দেশের দক্ষিণাঞ্চলে সড়ক যোগাযোগের নতুন দ্বার উন্মোচন হতে যাচ্ছে রোববার। ওই দিন সকাল সাড়ে ১০টায় ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী উদ্বোধন করবেন পায়রা নদীর ওপর নির্মিত সেতু।
উদ্বোধনের পরপরই দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম এই সেতুটি যান চলাচলের জন্য খুলে দেয়া হবে।
সেতুটি চালু হলে বরিশাল থেকে বাসে কুয়াকাটা যেতে সময় লাগবে মাত্র আড়াই থেকে তিন ঘণ্টা। মাইক্রোবাস, প্রাইভেট কার বা মোটরসাইকেলে আরও দ্রুত যাওয়া যাবে এই পর্যটন স্পটে। ফলে ফেরিঘাটে ঘণ্টার পর ঘণ্টা ভোগান্তি আর থাকবে না।
পায়রা সেতু প্রকল্পের পরিচালক আব্দুল হালিম জানান, সেতুটি উদ্বোধনের জন্য ইতোমধ্যে সব প্রস্তুতি শেষ হয়েছে। সাজ সাজ রব সেতুর উভয় পাড়ে। প্রধানমন্ত্রী ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হয়ে স্থানীয়দের সঙ্গে মতবিনিময় করবেন।
সেতুর দক্ষিণ প্রান্তে বিশাল প্যান্ডেল প্রস্তুত করা হয়েছে। সেখানে পটুয়াখালী জেলার পাঁচ সংসদ সদস্য ছাড়াও বরিশাল ও পটুয়াখালী জেলার জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা উপস্থিত থাকবেন।
পায়রা সেতু প্রকল্প অফিস সূত্রে জানা যায়, পটুয়াখালীর লেবুখালী নদীর ওপর পায়রা সেতু নির্মাণে ব্যয় হয়েছে ১ হাজার ৪৪৭ কোটি টাকা, যার ৮২ ভাগ অর্থ বহন করেছে কুয়েত ফান্ড ফর আরব ইকোনমিক ডেভেলপমেন্ট এবং অ্যাপেক ফান্ড।
২০১৬ সালের ২৪ জুলাই শুরু হওয়া এই সেতুর এরই মধ্যে ৯৯ ভাগ কাজ সম্পন্ন। ১ হাজার ৪৭০ মিটার দীর্ঘ এবং ১৯ দশমিক ৭৬ মিটার প্রস্থের এ সেতুর উভয় পাড়ে প্রায় সাত কিলোমিটার অ্যাপ্রোচ সড়ক রয়েছে।
পায়রা সেতু প্রকল্পের পরিচালক আব্দুল হালিম জানান, এই সেতুতে হেলথ মনিটরিং সিস্টেম ব্যবহার করা হয়েছে। ফলে ভূমিকম্প, বজ্রপাতসহ নানা প্রাকৃতিক দুর্যোগ অথবা অতিরিক্ত ওজনবাহী গাড়ির কারণে ক্ষতি এড়াতে পূর্বাভাস মিলবে মনিটরিং সিস্টেম থেকে। পায়রা সেতু নির্মাণে নদীর তলদেশে বসানো হয়েছে ১৩০ মিটার দীর্ঘ পাইল, যা দেশে সর্ববৃহৎ।
৩২টি স্প্যানের মূল সেতুটি বিভিন্ন মাপের ৫৫টি টেস্ট পাইলসহ ১০টি পিয়ার, পাইল ও পিয়ার ক্যাপের ওপর নির্মিত। এ ছাড়া ১৬৭টি বক্স গার্ডার সেগমেন্ট রয়েছে এটিতে, যার ফলে দূর থেকে সেতুটিকে ঝুলন্ত মনে হবে। জোয়ারের সময় নদী থেকে সেতুটি ১৮ দশমিক ৩০ মিটার উঁচুতে থাকবে।