নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ে ৬ মাস ও ৫ বছর বয়সী দুই শিশুকে বিষপান করিয়ে মায়ের আত্মহত্যার চেষ্টার খবর পাওয়া গেছে। তবে তিন জনকেই জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
সোনারগাঁও হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল ও পরে সলিমুল্লাহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয় মা শিখা আক্তার, তার ৬ মাস বয়সী শিশু আবু সুফিয়ান ও ৫ বছর বয়সী মেয়ে আয়েশা আক্তারকে।
সোমবার বেলা ১১টার দিকে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও আশারিয়ার চর গ্রামে নিজ বাড়িতে বিষপানের এই ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছেন শিখার জা রহিমা আক্তার।
রহিমা যদিও বলেছেন, তার জা নিজেই বিষপান করেছেন, তার পরেও স্বামী আওলাদ হোসেনের ভূমিকা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
ঢাকা মেডিক্যালে তিনজনকে নিয়ে এলেও আওলাদের অনুপস্থিতির বিষয়টিকে সন্দেহজনক হিসেবে দেখার কথা জানিয়েছেন হাসপাতালে পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ বাচ্চু মিয়া।
আওলাদ নদীতে ড্রেজিংয়ের কাজ করেন।
বাচ্চু মিয়া বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে। হাসপাতলে এত লোকজন এসেছে, কিন্তু তার স্বামী আসেনি কেন? এই বিষয়ে সংশ্লিষ্ট থানাকে অবগত করা হয়েছে।’
জায়ের যে দাবি
শিখার জা রহিমা আক্তার বলেন, ‘আমরা যার যার ঘরে ছিলাম। হঠাৎ দেখি ওই ঘর ভেতর থেকে বিশ্রী গন্ধ আসতেছে। পরে দরজার ফাঁক দিয়ে দেখি দুটি শিশু কান্নাকাটি করতেছে। তাদের মার মুখ দিয়ে লালা বের হচ্ছে এবং আবোল তাবোল বলছে।
‘তখন আমি চিৎকার দেই। পরিবারের লোকজন সবাই একত্র হয়ে দরজা ভেঙে তাদেরকে উদ্ধার করে স্থানীয় সোনারগাঁও হাসপাতাল নিয়ে যাই। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে তাদেরকে ঢাকা মেডিক্যালে নিয়ে আসলে ডাক্তার তাদেরকে স্টমাক ওয়াশ করে মিটফোর্ড হাসপাতালে রেফার করে।’
কী কারণে শিখা এই কাজ করেছেন- জানতে চাইলে রহিমা বলেন, ‘আমার জায়ের কিছু মানসিক সমস্যা আছে। মাঝেমধ্যে নিজের মাথায় নিজে আঘাত করে। কিন্তু এ ধরনের ঘটনা ঘটাবে স্বপ্নেও ভাবতে পারিনি। আল্লাহপাক আজকে আমাদের তিনজনকে জীবন ভিক্ষা দিয়েছেন।’
ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ বাচ্চু মিয়া বলেন, ‘নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও এলাকা থেকে মা ও দুই শিশুকে বিষ পান করিয়ে নিজে বিষপানে আত্মহত্যার চেষ্টা করে। তাদের স্বজনরা উদ্ধার করে তাদের এখানে নিয়ে আসেন। পরে স্টমাক ওয়াশ দিয়ে মিটফোর্ড হাসপাতালে রেফার করা হয়।’