শারদীয় দুর্গোৎসবের মধ্যে কুমিল্লায় ঘটে যাওয়া অপ্রীতিকর ঘটনার তিন দিন পার হলেও ধরা পড়েনি সহিংসতায় জড়িতরা।
তাদের ধরতে একযোগে অভিযান চালাচ্ছে পুলিশের বেশ কয়েকটি ইউনিট।
পুলিশ জানায়, বুধবার থেকেই কুমিল্লায় অ্যান্টি টেররিজম ইউনিটের একটি দল কাজ করছে। শিগগিরই ধরা পড়বে ঘটনায় জড়িতরা।
এদিকে পবিত্র কোরআন অবমাননার অভিযোগ ও প্রতিমা ভাঙচুরের ঘটনায় পুলিশ ও র্যাবের অভিযানে চার মামলায় এখন পর্যন্ত ৪০ জনকে পাঠানো হয়েছে কারাগারে।
সহিংসতার ঘটনার সঙ্গে জড়িত অন্যদের ধরতে জেলা পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি), র্যাব, পুলিশ ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) অভিযান চলছে।
কুমিল্লা কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনওয়ারুল আজিম বলেন, ‘পবিত্র কোরআন অবমাননা ও প্রতিমা ভাঙচুরের ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে চারটি মামলা করেছে। এর মধ্যে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত ও ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে দুটি মামলা হয়েছে। অন্য দুটি মামলা বিশেষ ক্ষমতা আইনে।’
তিনি আরও বলেন, ‘ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে গ্রেপ্তার করা হয়েছে ফয়েজ আহমেদ নামের এক ব্যক্তিকে। তিনি মোবাইলে ভিডিও ধারণ ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে লাইভ শেয়ার করেন, যা মুহূর্তে ভাইরাল হয়ে যায়। পরে এ নিয়ে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।
‘বিশেষ ক্ষমতা আইনে দুটি মামলার একটিতে ১৭ জন ও আরেকটি মামলায় ২১ জনকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। মোট ৪১ জনকে আটক করা হলেও যাচাই-বাছাই শেষে দুজনকে ছেড়ে দেয়া হয়।’
- আরও পড়ুন: কুমিল্লায় হিন্দু-মুসলমান সবাই ব্যথিত
ওসি নিউজবাংলাকে জানান, ফেসবুকে গুজব ছড়ানোর অভিযোগে বৃহস্পতিবার রাতে গোলাম মাওলা নামের এক যুবককে গ্রেপ্তার করে র্যাব। ওই যুবক সংঘর্ষস্থলে এসে ছবি সংগ্রহ করেন। পরে ছবিগুলো এডিট করে ফেসবুকে শেয়ার করেন। গ্রেপ্তার ওই যুবককেও কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেয় আদালত।
জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) ফারুক আহমেদ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘পুলিশের বেশ কয়েকটি ইউনিট একযোগে কাজ করছে। অভিযান চলছে। আমরা সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে কাজ করছি। ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেপ্তার করা হবেই।’
কুমিল্লার জেলা প্রশাসক (ডিসি) কামরুল হাসান বলেন, ‘বুধবারের ঘটনার তিন সদস্যের একটি তদন্ত টিম গঠন করা হয়েছে। তারা আগামী সোমবার তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেবেন। আমরা প্রতিটা বিষয়ে গুরুত্ব দিচ্ছি।’
কুমিল্লা নগরীর নানুয়ার দিঘীর উত্তরপাড়ের একটি পূজামণ্ডপে পবিত্র কোরআন শরিফ পাওয়ার অভিযোগ তোলার পর বিচ্ছিন্ন সহিংসতায় শহরে ছড়িয়ে পড়ে উত্তেজনা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে মোতায়েন করা হয় পুলিশ, র্যাব ও বিজিবির বিপুল সদস্য।
আলোচিত মণ্ডপে পূজার আয়োজকেরা জানান, সেখানে পবিত্র কোরআন শরিফ কী করে এলো সে বিষয়ে তাদের কোনো ধারণা নেই। বুধবার সকালে বিষয়টি পূজারিদের নজরে আসে। এর আগে গভীর রাত পর্যন্ত পূজা উদ্যাপন শেষে মণ্ডপটি জনশূন্য ছিল।