বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

কুমিল্লার ঘটনায় ‘অপপ্রচারকারী’ আটক

  •    
  • ১৪ অক্টোবর, ২০২১ ২২:৫১

সাইবার মনিটরিংয়ের মাধ্যমে গোলাম মাওলাকে সনাক্ত করে আটক করেছে র‌্যাব।

কুমিল্লায় পুজা মণ্ডপের ঘটনাকে কেন্দ্র করে অপপ্রচার চালানোর অভিযোগে একজনকে আটক করেছে র‌্যাব। গোলাম মাওলা নামে ওই ব্যক্তিকে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় কুমিল্লা থেকে আটক করা হয়।

র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার সহকারি পরিচালক আ ন ম ইমরান খান এ তথ্য জানিয়েছেন।

গোলাম মাওলার বিরুদ্ধে অভিযোগ, কুমিল্লা পুজা মণ্ডপের ঘটনাকে কেন্দ্র করে তিনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অপপ্রচার করে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করেছেন। যা সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করছে।

সাইবার মনিটরিংয়ের মাধ্যমে গোলাম মাওলাকে সনাক্ত করে আটক করেছে র‌্যাব।

ইমরান খান জানান, কুমিল্লায় অভিযুক্ত গোলাম মাওলার বিরুদ্ধে মামলার প্রস্তুতি চলছে।

এর আগে কুমিল্লা নগরীর একটি পূজামণ্ডপে পবিত্র কোরআন শরিফ পাওয়ার অভিযোগ তুলে ফেসবুকে লাইভ করা ফয়েজ আহমেদকে আটক করে পুলিশ। এ ছাড়া শহরজুড়ে বিভিন্ন মণ্ডপে ভাঙচুরের ঘটনায় আটক হন আরও ৪২ জন।

চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি আনোয়ার হোসেনসহ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বৃহস্পতিবার সকালে নগরীর নানুয়ার দীঘির পাড়ের আলোচিত মণ্ডপ এলাকা পরিদর্শন করেন।

এ সময় পুলিশ কর্মকর্তারা জানান, মণ্ডপে কোরআন শরিফ পাওয়া গেছে, এমন তথ্য দিয়ে বুধবার সকালে ফেসবুকে লাইভ করেন ফয়েজ আহমেদ। এরপর দ্রুত সেটি ভাইরাল হয়, ছড়িয়ে পড়ে উত্তেজনা।

ডিআইজি আনোয়ার সাংবাদিকদের জানান, পুরো ঘটনাটি গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে। শহরে (বুধবার) যেখানে যা হয়েছে, সব কিছু খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এসব ঘটনায় মামলা প্রক্রিয়াধীন।

ডিআইজি বলেন, ‘এ ঘটনার পরই দেশের বিভিন্ন এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। ভিডিও দেখলে বোঝা যায়, একটি স্পষ্ট উদ্দেশ্য নিয়ে এ ঘটনা ঘটিয়েছে দুর্বৃত্তরা। বিশেষভাবে ঘটনাস্থল থেকে যে লোক (ফয়েজ) ভিডিও করে ছড়িয়ে দিয়েছে, তাকে আটক করা হয়েছে। সে কোনো দলের কর্মী কি না তাও যাচাই করা হচ্ছে।’

জাতীয় সংসদের হুইপ ও কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাইদ আল মাহমুদ স্বপনও এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

তিনি বলেন, ‘বিভিন্ন ধর্মের মানুষ তাদের নিজ ধর্ম পালন করছে। হঠাৎ করে দেশকে অস্থিতিশীল করার জন্য দেশবিরোধী কোনো একটি নির্দিষ্ট পক্ষ পবিত্র কোরআনকে সামনে এনে দেশকে পিছিয়ে দিচ্ছে।

