খালি মাঠে গোল দেয়া বা ওয়াকওভার নয়, আওয়ামী লীগ একটি প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ নির্বাচন চায় বলে জানিয়েছেন দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
ঢাকার বাসভবনে বৃহস্পতিবার নিয়মিত ব্রিফিংয়ে এ কথা বলেন ক্ষমতাসীন দলের এই নেতা।
তিনি বলেন, ‘শেখ হাসিনা সরকার, আওয়ামী লীগ কখনও খালি মাঠে গোল দিতে চায় না, সরকার চায় প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ নির্বাচন। কোনো প্রকার ওয়াকওভার আমরা চাই না। খালি মাঠে গোল দিতে আওয়ামী লীগ অভ্যস্তও নয়।’
১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারির বিএনপির একতরফা নির্বাচনের প্রসঙ্গ টেনে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘১৫ ফেব্রুয়ারির খালি মাঠে নির্বাচনের কথা বিএনপি ভুলে গেলেও জনগণ এখনও ভোলেনি।’
বিএনপি নেতারা নিজেদের ব্যর্থতা আড়াল করে কর্মী-সমর্থকদের রোষানল থেকে বাঁচতে ‘আবোল-তাবোল’ বক্তব্য দিচ্ছেন বলেও মন্তব্য করেন ওবায়দুল কাদের।
তিনি বলেন, ‘বিএনপি একদিকে অভিযোগ করছে সরকার মাঠ খালি করতে চায়। অপরদিকে ঘোষণা দিচ্ছে, এ সরকারের অধীনে নির্বাচন হবে না। তাহলে জনগণ কোনটা বিশ্বাস করবে? আর বিএনপি যদি এ কথা বিশ্বাস করে, তাহলে মাঠ ছেড়ে দিচ্ছে কেন?’
বিএনপির আন্দোলনের সমালোচনা করেন আওয়ামী লীগের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ নেতা বলেন, ‘প্রকৃতপক্ষে নির্বাচন আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে নয়, নির্বাচন হবে নির্বাচন কমিশনের অধীনে।’
পূজামণ্ডপে হামলা ও সাম্প্রদায়িক সহিংসতা নিয়েও কথা বলেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী। এসব ঘটনায় বিএনপি নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে সরকারের মামলা দেয়ার অভিযোগ ‘মোটেও সত্য নয়’ বলেও মন্তব্য করেন তিনি। বলেন, ‘কে কোন দল করে সেটা দেখে নয়, ভিডিও ফুটেজ দেখেই চিহ্নিতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।’
তবে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টের মাধ্যমে বিএনপি পরিস্থিতি ঘোলাটে করতে চেয়েছিল জানিয়ে কাদের বলেন, ‘সরকার তা শক্ত হাতে দমন করেছে। বিএনপি জাতিকে বিভ্রান্ত করছে এবং বিভেদ তৈরি করছে।’
নয়াপল্টনে বিএনপির সম্প্রীতি সমাবেশ প্রসঙ্গ
রাজধানীর নয়াপল্টনে মঙ্গলবার সম্প্রীতি সমাবেশের আড়ালে বিএনপির ভিন্ন কোনো এজেন্ডা ছিল কি না, তা খতিয়ে দেখা দরকার বলে মনে করেন ওবায়দুল কাদের।
তিনি বলেন, ‘বিএনপি আবারও প্রমাণ করেছে তারা শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালনে সক্ষম নয়। তাদের কর্মসূচি মানে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করা। তাদের সমাবেশ মানে জনগণের জানমাল এবং বিনা উসকানিতে পুলিশের ওপর হামলা।’
‘সভা-সমাবেশ সকলের সাংবিধানিক অধিকার’ মন্তব্য করে কাদের বলেন, ‘কিন্তু সমাবেশের অনুমতি না দিলে তারা বলত সরকার গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে না, আর অনুমতি দিলে হামলা, সন্ত্রাস সৃষ্টি করে জনগণের সম্পদ বিনষ্ট করে।’
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আমরা বিএনপিকে সতর্ক করে বলতে চাই কর্মসূচির নামে কোনো রূপ সন্ত্রাস কিংবা জনভোগান্তি সৃষ্টি করলে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ বসে থাকবে না। জনগণকে সঙ্গে নিয়ে প্রতিহত করবে।’
হামলা, সংঘর্ষ, ষড়যন্ত্র আর সন্ত্রাসই বিএনপির রাজনীতি জানিয়ে ক্ষমতাসীন দলের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘সেটা পূজামণ্ডপে হোক আর নয়াপল্টনে হোক, বিএনপি এই বৃত্ত থেকে বেরিয়ে আসতে পারছে না।’
স্থানীয় সরকার নির্বাচন
স্থানীয় সরকার নির্বাচনের পরবর্তী ধাপে যেসব এলাকায় নির্বাচন হবে, সেসব এলাকার আওয়ামী লীগের প্রতিটি সাংগঠনিক ইউনিটকে প্রস্তুতি নেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন ওবায়দুল কাদের।
তিনি বলেন, ‘ইউনিটগুলোকে এখন থেকেই মিটিং করে রেজল্যুশন প্রস্তুত করতে হবে।’
যে এলাকার নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হবে, তার পরপরই ইউনিয়ন থেকে উপজেলা এবং জেলা হয়ে রেজল্যুশন কেন্দ্রে সভাপতির কার্যালয়ে জমা দিতেও নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।