কম সময়ের মধ্যে আবারও বেসরকারি খাতে বাড়ানো হলো তরলীকৃত পেট্রোলিয়াম গ্যাসের (এলপিজি) দাম। ৫৪ টাকা দাম বাড়ানোয় এখন থেকে গ্রাহক পর্যায়ে ১২ কেজি এলপিজির দাম পড়বে ১ হাজার ৩১৩ টাকা।
অনলাইনে এক সংবাদ সম্মেলনে বৃহস্পতিবার ভোক্তা পর্যায়ে এলপিজির এই দামের ঘোষণা দেয় এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি)।
এর আগে ১০ অক্টোবর ১২ কেজি এলপিজি সিলিন্ডারের দাম ভোক্তা পর্যায়ে বাড়ানো হয়েছিল ২২৬ টাকা। সেই থেকে ১২ কেজি এলপিজি সিলিন্ডার মূসকসহ গুনতে হচ্ছিল ১ হাজার ২৫৯ টাকা।
গত ১২ এপ্রিল প্রথমবারের মতো এলপিজি গ্যাসের দাম বেঁধে দেয় বিইআরসি। তখন বলা হয়েছিল, সৌদি রাষ্ট্রীয় কোম্পানি আরামকো ঘোষিত দরকে প্রতি মাসের ভিত্তিমূল্য ধরা হয়েছে। সৌদির দর ওঠানামা করলে এলপিজির মূল্য ওঠানামা করবে।
আমদানিকারকের অন্যান্য কমিশন ও খরচ অপরিবর্তিত থাকবে। কমিশনের সেই নির্দেশনা অনুযায়ী, প্রতি মাসে দর নির্ধারণ করা হচ্ছে। যদিও বিইআরসি ঘোষিত দর খুব কম ক্ষেত্রেই কার্যকর হতে দেখা গেছে।
আগে এলপিজির দর ছিল কোম্পানিগুলোর ইচ্ছাধীন। দর নির্ধারণের বিষয়ে অনেক দিন ধরেই কথা হলেও জ্বালানি বিভাগ, বিইআরসি নাকি বিপিসি করবে সে নিয়ে ছিল রশি টানাটানি।
ক্যাবের এক রিটের পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্ট এলপিজির দর নির্ধারণ না করায় বিইআরসিকে শোকজ করে। সে মোতাবেক ১৪ জানুয়ারি গণশুনানি নিয়ে ১২ এপ্রিল দর ঘোষণা করে বিইআরসি।
দর ঘোষণার দিনেই আমদানিকারকদের পক্ষ থেকে আপত্তি তোলা হয়। তারা দাবি করে দর বেশি হওয়া উচিত ছিল। এরপর থেকে বিইআরসির সঙ্গে টানাপোড়েন শুরু হয় লোয়াবের। তারা প্রতি মাসের দর ঘোষণাও বর্জন করে। বিভিন্নভাবে বিইআরসির ওপর চাপ তৈরি করে। এমনকি এলপিজি আমদানি বন্ধ করে দেয়ারও হুমকি দেয়া হয়।
একপর্যায়ে জ্বালানি ও খনিজসম্পদ বিভাগ অনেকটা ব্যবসায়ীদের সুরেই কথা বলতে থাকেন। বিইআরসি অনেকটা বাধ্য হয়েই গত ১৩ সেপ্টেম্বর গণশুনানি গ্রহণ করে ১০ অক্টোবর আমদানিকারকদের কমিশন বাড়িয়ে দেয়া হয়।
গত এপ্রিলে ঘোষিত দরে এলপিজির আমদানিকারক, ডিলার ও খুচরা বিক্রেতার জন্য ১২ কেজির সিলিন্ডারে মোট ৩৫৯ দশমিক ৪০ টাকা কমিশন নির্ধারণ করা হয়েছিল। সেই চার্জ বাড়িয়ে ৪৪১ টাকা করা হয়েছে। ১২ কেজি সিলিন্ডারে কমিশন বাড়ানো হয়েছে ৮১ দশমিক ৬ টাকা। ডিলার এবং খুচরা বিক্রেতার কমিশন বাড়িয়ে যথাক্রমে ৩৪ ও ৩৮ টাকা করা হয়েছে।
আন্তর্জাতিক বাজারে এলপি গ্যাসের দাম বেড়ে যাওয়ায় নিয়ম অনুযায়ী দাম সমন্বয় করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিইআরসি চেয়ারম্যান আব্দুল জলিল।