বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

‘পারিবারিক কলহে’ ৩ খুন

  •    
  • ১৪ অক্টোবর, ২০২১ ১২:৪৫

নিহত দম্পতির ছোট ছেলে আলতাফ হোসেন সকালে ঘটনাস্থলে যান। তিনি পুলিশকে জানান, ভোর রাতের দিকে বড় ভাই সাদ্দাম তাকে ফোন করে জানান, বাসায় ডাকাত এসেছে, তিনি যেন দ্রুত আসেন। তিনি গিয়ে দেখেন, ভাই-ভাবির কিছুই হয়নি। বাবা-মা ও মেজো ভাইকে ঘুমের মধ্যেই কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে।

চট্টগ্রামের মীরসরাইয়ের জোরারগঞ্জের মধ্যম সোনাপাহাড় এলাকায় মুদির দোকান আছে মোস্তফা সৌদাগরের। স্ত্রী, তিন ছেলে ও এক মেয়ে নিয়ে তার‌ পরিবার। মধ্যম সোনাপাহাড়ে বাড়িও আছে।

মেয়ে জুলেখা বেগম থাকেন শ্বশুরবাড়ি দক্ষিণ সোনাপাহাড়ে।

ছেলেদের মধ্যে বড় সাদ্দাম হোসেন থাকেন চট্টগ্রাম নগরীতে। সেখানে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কাজ করেন। ছোট ছেলে আলতাফ হোসেন স্ত্রীকে নিয়ে থাকেন মীরসরাইয়ের বারৈয়ারাহাটে। সেখানে একটি মাছের আড়তে কাজ করেন তিনি।

মীরসরাইয়ের জোরারগঞ্জের বাসায় মোস্তফা ও তার স্ত্রী জোসনারা বেগমের সঙ্গে থাকেন বড় ছেলের বউ আইনুন নাহার ও মেজো ছেলে আহমদ হোসেন। বাড়িতে নিয়মিত আসা-যাওয়া করতেন সাদ্দাম।

এই বাড়ি থেকে বৃহস্পতিবার ভোরে হট্টগোল শুনতে পান প্রতিবেশীরা। তারা জানান, ভোর ৫টার দিকে বাড়ির ছাদ থেকে সাদ্দামকে চিৎকার করে বলতে শোনা যায়, ‘ডাকাত এসেছে ঘরে’। তবে প্রতিবেশীরা গিয়ে দেখে বাড়ির দরজা ভেতর থেকে বন্ধ। এরপর তারা পুলিশে খবর দেয়।

পুলিশ গিয়ে দেখে, বাড়ির ভেতর পড়ে আছে মোস্তফা, জোসনারা ও হোসেনের রক্তাক্ত মরদেহ। বাড়িতেই অক্ষত অবস্থায় পাওয়া যায় সাদ্দাম ও তার স্ত্রী আইনুন নাহারকে।

জোরারগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নূর হোসেন মামুন নিউজবাংলাকে জানান, তিনজনকেই কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে।

সকালে বাড়িতে আসেন মোস্তফার ছোট ছেলে আলতাফ হোসেন। তিনি পুলিশকে জানান, ভোর রাতের দিকে সাদ্দাম তাকে ফোন করে জানান, বাসায় ডাকাত এসেছে, তিনি যেন দ্রুত আসেন।

তিনি এসে দেখেন, ভাই-ভাবির কিছুই হয়নি। বাবা-মা ও মেজো ভাইকে ঘুমের মধ্যেই কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে।

ঘটনা জানতে চাইলে সাদ্দাম তাকে ও পুলিশকে জানান, মাঝরাতে তিনজন লোক বাড়িতে ঢোকে। এর মধ্যে দুজন লোক তাকে ও তার স্ত্রীকে জিম্মি করে ঘুমিয়ে থাকা বাবা-মা-ভাইকে কুপিয়ে পালিয়ে যায়।

ওসি নূর হোসেন নিউজবাংলাকে জানান, সাদ্দামের স্ত্রী আইনুন নাহার পাঁচ-ছয় মাসের অন্তঃসত্ত্বা। কী ঘটেছিল প্রশ্ন করা হলে তিনি ঘুমের ঘোরে ছিলেন, তাই কিছু বুঝতে পারেননি বলে দাবি করেন।

ওসি বলেন, আশপাশের লোকজন ও নিহত দম্পতির ছোট ছেলের সঙ্গে কথা বলে ধারণা করা হচ্ছে, তিন খুনের ঘটনায় সাদ্দাম ও আইনুন জড়িত। পারিবারিক বিরোধের জেরে এ ঘটনা ঘটেছে।

ওসি জানান, আইনুন অন্তঃসত্ত্বা হওয়ায় তাকে বাড়িতেই পুলিশ হেফাজতে রাখা হয়েছে। সাদ্দামকে থানায় নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।

সাদ্দামের মামাতো ভাই সোহেল রানার বাড়ি ঘটনাস্থলের কাছেই। খবর পেয়ে তিনিও সকাল থেকে সেখানে আছেন।

নিউজবাংলাকে তিনি জানান, এই পরিবারের মধ্যে অনেক দিন ধরেই কলহ চলছিল। সাদ্দামের শ্যালিকাকে বিয়ে করেছেন ছোট ভাই আলতাফ। সেটি বাবা-মা মেনে নেয়নি। এ কারণে স্ত্রীকে নিয়ে আলাদা থাকতেন আলতাফ। আর ঘরেও পুত্রবধূ আইনুনের সঙ্গে নানা কারণে কলহ লেগে থাকত মোস্তফা ও জোসনারার।

এসবের কারণে সাদ্দাম হত্যায় জড়িত থাকতে পারে বলে ধারণা সোহেলেরও।

ঘটনাস্থল পরিদর্শনে গেছেন পুলিশ ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) ও জেলা পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) সদস্যরা।

সেখান থেকে আলামত সংগ্রহ শেষে মরদেহগুলো ময়নাতদন্তের জন্য চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হবে বলে জানিয়েছেন ওসি নূর।

এ বিভাগের আরো খবর