ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের অভিযোগে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনে করা মামলায় লেখক তসলিমা নাসরিন, উইমেন চ্যাপ্টার সম্পাদক সুপ্রীতি ধর ও ওয়েবসাইটটির সহসম্পাদক সুচিস্মিতা সিমন্তির নামে অভিযোগপত্র দিয়েছে পুলিশের কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিট।
গত ৩ অক্টোবর ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম (সিএমএম) আদালতে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও সিটিটিসির পরিদর্শক নাজমুল নিশাত এ অভিযোগপত্র দেন।
আদালতে শাহজাহানপুর থানার সাধারণ নিবন্ধন শাখার কর্মকর্তা ও উপপরিদর্শক (এসআই) মোতালেব হোসেন বৃহস্পতিবার নিউজবাংলাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
নাম-ঠিকানা সংগ্রহ করতে না পারায় উইমেন চ্যাপ্টারের উপদেষ্টা লীনা হককে অব্যাহতির সুপারিশ করেছেন তদন্ত কর্মকর্তা।
অভিযোগপত্রে তসলিমাসহ তিন আসামিকে পলাতক বলে তাদের বিরুদ্ধে ইন্টারপোলের মাধ্যমে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির আবেদন করা হয়েছে।
২০১৮ সালের ১৯ এপ্রিল ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনালে মাসিক পত্রিকা আল বাইয়্যিনাত সম্পাদক ও রাজারবাগ দরবার শরিফের পির দিল্লুর রহমানের অনুসারী আল্লামা মুহম্মদ মাহবুব আলম বাদী হয়ে তসলিমাসহ চারজনের নামে মামলা করেন। আদালত শাহজাহানপুর থানাকে মামলাটি এজাহার হিসেবে নথিভুক্তের নির্দেশ দেয়।
আদালতের নির্দেশে ওই বছরের ২৬ এপ্রিল শাহজাহানপুর থানায় মামলাটি নথিভুক্ত করা হয়।
রাজারবাগ পির দিল্লুর রহমানের প্রতিষ্ঠা করা ধর্মীয় সংগঠন আঞ্জুমানে আল বাইয়্যিনাত। ২০০০ সাল থেকে এই সংগঠনের বিরুদ্ধে উগ্রবাদী তৎপরতার অভিযোগ রয়েছে।
জঙ্গিবাদে জড়িত থাকার অভিযোগে ২০০৯ সালে ১২টি ধর্মভিত্তিক সংগঠনকে কালো তালিকাভুক্ত করে সরকার। এগুলোর মধ্যে অন্যতম আঞ্জুমানে আল বাইয়্যিনাত।
দিল্লুর রহমানের নিজস্ব পত্রিকা দৈনিক আল ইহসান ও মাসিক পত্রিকা আল বাইয়্যিনাতে গণতন্ত্র, নির্বাচন, জাতীয় সংগীত, বৈশাখী উৎসব, খেলাধুলার মতো বিষয়ে নেতিবাচক মতামত প্রকাশের অভিযোগ রয়েছে।
আরও পড়ুন: রাজারবাগ পির দিল্লুরের কীভাবে উত্থান
পিরের অনুসারীর করা মামলার অভিযোগে বলা হয়, উইমেন চ্যাপ্টারের মাধ্যমে সুপ্রীতি ধর, সুচিস্মিতা সিমন্তি ও লীনা হকরা প্রায়ই পবিত্র ইসলামের বিরুদ্ধে বিদ্বেষমূলক লেখা প্রকাশ করেন। তারই ধারাবাহিকতায় ২০১৮ সালের ১৭ এপ্রিল বিকেলে তসলিমা নাসরিনের ‘ধর্ষকের কাছে নারীর কোনো ধর্ম নেই’ শীর্ষক একটি নিবন্ধ প্রকাশ হয়।
ওই নিবন্ধে তসলিমার বক্তব্যে দ্বীনি অনুভূতিতে আঘাত লাগে বলে অভিযোগ করেন বাদী।