পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ভ্রমণ ও অবসর খাতের কোম্পানি ইউনিক হোটেল এবার বিনিয়োগকারীদেরকে ১০ শতাংশ লভ্যাংশ নগদ দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। অর্থাৎ বিনিয়োগকারীরা শেয়ার প্রতি এক টাকা করে পাবেন।
সোমবার কোম্পানিটির পরিচালনা পর্ষদ গত ৩০ জুন সমাপ্ত অর্থবছরের হিসাব পর্যালোচনা করে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
কোম্পানিটির তথ্য অনুযায়ী, ২০২০ সালের জুলাই থেকে গত ৩০ জুন পর্যন্ত কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি লোকসান হয়েছে ৩৩ পয়সা। তবে লোকসান হলেও তারা বিনিয়োগকারীদেরকে রিজার্ভ থেকে লভ্যাংশ দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
২৯৪ কোটি ৪০ লাখ টাকা পরিশোধিত মূলধনের কোম্পানিতে রিজার্ভ আছে ১ হাজার ৪৩৩ কোটি ২৩ লাখ টাকা। এ থেকে ২৯ কোটি ৪৪ লাখ টাকা যাবে লভ্যাংশ হিসেবে।
বরাবরই ভালো লভ্যাংশ দিয়ে আসা হোটেলটি সদ্য সমাপ্ত অর্থবছরে করোনার কারণে বিপাকে পড়েছে। বিদেশিদের আগমন কমে যাওয়ায় কোম্পানিটির ব্যবসায়িক কার্যক্রমে ভাটা দেয়। জুলাই থেকে মার্চ পর্যন্ত টানা তিনটি প্রান্তিকেই লোকসান দেয় কোম্পানিটি।
এর মধ্যে জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত প্রথম প্রান্তিকে শেয়ার প্রতি ৩ পয়সা, অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত দ্বিতীয় প্রান্তিকে ৬ পয়সা এবং জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত তৃতীয় প্রান্তিকে শেয়ার প্রতি লোকসান হয় ১১ পয়সা। চতুর্থ প্রান্তিকে লোকসান হয় আরও ১৪ পয়সা।
অবশ্য কোম্পানিটির নিজের ব্যবসায় শেয়ার প্রতি ১ টাকা ৪১ পয়সা আয় করেছিল। কিন্তু সহযোগী কোম্পানির লোকসানের কারণে শেষ পর্যন্ত ঋণাত্মক আয় হয়েছে।
২০২০ সালের মার্চে দেশে করোনার প্রাদুর্ভাবের পর শেষ প্রান্তিকের লোকসানের কারণে কোম্পানিটির আয় কমে গিয়েছিল। ওই বছর শেয়ার প্রতি ৯৫ পয়সা আয় করে এক টাকা লভ্যাংশ দিয়েছিল কোম্পানিটি।
এর আগে ২০১৬ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত দুই বছর শেয়ার প্রতি ২ টাকা ২০ পয়সা করে আর দুই বছর ২ টাকা করে লভ্যাংশ দিয়েছিল ইউনিক হোটেল।
২০১২ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানিটির সম্পদমূল্য বেশ আকর্ষণীয়। ১০ টাকা অভিহিত মূল্যের একেকটি শেয়ারের বিপরীতে সম্পদ আছে ৮১ টাকা ৪৩ পয়সা। ২০২০ সালের ৩০ জুন শেয়ারপ্রতি সম্পদ ছিল ৭৯ টাকা ৬৮ পয়সা।
যারা এই লভ্যাংশ দিতে চান তাদেরকে আগামী ১৮ নভেম্বর শেয়ার ধরে রাখতে হবে। অর্থাৎ লভ্যাংশ সংক্রান্ত রেকর্ড ডেট হবে সেদিনই। এই লভ্যাংশ অনুমোদনের জন্য বার্ষিক সাধারণ সভা ডাকা হয়েছে আগামী ২৭ ডিসেম্বর।
একটি বড় বিদ্যুৎকেন্দ্রের কাজ পাওয়াকে কেন্দ্র করে কোম্পানিটির শেয়ারদরে উল্লম্ফন হয়েছে গত কয়েক মাসে।
স্ট্র্যাটেজিক ফাইনান্স এবং জিই ক্যাপিটাল গ্লোবাল এনার্জি ইনভেস্টমেন্টের যৌথ উদ্যোগে নারায়ণগঞ্জের মেঘনাঘাটে ৫৮৪ মেগাওয়াটের একটি বিদ্যুৎকেন্দ্র করছে কোম্পানিটি।
এই প্রকল্পের কাজ শুরু হওয়ার পর জুলাইয়ের প্রথম সপ্তাহে কোম্পানিটির শেয়ার মূল্য ৩১ টাকা ৫০ পয়সা থেকে সেপ্টেম্বরের শেষে ৬৩ টাকা ৫০ পয়সায় উঠে। তবে এরপর দর সংশোধনে শেয়ারদর কিছুটা কমেছে। লভ্যাংশ ঘোষণার দিন ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে শেয়ারমূল্য ছিল ৪৯ টাকা।