বরিশালের গৌরনদীতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকের একটি পোস্টে ‘আপত্তিকর’ কমেন্ট করার জেরে হিন্দুদের তিনটি মন্দির ও কিছু বসতঘর ভাঙচুর করা হয়েছে।
উপজেলার বার্থী ইউনিয়নের ধুরিয়াইল কাজিরপাড় গ্রামে শুক্রবার রাত সাড়ে নয়টার দিকে এসব হামলা হয়।
এ ঘটনায় ফেসবুকে কমেন্টকারী যুবক মহানন্দ বৈদ্যকে আটক করে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে স্থানীয় লোকজন।
আটক মহানন্দ বৈদ্য কাজিরপাড় গ্রামের বাসিন্দা।
গৌরনদী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আফজাল হোসেন নিউজবাংলাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
স্থানীয়দের বরাত দিয়ে তিনি জানান, পবিত্র কোরআন নিয়ে ফেসবুকের একটি পোস্টে ‘আপত্তিকর’ কমেন্ট করেন মহানন্দ। শুক্রবার সন্ধ্যার পর বিষয়টি স্থানীয় কিছু মুসলমানের নজরে এলে মুহূর্তের মধ্যে তা ভাইরাল হয়ে যায়। একপর্যায়ে স্থানীয় মুসলিমরা মহানন্দকে আটক করে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে।
পরে ওই রাতেই স্থানীয় কয়েকজন মিলে ধুরিয়াইল কাজিরপাড় সার্বজনীন দুর্গা মন্দির, হরি মন্দির এবং জগদীশ বৈদ্যর বাড়ির হরি মন্দিরে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাঙচুর করে। এ সময় ওই এলাকার হিন্দুদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
ধুরিয়াইল কাজিরপাড় সার্বজনীন দুর্গা মন্দির কমিটির সাধারণ সম্পাদক সুভাষ বৈদ্য জানান, কোনো কিছু বুঝে ওঠার আগেই শুক্রবার রাত সাড়ে নয়টার দিকে একদল উত্তেজিত জনতা লাঠি নিয়ে হামলা চালিয়ে মন্দিরের আসবাবপত্র ভাঙচুর করে। এ সময় নারী-পুরুষ ও শিশুদের মধ্যে চরম আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
স্থানীয় বাসিন্দা প্রশান্ত বালা জানান, দীর্ঘদিন থেকে তারা মুসলমানদের সঙ্গে বসবাস করে আসছেন। কোরআন শরিফ নিয়ে ফেসবুকের একটি পোস্টে আপত্তিকর মন্তব্যকে কেন্দ্র করে তাদের ওপর হামলা হয়েছে।
প্রশান্ত বলেন, মন্তব্যকারী যে সম্প্রদায়েরই হোক, তাকে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে।
গৌরনদী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আফজাল হোসেন জানান, ফেসবুকে একটি পোস্ট দেয়াকে কেন্দ্র করে স্থানীয় জনতা উত্তেজিত হয়ে যায়। হামলাকারীরা হিন্দু সম্প্রদায়ের কয়েকটি বাড়িতে হামলা চালালেও মন্দিরের প্রতিমা ভাঙচুরের বিষয়টি সঠিক নয়। কারণ এর আগেই প্রতিমা বিসর্জন করা হয়েছিল। বিষয়টি তদন্ত করে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।