সাম্প্রদায়িক অপতৎপরতা রুখতে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনগুলোকে নির্দেশ দিয়েছেন দলটির সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তার এই নির্দেশের পর কর্মসূচিও ঘোষণা করেছে ক্ষমতাসীন দল।
সিদ্ধান্ত হয়েছে, দলের নেতা-কর্মীরা বিভিন্ন এলাকায় আক্রমণের শিকার ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের পাশে দাঁড়াবেন; জেলায় ও উপজেলা পর্যায়ে শোভাযাত্রা করবেন। ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলো পরিদর্শনে যাবেন কেন্দ্রীয় নেতারা।
সোমবার সন্ধ্যায় ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক জরুরি সভায় এ নির্দেশ দেন বঙ্গবন্ধুকন্যা। সভায় ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যুক্ত ছিলেন দলের সভাপতি।
গত বুধবার দুর্গাপূজা চলাকালে কুমিল্লার একটি মণ্ডপে পবিত্র কোরআন পাওয়াকে কেন্দ্র করে সেই মণ্ডপটি ভাঙচুর করা হয়। এরপর দেশের বিভিন্ন এলাকায় মন্দির, মণ্ডপে চলে হামলা। এর মধ্যে রংপুরে হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়িঘরে আগুনও দেয়া হয়েছে।
সাম্প্রদায়িক এসব হামলার প্রতিবাদও করছেন বহুজন। এমনকি ধর্মীয় অনেক নেতাও সোচ্চার হয়েছেন। তারা বলছেন, যে মুসলমানরা এ ধরনের হামলা করছেন তারাই ইসলামের অবমাননা করছেন।
সরকারও এসব ঘটনায় কঠোর পদক্ষেপ নেয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছে। কয়েক হাজার মানুষের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। গ্রেপ্তারও হয়েছে দুই শতাধিক। তবে এর মধ্যেই গত রাতে রংপুরের পীরগঞ্জের ঘটনাটি নতুন উদ্বেগ তৈরি করেছে।
এই অবস্থায় আওয়ামী লীগরে সভা শেষে সারা দেশে সম্প্রীতি সমাবেশ ও শান্তি শোভাযাত্রা কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয় ২৩ বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে মঙ্গলবার বেলা ১১টায় কেন্দ্রীয়ভাবে এ কর্মসূচি পালন করা হবে।
সভা শেষে এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি জানান, কেন্দ্রীয় কর্মসূচির পাশাপাশি আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনগুলো দেশের সব জেলা, মহানগর, উপজেলায় সম্প্রীতি সমাবেশ ও শান্তি শোভাযাত্রা আয়োজন করবে।
সভায় যেকোনো মূল্যে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির ঐতিহ্য সমুন্নত রাখার জন্য দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী। বলেন, ‘বাংলাদেশ যখন বিশ্বসভায় একটি মর্যাদাশীল রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, ঠিক সে সময়ে একটি চিহ্নিত মহল পরিকল্পিতভাবে দেশে সাম্প্রদায়িক হানাহানি সৃষ্টির পাঁয়তারা চালাচ্ছে।’
সরকার ষড়যন্ত্রকারীদের চিহ্নিত করেছে জানিয়ে সরকারপ্রধান বলেন, ‘ইতিমধ্যে অনেকেই গ্রেপ্তার হয়েছে এবং বাকিদেরও আইনের আওতায় আনার প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। সরকার পরিস্থিতির ওপর সতর্ক দৃষ্টি রাখছে এবং এই ধরনের সন্ত্রাসী ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে।’