প্রথমবারের মতো দেশের ২০টি সাধারণ এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক (সম্মান) প্রথম বর্ষের গুচ্ছ পদ্ধতিতে দ্বিতীয় ধাপের ‘বি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিক্যাল সেন্টারে বিশেষভাবে সক্ষম তিন শিক্ষার্থী পরীক্ষা দিয়েছেন। শারীরিক প্রতিবন্ধকতা থাকায় তাদের আবেদনে বিশেষ ব্যবস্থায় পরীক্ষা নেয়া হয়।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রে গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিতে ৪ জন শিক্ষার্থী শারীরিক প্রতিবন্ধকতার কারণে বিশেষ অনুমতি চেয়ে আবেদন জানায়। তবে পরীক্ষা দিন উপস্থিত ছিলেন ৩ জন।
এদের মধ্যে একজন ছেলে ও দুইজন মেয়ে। একজন ছেলে দৃষ্টি প্রতিবন্ধী, দুইজন মেয়ের মধ্যে একজন শারীরিক প্রতিবন্ধী ও আরেকজন গর্ভবতী।
মেডিক্যাল সেন্টারে পরীক্ষা দেয়া দৃষ্টি প্রতিবন্ধী পরীক্ষার্থী সেলিম ভূঞার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকেই শ্রুতিলেখকের ব্যবস্থা করা হয়ে।
নিউজবাংলাকে সেলিম ভূঞা বলেন, ‘আমার শ্রুতিলেখকের প্রয়োজন ছিল। কর্তৃপক্ষ আমাকে সে ব্যবস্থা করে দিয়েছে। পরীক্ষা ভালো হয়েছে, একটা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পাব বলে আশাবাদী।’
মেডিক্যাল সেন্টারে বিশেষ ব্যবস্থাপনায় পরীক্ষা দেয়া আরেক শিক্ষার্থী তাবাচ্ছুম তাবিয়া। গর্ভবতী এ শিক্ষার্থী বলেন, ‘আমার প্রেগন্যান্সির একদম শেষ পর্যায়ে পরীক্ষার তারিখ পড়েছে। সিঁড়ি বেয়ে উপরে উঠে পরীক্ষা দেয়া সম্ভব নয়। এ ব্যবস্থা করার জন্য কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ।’
এ ছাড়া ইসরাত জাহান অনিমা নামের আরেক শারীরিক প্রতিবন্ধী পরীক্ষার্থী বলেন, ‘আমার শারীরিক প্রতিবন্ধকতার কারণে এতোটা সিঁড়ি বেয়ে উপরে উঠে পরীক্ষা দেয়া সম্ভব নয়। সেজন্য আবেদন জানিয়েছিলাম, আমাকে এখানে পরীক্ষা দেয়ার ব্যবস্থা করে দিয়েছে।’
এবিষয়ে জানতে চাইলে ‘বি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার সমন্বয়কারী ও বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. সরকার আলী আক্কাস নিউজবাংলাকে বলেন, ‘পরীক্ষার্থীদের আবেদনে আমরা সাড়া দিয়েছি। দৃষ্টি প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীর জন্য শ্রুতি লেখক দিয়েছি। তার পছন্দমতো আমরা কাউকে দেইনি। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের মাধ্যমে এসএসসির উপরে নয়, এমন শিক্ষার্থীকে দেয়া হয়েছে। তাকে সম্পূর্ণ আলাদা রুমে দেয়া হয়েছে।’
গুচ্ছভুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের সমন্বিত ভর্তি কমিটি ২০২০-২০২১-এর যুগ্ম আহ্বায়ক ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. ইমদাদুল হক নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমরা সবাইকে সমানভাবে সুযোগ দিতে চাই। যেহেতু তারা জাতীয় পরীক্ষার মাধ্যমে পাশ করে এসেছে, তারা যোগ্য প্রার্থী। তারা প্রতিবন্ধী, তাদেরকেও তো আমাদের সুযোগ দিতে হবে। সেজন্য আমাদের পক্ষ থেকে যা যা করার দরকার আমরা করেছি।’
দেশের ২২টি কেন্দ্রে একযোগে ‘বি’ ইউনিটের গুচ্ছভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে। মানবিক বিভাগের এই ইউনিটে পরীক্ষার্থী ছিলেন ৬৭ হাজার ১১৭ জন। এর মধ্যে সবচেয়ে বড় কেন্দ্র জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে ৭ হাজার ৭৯৩ জন পরীক্ষার্থী পরীক্ষা দেন। ৭ হাজার ৩০৪ জন শিক্ষার্থী উপস্থিত হয় পরীক্ষায়।