বগুড়ার শিবগঞ্জে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সহিংসতায় এক যুবককে হাত ও পায়ের রগ কেটে নদীতে ফেলে দেয়া হয়েছে। ভাঙচুর করা হয়েছে ২০টি বসতঘর।
পুলিশ বলছে, শিবগঞ্জের বিহার ইউনিয়নের হাটে রোববার সকালে এই ঘটনা ঘটে। আহত যুবককে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
আহত যুবকের নাম রবিউল ইসলাম। তিনি বিহার ইউনিয়নের নৌকার চেয়ারম্যান প্রার্থী মহিদুল ইসলাম রবিউলের ভাই শিমুল হত্যা মামলার প্রধান আসামি। স্থানীয়রা জানান, রবিউলের পরিবার আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী চেয়ারম্যান প্রার্থী মতিউর রহমানের সমর্থক।
রবিউলের ভাই স্থানীয় ইউপি সদস্য আবু রায়হান অভিযোগ করেন, ভোটে প্রার্থী হওয়ার পর থেকেই মহিদুল ও তার কর্মীরা গ্রামে তাণ্ডব শুরু করেন। বিহার হাটে গত ১৭ অক্টোবর রাতে তারা বিদ্রোহী প্রার্থীর নির্বাচনি ক্যাম্পে হামলা চালিয়ে দুইজনকে কুপিয়ে জখম করেন। হাটের দুটি দোকানও ভাঙচুর করেন।
রায়হান আরও অভিযোগ করেন, ওই ঘটনায় দুটি মামলাও হয়েছে। সবশেষ রোববার দুপুরের দিকে নৌকার কর্মীরা বিহার হাটে বিদ্রোহী প্রার্থীর সমর্থকদের মারধর করতে থাকেন। সেখানে স্থানীয়রা বাধা দিলে নৌকার কর্মীরা বাজার ছেড়ে বিভিন্ন পাড়ায় ঢুকে তাণ্ডব চালান। অন্তত ২০টি বাড়িঘর ভাঙচুর করা হয়।
রায়হান জানান, এ সময় তার বাড়িতেও হামলা চালানো হয়। তার ভাই রবিউলকে তুলে নিয়ে দুই হাত ও ডান পায়ের রগ কেটে নাগর নদীতে ফেলে দেয়া হয়।
রায়হান আরও জানান, গত ৩১ ডিসেম্বর তার আরেক ভাই মো. শিমুলকে তুলে নিয়ে মারধর করে গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে ফেলে আসেন নৌকার কর্মীরা। সেখানেই মারা যান শিমুল। এ ঘটনায় নৌকার চেয়ারম্যান প্রার্থী মহিদুলকে আসামি করে মামলাও হয়। এবারের নির্বাচনে রায়হান ও তার পরিবার নৌকার বিদ্রোহী প্রার্থীর পক্ষে কাজ করায় ক্ষিপ্ত ছিলেন মহিদুল।
এ বিষয়ে জানতে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও মহিদুল ইসলামের মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া গেছে। ঘটনার পর থেকে তার অনুসারীদেরও এলাকায় দেখা যায়নি।
শিবগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সিরাজুল ইসলাম জানান, ঘটনার পরপরই শিবগঞ্জ হাসপাতাল এলাকায় মহিদুলকে আটকে অভিযান চালানো হয়। এ সময় তিনি নিজের মোটরসাইকেলটি ফেলে রেখে পালিয়ে গেছেন।
এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন আছে জানিয়ে ওসি বলেন, পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে।