পিরোজপুরের ইন্দুরকানী উপজেলার পাড়েরহাট ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) একটি কক্ষে অবৈধভাবে পাঁচ বছর ধরে বসবাস করছেন চেয়ারম্যান গোলাম সরোয়ার বাবুল। সেখানে তার স্ত্রীও মাঝে মাঝে থাকেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
পরবর্তী নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরও কক্ষটি ছাড়েননি চেয়ারম্যান।
ইউপির কক্ষে থাকার বিষয়টি স্বীকার করেছেন বাবুল, তবে স্ত্রী নিয়ে সেখানে থাকেননি বলে দাবি করেছেন তিনি।
বাবুলের ভাষ্য, ২০১৬ সালের মে মাসে নির্বাচনে জয়ের পর থেকে প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী জনগণকে সার্বক্ষণিক সেবা দিতে তিনি ইউপি ভবনে থাকছেন। নির্বাচন চলে আসায় তিনি সেখানে স্ত্রী নিয়ে থেকেছেন বলে অপপ্রচার চালাচ্ছে বিরোধী পক্ষের লোকজন।
এ বিষয়ে কিছুই জানত না বলে দাবি করেছে জেলা প্রশাসন, তবে বাবুলের বিরুদ্ধে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন জেলা প্রশাসক (ডিসি) আবু আলী মো. সাজ্জাদ হোসেন।
তিনি বলেন, ‘কোনো কর্মকর্তা বা কর্মচারীর ইউনিয়ন পরিষদ বা কোনো সরকারি অফিসে রাতযাপনের সুযোগ নেই। যদি কেউ এভাবে থাকেন তাহলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
ইন্দুরকানী উপজেলার ১ নম্বর পাড়েরহাট ইউনিয়নে দুবার নির্বাচন করে পরাজিত হন গোলাম সরোয়ার বাবুল। তৃতীয়বারের চেষ্টায় চেয়ারম্যান পদে জয়ী হন তিনি। সেই থেকে তিনি পরিষদের একটি কক্ষ দখল করে সেখানে থাকছেন।
চেয়ারম্যান গোলাম সরোয়ার বাবুল ইউনিয়ন পরিষদের এই কক্ষে অবৈধভাবে পাঁচ বছর ধরে বসবাস করছেনছেলে ও মেয়ের পড়ালেখার জন্য খুলনার বাড়িতে থাকেন বাবুলের স্ত্রী। কখনও কখনও খুলনা থেকে পিরোজপুরে এলে এ পরিষদ ভবনে তিনিও থাকেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
আগামী ১১ নভেম্বর ইউপি নির্বাচনের কাজে চেয়ারম্যান স্বামী বাবুলকে সহযোগিতা করতে খুলনা থেকে পিরোজপুরে আসেন তার স্ত্রী। সম্প্রতি পরিষদ ভবনের কক্ষে স্ত্রীসহ বাবুলকে দেখা গেলে বিষয়টি আলোচনায় আসে।
তালা ঝুলছে কক্ষে
বাবুল যে কক্ষে থাকেন, সেটিকে সাজিয়েছেন কয়েক লাখ টাকা খরচ করে। কক্ষটিতে রয়েছে এসি, ফ্রিজ, টেলিভিশনসহ বিভিন্ন সামগ্রী।
কিছুদিন ধরে সংবাদকর্মীরা দেখছেন, কক্ষটিতে ঝুলছে তালা। এর কারণ হলো নির্বাচনি প্রচারে ব্যস্ত সময় পার করছেন বাবুল। তিনি পরিষদ ভবন থেকে সকালে বের হয়ে নির্বাচনের কাজ সেরে ফেরেন রাতে।
কী বলছেন সংশ্লিষ্টরা
এ বিষয়ে ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য (মেম্বার) ইলিয়াস খানের কাছে জানতে চাইলে তিনি ক্যামেরায় কথা বলতে চাননি। তিনিও এবারের নির্বাচনে প্রার্থী।
বিষয়টি সত্যি বলেছেন পরিষদের সচিব কাওসার হোসেন।
তিনি বলেন, ‘আমি দুই বছর ধরে এই পরিষদের সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করছি। এখানে তার স্থায়ীভাবে থাকার সুযোগ নেই, তবে বিশ্রাম নেয়ার জন্য একটি রুম বরাদ্দ আছে।’
ইউনিয়নের একাধিক বাসিন্দা জানান, ইউনিয়ন পরিষদে দিন-রাত থাকেন চেয়ারম্যান। সেখানেই খান, ঘুমান। সামনে নির্বাচন বলে ইউপির বাইরেই বেশিরভাগ সময় কাটাচ্ছেন।