রংপুরে একটি টিনসেড ঘর থেকে উদ্ধার হওয়া প্রায় সাড়ে তিন কোটি টাকা দামের গাড়ির মালিককে তিন দিন ধরে খুঁজছে পুলিশ।
শহরের ধাপ পপুলার ডায়াগস্টিক সেন্টারের গ্যারেজের পাশের ওই এলাকা থেকে টয়োটো কোম্পানির ‘জাগুয়ার এক্স’ স্পোর্টস কারটি (নম্বর চট্রো মেট্রো ভ-১১-০০৩৯) উদ্ধার করে পুলিশ।
গত বুধবার মধ্যরাতে পুলিশ গাড়িটি উদ্ধার করলেও মালিককে খুঁজে পায়নি। গাড়িটি উদ্ধার করে থানায় রেখেছে পুলিশ।
লুৎফে আলী রনি নামে এক চিকিৎসকসহ দুইজনকে আসামি করে চোরাই পণ্য কেনাবেচা-সংক্রান্ত একটি মামলাও দিয়েছে পুলিশ।
মামলার বাদী মেট্রোপলিটন কোতোয়ালি থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মাহমুদুল হাসান।
তিনি বলেন, ‘যে জায়গাটিতে গাড়িটি ছিল সেটি এক সময় ছিল লুৎফে আলম রনির। পরে জায়গাটি বিক্রি করে দেয় তারা। জমিটি কেনে পপুলার ডায়াগনোস্টিট সেন্টারের মালিক মোস্তাফিজুর রহমান।
‘কিন্তু গাড়িটির মালিকানা কেউই দাবি করছে না। যেহেতু জায়গাটিতে রনি অবস্থান করছিলেন তাই আমরা তার নামে মামলা দিয়েছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘গাড়িটি অনেকদিন ধরেই পড়ে ছিল। গাড়ি স্টার্ট নেয় না। স্থানীয় মেকার ডেকে এনেছি, তারাও পায়নি। ফলে রেকার দিয়ে গাড়িটি থানায় নেয়া হয়েছে। এখন আমাদের হেফাজতে রয়েছে।’
স্থানীয় মুশফিকুর রহমান জানান, ‘অনেকদিন ধরে গাড়িটি ওখানে পড়ে আছে। কেউ খোঁজ নেয় না, আর আমরা জানিও না গাড়িটি কার। কারণ ওখানে সবাই যেতে পারে না। ওখানে বড়লোকদের কারবার। অল্প কিছু মানুষ যাতায়াত করত।’
তবে গাড়ির বিষয়ে কিছুই জানেন না বলে দাবি লুৎফে আলম রনির।
রনি বলেন, ‘পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মালিক মোস্তাফিজুর রহমানের কাছে জমি বিক্রির টাকা পাই। এখন ওনার সীমানা প্রাচীরের ভেতরে আমার জমি রয়েছে। আমার জমি দখল করে রেখেছেন ওনি।
‘পপুলার ডায়াগনস্টিকের মালিকের সঙ্গে জমি নিয়ে চুক্তি হয়েছে। কিন্তু টাকা দিতে ১৩ দিন ধরে বসিয়ে রেখেছে। গাড়ির মামলা কেন দিল তাও জানি না। আমি চাই সুষ্ঠু তদন্ত হোক।’
পপুলার ডায়াগনোস্টিক সেন্টারের মালিক মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘জায়গাটি আমার কেনা। রনি জায়গা ছাড়ছিল না। আমরা থানায় অভিযোগ করার পর পুলিশ এসে গাড়িটি একটি রুমে তালাবদ্ধ অবস্থায় দেখতে পায়। যারা জায়গা দখল করে রেখেছে তারাই হয়তো গাড়িটি রেখেছে। গাড়ি আমাদের না।’
জমিটি বিক্রির পর সবাই জায়গা ছেড়ে চলে যায় কিন্তু রনি সেখান থেকে যায়নি। ফলে মোস্তাফিজুর রহমান গত ১০ অক্টোবর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেন। ওই অভিযোগের ভিত্তিতে আমরা গত বুধবার রাতে ঘটনাস্থলে যাই । এরপর সেখানে গাড়িটি তালাবদ্ধ একটি ঘরে দেখতে পাই।
মেট্রোপলিটন পুলিশের সহকারী কমিশনার (ডিবি অ্যান্ড মিডিয়া) সাজ্জাদ হোসেন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘গাড়ি উদ্ধারের পর মামলা হয়েছে। লুৎফে আলম রনি ও মোস্তাফিজার রহমান দুজনই গাড়ির মালিক নন বলে দাবি করেছেন। বিআরটিএর মাধ্যমে প্রকৃত মালিককে খুঁজতে মাঠে কাজ করছে পুলিশ।’
তিনি বলেন, ‘রংপুরে গাড়িটি কীভাবে এল, তা কেউ বলতে পারছে না। এ বিষয়েও তদন্ত চলছে।’