চট্টগ্রামের পাঁচলাইশে এক নারী ও তার দুই শিশু সন্তানের মৃত্যুর ঘটনায় ওই নারীর স্বামীকে গ্রেপ্তার দেখিয়েছে পুলিশ।
মৃত সুমিতা খাতুনের স্বামী সোহেল রানার বিরুদ্ধে পাঁচলাইশ থানায় শুক্রবার রাত ১টার দিকে মামলা হয়।
সুমিতার ফুপা শামসুল ইসলাম আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগে মামলাটি করেন। ওই মামলায় পুলিশের হেফাজতে থাকা সোহেলকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়।
শনিবার বেলা ১১টার দিকে নিউজবাংলাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন পাঁচলাইশ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সাদেকুর রহমান।
পরিদর্শক সাদেকুর নিউজবাংলাকে বলেন, ‘মরদেহ উদ্ধারের পরই সোহেলকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়। তিনি আমাদের হেফাজতেই ছিলেন। মামলার পর তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।
‘এখন পর্যন্ত যেটা জানতে পেরেছি, টাকা-পয়সা বিষয়ক কিছু ব্যাপার নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে কলহ চলছিল। এই কলহ থেকেই সন্তান নিয়ে আত্মহত্যা করে থাকতে পারেন সুমিতা।’
পাঁচলাইশের মোহাম্মদপুর এলাকার একটি ভবনের চতুর্থ তলার ফ্ল্যাট থেকে বৃহস্পতিবার ভোর ৫টার দিকে সুমিতা, তার সাত বছরের মেয়ে জান্নাত মুন ও আড়াই বছরের ছেলে শানের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
- আরও পড়ুন: ঘরে মা ও দুই সন্তানের মরদেহ
পাঁচলাইশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহেদুল কবির জানান, ভোর ৫টার দিকে খবর আসে ওই ফ্ল্যাটের দরজা সারা রাত ভেতর থেকে বন্ধ। গৃহকর্তা সোহেল রানা ঘরে ঢুকতে পারেননি রাতভর। সন্দেহ হওয়ায় তিনি বিষয়টি পুলিশকে জানান।
ভোরে গিয়ে দরজা ভেঙে ঘরে ঢুকে মরদেহগুলো দেখতে পায় পুলিশ। এর মধ্যে সুমিতা ও শিশু শানের মরদেহ ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া যায়। বিছানায় পড়ে ছিল জান্নাতের নিথর দেহ।
ওইদিন গৃহকর্তা সোহেল নিউজবাংলাকে জানান, বৃহস্পতিবার রাত ৯টার দিকে তিনি কাজ শেষে ফিরে দেখেন, দরজা ভেতর থেকে বন্ধ। ডাকাডাকি করে সাড়া না পেয়ে তিনি আত্মীয়-প্রতিবেশীদের খবর দেন। সারা রাত ধরে সবাই চেষ্টা করেও ভেতর থেকে সাড়া পাননি। এরপর পুলিশে খবর দেয়ার সিদ্ধান্ত নেন।
পুলিশ ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) পুলিশ সুপার (এসপি) নাঈমা সুলতানা নিউজবাংলাকে ঘটনার দিন বলেন, ‘ধারণা করছি, শ্বাসরোধে প্রথমে ছেলেকে হত্যা করা হয়। তারপর মেয়েকে ফ্যানের সঙ্গে ঝুলিয়ে হত্যার পর নিজে আত্মহত্যা করেন মা।’
ফ্ল্যাটের ওপর তলার বাসিন্দা আব্বাস উদ্দিন নিউজবাংলাকে জানান, ওই দম্পতির মধ্যে প্রায়ই ঝগড়া হতো। তারা ওপর থেকে চিৎকার শুনতেন। তবে বৃহস্পতিবার রাতে ওই ফ্ল্যাট থেকে কোনো শব্দ পাওয়া যায়নি।
পাঁচলাইশ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সাদেকুর রহমান জানান, দুপুরে সোহেল রানাকে চট্টগ্রাম মহানগর হাকিম আদালতে পাঠানো হবে।