সংস্কারে ধীরগতির কারণে পর্যটন নগরী কক্সবাজারের প্রধান সড়ক ব্যবহারে প্রতিদিন দুর্ভোগে পড়ছে মানুষ।
খানাখন্দে ভরা রাস্তায় চলাচলের অসুবিধা ছিল আগেও। তবে সংস্কার কাজের কারণে বেড়ে গেছে ভোগান্তি।
কর্তৃপক্ষ বলছে, এই দুর্ভোগ সাময়িক, কাজ শেষে যানজটমুক্ত সড়ক পাবে মানুষ।
কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা যায়, শহরের পিটিআই স্কুল থেকে হলিডে মোড় পর্যন্ত পাঁচ কিলোমিটার দীর্ঘ সড়কটির সংস্কারে কাজ শুরু হয় ২০২০ সালে। ২৬৯ কোটি টাকার এই প্রকল্প শেষ হওয়ার কথা ২০২৩ সালে।
তবে কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান ফোরকান আহমদ জানিয়েছেন, ২০২২ সালের জুনেই কাজ শেষ করা যাবে।
প্রকল্প সূত্রে জানা গেছে, সংস্কার শুরুর নয় মাসে ২০ শতাংশ কাজ এগিয়েছে। এ কাজে নিয়োগ দেয়া হয়েছে দুই ঠিকাদার। সে হিসেবে দেড় বছরে কাজ শেষ করতে হলে নয় মাসে ৫০ শতাংশের বেশি কাজ শেষ হওয়ার কথা।
নগরবাসীর অভিযোগ, শহরের ব্যস্থতম এই সড়কের সংস্কারে ধীরগতির কারণে খানাখন্দ বেড়েছে। দীর্ঘদিন ধরে রাস্তার দুপাশ খুঁড়ে ফেলে রাখায় ও ড্রেনের কাজ শেষ না হওয়ায় অল্প বৃষ্টিতেই দেখা দেয় জলাবদ্ধতা। প্রায় সময়ই ঘটে ছোট-বড় দুর্ঘটনা।
শহরের আলীর জাহান এলাকার স্কুল শিক্ষক ফয়সাল রিয়াদ বলেন, ‘বিকল্প সড়ক না থাকায় প্রধান সড়ক দিয়েই চলাচল করতে হয়। ৫ মিনিটের রাস্তা যেতে লাগে ৩০-৪০ মিনিটেরও বেশি। তার মধ্যে আতঙ্কে থাকতে হয়। সড়কে কখন না আবার গাড়ি উল্টে যায়।’
শহরের কালুর দোকান এলাকার ব্যবসায়ী শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘সড়ক উন্নয়নে কক্সবাজারে চলছে তামাশা। প্রধান সড়কসহ বেশ কয়েকটি সড়কের কাজ বছর ঘুরলেও শেষ হয়নি। দোকানের সামনে খোঁড়াখুড়ির কারণে আসে না ক্রেতারা, ব্যবসায় মন্দা প্রায় ছয় মাস ধরে।’
পাহাড়তলী এলাকার অটোরিকশাচালক নূর মোহাম্মদ বলেন, ‘ভাঙাচোরা সড়কে এক ট্রিপ মেরেই হাপিয়ে যাই। সড়কের অনেক জায়গায় বড় বড় গর্তে ঢুকে যায় গাড়ির চাকা। পিটি স্কুল এলাকায় গাড়ি উল্টে কোমরে ব্যথা পেয়েছি কয়েকমাস আগে।’
এ বিষয়ে কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান ফোরকান আহমদ বলেন, ‘পাঁচ কিলোমিটার দীর্ঘ এই সড়কের সংস্কার কাজের সময় বরাদ্দ তিন বছর। তবে এই কাজ শেষ করা হবে দেড় বছরের মধ্যে। এই সময়ের মধ্যে কাজ সম্পন্ন করার জন্য দুইজন সাব-কন্ট্রাকটার নিয়োগ করা হয়েছে।’
ফোরকান আরও বলেন, ‘২০২০ সালের সেপ্টেম্বরে প্রকল্পের কাজ শুরু করার কথা থাকলেও সড়কের পাশের বিভিন্ন খাস ও রেজিস্ট্রিকৃত জমিসংক্রান্ত জটিলতার কারণে কাজ শুরু হয় নভেম্বরে।’
ইতোমধ্যে মধ্যে সড়কের দুপাশের ড্র্যানেজ কাজ সম্পূর্ণ হয়েছে আর কিছু কিছু অংশে কাজ বাকি আছে। বর্ষার কারণে কাজের একটু ধীর গতিতে চললেও এখন পুরোদমে কাজ চলছে উল্লেখ্য করে, তিনি নির্দিষ্ট সময়ে কাজ শেষ করার আশ্বাস দেন।
কক্সবাজার পৌরসভা মেয়র মুজিবুর রহমান বলেন, ‘পৌরসভার অধীনে সব সড়কের সংস্কার কাজ চলছে দ্রুত গতিতে। ইতোমধ্যে বিভিন্ন সড়কের ড্রেন সংস্কারের কাজ শেষ। বেশ কিছু সড়কে আরসিসি ঢালাই শেষের দিকে। আগামী ছয় মাসের মধ্যেই পৌরসভার অধীন সব সড়কে স্বাচ্ছন্দ্যে চলাচল করবে সাধারণ মানুষ।’
প্রকল্পের কাজের বিষয়ে কথা বলতে চাইলে রাজি হননি দুই ঠিকাদারের কেউই। এমনকি নিজেদের পরিচয়ও তারা জানাতে চাননি।