চট্টগ্রাম নগরীতে খাল-নালায় পড়ে প্রাণহানির জন্য চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক) ও চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষকে (সিডিএ) দায়ী করে প্রতিবেদন দিয়েছে তদন্ত কমিটি।
কমিটির আহ্বায়ক চট্টগ্রামের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (উন্নয়ন) মোহাম্মদ মিজানুর রহমান বুধবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে নিউজবাংলাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, ‘মঙ্গলবার বিভাগীয় কমিশনারের কাছে প্রতিবেদন জমা দিয়েছি। তিনি মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে পাঠিয়ে দেবেন।’
তদন্ত প্রশ্নে মিজানুর রহমান বলেন, ‘দায়দায়িত্ব নির্ধারণ নিয়ে আমরা কাজ করেছি। যে দুটি সংস্থা নগরীতে কাজ করছে, দায়দায়িত্ব তাদেরই। এখানে ওয়াসা, পানি উন্নয়ন বোর্ড বা পুলিশের কোনো দায়িত্ব নেই।’
কোনো সুপারিশ করা হয়নি জানিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘মুরাদপুরে জলাবদ্ধতা নিরসনে সিডিএর একটি মেগা প্রকল্প চলছে। কাজ চলাকালীন সড়ক ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব প্রকল্প কর্তৃপক্ষের। তাই ব্যবসায়ী নিখোঁজের দায় নিতে হবে সিডিএকে।
‘একই সঙ্গে নগরের প্রধান উন্নয়ন সেবা সংস্থা চসিক। নাগরিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিতের দায়িত্ব রয়েছে তাদের ওপর। ফুটপাত ও সড়কে নির্বিঘ্ন চলাচলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা না নেয়ার দায় তারা এড়াতে পারে না।’
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের ম্যাজিস্ট্রেসি অধিশাখা গত ৩১ আগস্ট নালায় পড়ে মৃত্যুর ঘটনা তদন্ত করে ‘দায়দায়িত্ব নিরূপণসহ’ প্রতিবেদন পাঠাতে চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনারকে চিঠি দেয়।
চট্টগ্রামের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (উন্নয়ন) মোহাম্মদ মিজানুর রহমানকে প্রধান করে ২ অক্টোবর তদন্ত কমিটি গঠন করেন বিভাগীয় কমিশনার।
কমিটিতে সিএমপি কমিশনার ও জেলা প্রশাসকের প্রতিনিধি, সিডিএ সচিব, পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রধান প্রকৌশলী, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী এবং চট্টগ্রাম শহরে জলাবদ্ধতা নিরসনকল্পে খাল পুনঃখনন, সম্প্রসারণ ও উন্নয়ন প্রকল্পের দুই পরিচালককে রাখা হয়।
গত সোমবার বৈঠক করে চূড়ান্ত প্রতিবেদন তৈরি করে কমিটি।
২৫ আগস্ট মুরাদপুরে নালায় পড়ে নিখোঁজ হন সবজি বিক্রেতা সালেহ আহমেদ। এরপর ২৭ সেপ্টেম্বর দিবাগত রাতে আগ্রাবাদে নালায় ডুবে মৃত্যু হয় বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী সেহেরিন মাহবুব সাদিয়ার।
চসিক ও সিডিএর অবহেলার কারণেই এমন ঘটনা ঘটেছে দাবি করে গত ১৮ অক্টোবর সিডিএ চেয়ারম্যান ও চসিকের প্রধান নির্বাহীসহ ১৩ জনকে আইনি নোটিশ দেয় চিলড্রেন চ্যারিটি বাংলাদেশ ফাউন্ডেশন নামের একটি দাতব্য সংস্থা।