‘হিন্দু ধর্মের ভাই-বোনেরা পূজা উদযাপন করছিলেন। রাতে পবিত্র কোরআনকে টেনে এনে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করা হয়েছে। আমরা ঢাকা থেকে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের টিম এসেছি। চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি এসেছেন। বিষয়টি আমরা সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে দেখছি। ইতিমধ্যে বেশ কয়েকজনকে আটক করা হয়েছে।’

বৃহস্পতিবার সকালে এলাকা পরিদর্শন করেন অ্যান্টি টেররিজম ইউনিটের দুজন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, কুমিল্লা পিবিআই ও সিআইডির বেশ কয়েকটি ইউনিটের কর্মকর্তারা। তারা বিভিন্ন আলামত সংগ্রহ করেন।

নগরীজুড়ে বৃহস্পতিবারও টহল দিচ্ছে বিজিবির দুই প্লাটুন সদস্য। গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

হামলা ও ভাঙচুরের প্রতিবাদে নগরীর সব পূজামণ্ডপে কালো পতাকা উত্তোলন করা হয়েছে।

নগর পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অচিন্ত্য দাশ টিটু নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমরা নগরীসহ জেলার সব মণ্ডপে কালো পতাকা উত্তোলন করেছি। দশমীর পর প্রতিমা বিসর্জনের পরে পতাকা নামানো হবে। আমরা চাই যারা এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত তারা যে ধর্মেরই হোক, তাদের আটক ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি।’

ঘটনা তদন্তে বুধবারই তিন সদস্য কমিটি গঠন করে জেলা প্রশাসন। কমিটিকে সোমবার প্রতিবেদন জমার নির্দেশ দিয়েছেন জেলা প্রশাসক (ডিসি) কামরুল হাসান।

নগরীর নানুয়ার দিঘীর উত্তরপারের অস্থায়ী পূজামণ্ডপে কোরআন শরিফ পাওয়ার অভিযোগ তোলার পর বুধবার সকাল থেকে শহরে ছড়িয়ে পড়ে উত্তেজনা।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে মোতায়েন করা হয় পুলিশ, র‌্যাব ও বিজিবির বিপুলসংখ্যক সদস্য। তবে আলোচিত মণ্ডপের পূজার আয়োজকরা বলছেন, সেখানে পবিত্র কোরআন শরিফ কী করে এলো সে বিষয়ে তাদের কোনো ধারণা নেই।

বুধবার সকালে বিষয়টি পূজারিদের নজরে আসে। এর আগে গভীর রাত পর্যন্ত পূজা উদযাপন শেষে মণ্ডপটি জনশূন্য ছিল।

পূজার আয়োজক দর্পণ সংঘের সভাপতি সুবোধ রায় জানান, কম বাজেটের মণ্ডপ বলে সিসি ক্যামেরা বসানো হয়নি।

কুমিল্লার ঘটনার পর বুধবার রাত থেকে দেশের বিভিন্ন স্থানে পূজামণ্ডপের নিরাপত্তা জোরদার করা হয়। কয়েক জায়গায় মোতায়েন করা হয়েছে বিজিবি। চাঁদপুরের একটি উপজেলায় ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে।

এ পরিস্থিতির মধ্যে এক জরুরি ঘোষণায় সবাইকে সচেতন থাকার অনুরোধ জানিয়েছে ধর্ম মন্ত্রণালয়।

ঘোষণায় বলা হয়, ‘ধর্মীয় সম্প্রীতি বিনষ্ট করার উদ্দেশ্যে যে কেউ এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকুক, তাদের অবশ্যই আইনের আওতায় এনে উপযুক্ত শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে। তবে এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে কেউ আইন হাতে তুলে নেবেন না। সবাইকে ধর্মীয় সম্প্রীতি ও শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য অনুরোধ করা হলো।’

ক্ষমতাসীন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের জড়িতদের শাস্তি নিশ্চিত করার কথা উল্লেখ করে বলেছেন, কুমিল্লার ঘটনা সাম্প্রদায়িক অপশক্তির কাজ।

এ বিভাগের আরো খবর