিফ।
পুলিশের এই কর্মকর্তা জানান, দীর্ঘ সময় কথাবার্তা বলার একপর্যায়ে রাত আনুমানিক সাড়ে ৯টায় কক্ষের কাটআউট পড়ে বিদ্যুৎ চলে যায়। বাসায় অন্য লোক না থাকার সুযোগে পান্নাকে একা পেয়ে আরিফ গাজী ওয়ার্ডরোবের ওপর থাকা চাকু দিয়ে তার পিঠে সজোরে আঘাত করেন।
উপকমিশনার আজাদ আরও বলেন, ‘আঘাত পেয়ে চিৎকার করলে আরিফ ভিকটিমকে তার বিছানার ওপর থাকা বালিশ দিয়ে নাক ও মুখের ওপর চেপে ধরে শ্বাসরোধে মৃত্যু নিশ্চিত করেন। এ সময় ভিকটিমের নাকে থাকা একটি নাকফুল, আলমারির ড্রয়ার থেকে চারটি রুপার নূপুর, একটি রুপার তৈরি হার, একটি মোবাইল ফোন নিয়ে দ্রুত পালিয়ে যান।
‘পরবর্তী সময়ে এসব গয়না খিলগাঁও পশ্চিম নন্দীপাড়ার মাতবর গলির ভাই ভাই জুয়েলার্সের মালিক মাসুদ রানার কাছে ৮ হাজার ৬০০ টাকায় বিক্রি করেন আরিফ। তার কাছ থেকে চোরাই মাল কেনাবেচার জন্য দোকানমালিক মাসুদকেও গ্রেপ্তার করা হয়েছে।’
মাসুদের দোকান থেকে চুরি হওয়া মালামাল উদ্ধার করা হয়েছে।
জিজ্ঞাসাবাদে কী জানা গেল
ডিবি জানায়, মাদকাসক্ত আরিফের কাছে ওই রাতে টাকা ছিল না। বিদ্যুৎ চলে যাওয়ার পরই তার মাথায় হত্যার পরিকল্পনা আসে। তিনি খুন করে গয়না ও মোবাইল নিয়ে যান।
ডিবি আরও জানায়, জিজ্ঞাসাবাদে আরিফ হত্যার কথা স্বীকার করেন। একই সঙ্গে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়ার কথাও বলেন।