সরকারি চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ায় বেনাপোল বন্দর দিয়ে চাল আমদানি বন্ধ রয়েছে। এতে ভারত সীমান্তে বেশ কিছু চালের ট্রাক আটকা পড়েছে।
দেশে চালের বাজার স্থিতিশীল রাখার লক্ষ্যে ভারত থেকে চাল আমদানির সময়সীমা শনিবার শেষ হয়।
খাদ্য মন্ত্রণালয়ের বেঁধে দেয়া সময়ের পর ভারত সীমান্তে আটকা পড়া চাল আনতে সরকারকে শতকরা ৬২ ভাগ শুল্ক পরিশোধ করতে হবে। এর আগে আমদানীকৃত চালের শুল্ক ছিল ২৫ ভাগ।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, দেশের বাজারে চালের দামের ঊর্ধ্বগতি রোধ ও আমদানি নিয়ন্ত্রণ করতে সরকার চলতি বছর বেশ কিছু পদক্ষেপ নেয়।
গত ২৫ আগস্ট ৪০০ আমদানিকারককে সাড়ে ১৬ লাখ টন চাল আমদানির অনুমতি দেয় সরকার। এর মধ্যে ১৪ লাখ ৫৩ হাজার টন ছিল সিদ্ধ চাল এবং এক লাখ ৯৭ হাজার টন আতপ চাল। মোটা চাল প্রতি টন ৩৭০ থেকে ৩৮০ ডলার এবং চিকন চাল প্রতি টন ৪২৫ থেকে ৪৭০ ডলার মূল্যে আমদানি হয়।
শর্ত ছিল ৩০ অক্টোবরের মধ্যে এসব চাল ভারত থেকে আমদানি শেষ করতে হবে। চুক্তি অনুযায়ী শনিবার ছিল চাল আমদানির শেষ দিন।
৩১ অক্টোবর থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত ব্যবসায়ীরা চাল আমদানি করতে পারবেন না।
চাল ব্যবসায়ীরা জানান, দেশে প্রতিবছর চালের চাহিদা রয়েছে দুই কোটি ৩১ লাখ ৮২ হাজার টন। দেশে চাল উৎপাদন হয় বছরে গড়ে সাড়ে তিন কোটি টন। চাল উৎপাদনে বাংলাদেশ বিশ্বের তৃতীয় অবস্থানে।
তিনি জানান, বৈরী আবহাওয়া ও প্রাকৃতিক দুর্যোগে মাঝেমধ্যে চাল আমদানি করতে হয়। তবে কিছু আমদানিকারক সারা বছর চাল আমদানি করেন। এতে ভরা মৌসুমে চাষিরা ন্যায্যমূল্য না পেয়ে ক্ষতির মুখে পড়েন। এ অবস্থায় সরকার চাহিদামতো চাল আনতে আমদানিকারকদের তালিকা ও চাল আমদানির পরিমাণ নির্ধারণের সিদ্ধান্ত নেয়।আমদানিকারক মোশাররফ হোসেন জানান, সরকারি চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ায় বেনাপোল বন্দর দিয়ে চাল আমদানি বন্ধ রয়েছে। ৬২ শতাংশ শুল্ককর পরিশোধ করে চাল আমদানি করা সম্ভব নয়।
বাংলাদেশে প্রবেশের অপেক্ষায় এখনও ভারতে চালের ট্রাক সিরিয়ালে দাঁড়িয়ে আছে বলেও জানান তিনি।
আমদানিকারক আব্দুস সামাদ জানান, বেনাপোল বন্দর দিয়ে আমদানি করা মোটা চাল প্রতি কেজি ৪০ টাকা এবং চিকন চাল ৫২ টাকা দরে পাইকারি বাজারে বিক্রি হচ্ছে। বন্দর থেকে ব্যবসায়ীরা চাল কিনে দেশের বিভিন্ন স্থানে নিয়ে যাচ্ছেন।
বেনাপোল বন্দরের উপপরিচালক (ট্রাফিক) মামুন কবীর তরফদার জানান, খাদ্য মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী ২৫ শতাংশ শুল্ককর পরিশোধ করে চাল আমদানির চুক্তির মেয়াদ ৩০ অক্টোবর শেষ হয়েছে। ৩১ অক্টোবর চালের একটি চালান বেনাপোল বন্দরে প্রবেশ করে, তবে শুল্কায়ন জটিলতার কারণে খালাস হয়নি।