কুমিল্লাসহ দেশের কয়েকটি জেলার বিভিন্ন পূজামণ্ডপে সাম্প্রদায়িক হামলার বিচারের দাবিতে মাগুরা সদরে সমাবেশ করেছে গণকমিটি।
মাগুরা সদরের চৌরঙ্গী মোড়ে জেলা প্রেস ক্লাবের সামনে এ সমাবেশ করে গণকমিটি, মাগুরা জেলা।
এ সময় চাল, ডাল, তেলসহ নিত্যপণ্যের দাম কমানোর দাবিও করা হয়।
সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন গণকমিটির আহ্বায়ক এটিএম মহব্বত আলী এবং পরিচালনা করেন সদস্যসচিব প্রকৌশলী শম্পা বসু।
শম্পা বসু বলেন, ‘কুমিল্লায় কোরআনের অবমাননা করার অজুহাতে পূজামণ্ডপে হামলা করা হয়েছে। এ ঘটনার জেরে চাঁদপুরের হাজিগঞ্জে তৌহিদী জনতার নামে মিছিল করে মণ্ডপে হামলা এবং ভাঙচুর করা হয়েছে। ঘটেছে হতাহতের ঘটনা। হাতিয়া এবং বাঁশখালীসহ সারা দেশের বিভিন্ন স্থানে হামলার ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনাগুলো পূর্বপরিকল্পিত এবং রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।’
তিনি আরও বলেন, ‘অতীতে কক্সবাজারের রামু, পাবনার সাঁথিয়া, রংপুর, সুনামগঞ্জের শাল্লাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন সময়ে ফেসবুকে ও নানা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে গুজব ছড়িয়ে ধর্মীয় ও জাতিগত নিপীড়ন ও হামলার ঘটনা ঘটানো হয়েছে। বর্তমান সরকার সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষের জান-মাল রক্ষা ও ধর্ম পালনের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে ব্যর্থ। কুমিল্লা-হাজীগঞ্জের ঘটনাই তার সর্বশেষ প্রমাণ।’
নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দামের বিষয়ে প্রকৌশলী শম্পা বসু বলেন, ‘এক বছরে কোনো পণ্যের দাম ২-৩ শতাংশ বাড়লে তা মেনে নেয়া যায়। কিন্তু এক বা তিন সপ্তাহের মধ্যে ২০-২৫ শতাংশ দাম বাড়লে তাকে কোনোভাবে স্বাভাবিক বলা যায় না।
‘এই অস্বাভাবিক বাজার পরিস্থিতি যারা তৈরি করছে, তারা সব সময় ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে যাচ্ছে। এই সিন্ডিকেট ভেঙে দেয়ার জন্য বাজার তদারক ব্যবস্থা জোরদার করা প্রয়োজন। বাজারে পণ্যের সরবরাহ ঠিক রাখতে টিসিবির মাধ্যমে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের জোগান নিশ্চিত করার দাবি জানাচ্ছি আমরা।’
গণকমিটির আহ্বায়ক এটিএম মহব্বত আলী বলেন, ‘বাজারে এক কেজি মোটা চালের দাম ৫২ টাকা। এক লিটার সয়াবিন তেলের দাম ১৫০ টাকা। কিছুদিন আগেও এক কেজি ব্রয়লার মুরগি ১২০ টাকায় কেনা যেত, এখন সেটা ১৭৫ টাকা। সাধারণ মানুষের প্রতিদিন যা দরকার তার প্রায় সবকিছুরই দাম বাড়ছে। চাল, আটা, ময়দা, সয়াবিন তেল, মসুর ডাল, চিনি, পেঁয়াজ, মুরগি, ডিমসহ বিভিন্ন পণ্যের দাম বেড়েছে এবং বেড়েই চলেছে। বিশ্ব বাজারের অজুহাতে এলপিজি গ্যাসের ১২ কেজির সিলিন্ডারের দাম গত চার মাসে চারবার বাড়িয়ে এখন নির্ধারণ করা হয়েছে ১২৫৯ টাকা।’
সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন গণকমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক কাজী ফিরোজ, বিশিষ্ট বামপন্থি নেতা নিখিল রঞ্জন মিত্র, গণকমিটির সদস্য বাহারুল হায়দার বাচ্চুসহ অনেকে।
বক্তারা দেশের বিভিন্ন জেলায় ঘটে যাওয়া সাম্প্রদায়িক হামলার ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে দোষীদের অবিলম্বে গ্রেপ্তারের দাবি জানান। একই সঙ্গে ধর্মান্ধ-সাম্প্রদায়িক অপশক্তি ও শাসকশ্রেণির সকল ষড়যন্ত্র-চক্রান্তের বিরুদ্ধে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষা, দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি রোধ ও গণতন্ত্র-ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য সব দল-ব্যক্তি-গোষ্ঠীকে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানান।