ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে ছলে-বলে-কৌশলে কেউ বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হলে সেটিকে শৃঙ্খলাবিরোধী অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হবে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
রাজধানীর বাসভবনে সোমবার ব্রিফিংয়ে নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে তিনি এ কথা বলেন।
ইউপি নির্বাচন নিয়ে কাদের বলেন, ‘ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে মনোনয়নকে কেন্দ্র করে যারা সাংগঠনিক শৃঙ্খলা ভঙ্গ করছেন, নিজেদের মধ্যে সংঘাত-সংঘর্ষে লিপ্ত হচ্ছেন, তাদেরকে সাংগঠনিক শৃঙ্খলাবিরোধী তৎপরতা থেকে বিরত থাকতে নির্দেশ দেয়া হচ্ছে।
‘অন্যথায় সাংগঠনিক শৃঙ্খলা ভঙ্গকারী এবং তাদের মদদদাতা, উসকানিদাতা নেতা ও জনপ্রতিনিধিরাও দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থার সম্মুখীন হবেন।’
দলীয় প্রধানের নির্দেশে এসব কর্মকাণ্ডে জড়িতের তালিকা তৈরি করা হচ্ছে জানিয়ে কাদের বলেন, ‘অপকর্ম করলে কেউ রেহাই পাবেন না। শাস্তি তাদের পেতেই হবে। ছলে-বলে-কৌশলে, বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হলেও শৃঙ্খলাবিরোধী অপকর্ম বলে গণ্য করা হবে।’
আগামীকাল ২ নভেম্বর ইউপি নির্বাচনের দ্বিতীয় ধাপের মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার শেষ দিন।
‘বিএনপি উগ্রবাগ ও সাম্প্রদায়িকতার পৃষ্ঠপোষক’
বিএনপি দেশের ধর্মীয় উগ্রবাদ ও সাম্প্রদায়িক অপশক্তির পৃষ্ঠপোষক এবং নির্ভরযোগ্য ঠিকানা বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ এ নেতা।
তিনি বলেন, ‘দেশের মানুষ ভালো করেই জানেন বাংলাদেশের জন্মের পর থেকে আজ পর্যন্ত এ দেশে কারা সাম্প্রদায়িক রাজনীতি করে? কারা ধর্মকে রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে?’
এ প্রসঙ্গে নতুন করে বলার কিছু নেই জানিয়ে কাদের বলেন, ‘দেশের ধর্মীয় উগ্রবাদ ও সাম্প্রদায়িক অপশক্তির পৃষ্ঠপোষক এবং নির্ভরযোগ্য ঠিকানা হচ্ছে বিএনপি।’
ক্ষমতায় যেতে এবং ক্ষমতা অবৈধভাবে ধরে রাখতে বিএনপি সাম্প্রদায়িক শক্তির দলগুলোর ওপর নির্ভর করে বলেও অভিযোগ করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক।
তিনি বলেন, ‘১৯৯১ সালেও বিএনপি ক্ষমতায় এসেছিল সাম্প্রদায়িক শক্তির সাথে আঁতাত করে।’
বিএনপির আমলে দেশে ধর্মীয় উগ্রবাদ সৃষ্টি হয়েছে জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘৬৩টি জেলায় একই সঙ্গে বোমা হামলা হয়েছিল বিএনপির শাসনামলে। শায়খ আবদুর রহমান, বাংলা ভাইরা যে উগ্রপন্থার জন্ম দিয়েছিল তার প্রশ্রয়দাতা আর আশ্রয়দাতা ছিল বিএনপি।’
তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় একটি অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়ে তুলতে চায়, অন্যদিকে বিএনপি চায় মুক্তিযুদ্ধের পরাজিত শক্তিকে সাথে নিয়ে দেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করতে।’
‘সাম্প্রদায়িকতাকে অস্ত্র বানায় বিএনপি, আওয়ামী লীগ নয়’—এমন দাবি করে কাদের বলেন, ক্ষমতায় যেতে বিএনপিই ধর্ম আর সাম্প্রদায়িকতাকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করে।
ক্ষমতায় যেতে আওয়ামী লীগের ষড়যন্ত্রের প্রয়োজন হয় না দাবি করে কাদের বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু এ দেশের মানুষের জন্য আজীবন সংগ্রাম করেছেন। আর এখন তার কন্যা শেখ হাসিনা পিতার স্বপ্ন পূরণে অবিরাম লড়ে যাচ্ছেন।’
জনগণকে আওয়ামী লীগের প্রাণশক্তি উল্লেখ করে কাদের বলেন, ‘যারা ক্ষমতাকে নিজের ভাগ্য বদলের চাবি মনে করে এবং দেশে-বিদেশে সম্পদের পাহাড় গড়ে, ষড়যন্ত্র, হত্যা, সন্ত্রাসনির্ভর রাজনীতি করে, তাদের জনগণ প্রত্যাখ্যান করেছে।’