বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে ঘরে ঘরে বোবা কান্না: রিজভী

  •    
  • ১১ অক্টোবর, ২০২১ ১৬:২৮

রিজভী বলেন, ‘আয়ের তুলনায় দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন উল্লম্ফনে মধ্য ও নিম্ন আয়ের মানুষ নীরবে আর্তনাদ করছে। ঘরে ঘরে চলছে বোবা কান্না। সংসার চালানোই এখন দায় হয়ে পড়েছে।’

নিত্যপণ্যের ঊর্ধ্বগতি নিয়ে সরকারের কোনো বক্তব্য না থাকায় ক্ষোভ ঝেড়েছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। অভিযোগ করেছেন, সরকার সমর্থকরাই পণ্যমূল্য বাড়িয়ে দিচ্ছেন।

রিজভী বলেছেন, ‘বর্তমানে এক শাসরুদ্ধকর দুঃসহ পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে অতিবাহিত হচ্ছে দেশের মানুষের জীবন। রাষ্ট্রীয় দস্যুদের পায়ের তলায় আজকের মানবতা। একদিকে স্বেচ্ছাচারী একনায়ক শাসকের শোষণে নিষ্পেষিত জনগণ, অন্যদিকে দ্রব্যমূল্যের ভয়াবহ ঊর্ধ্বগতিতে অসহনীয় হয়ে উঠেছে জীবনযাপন।’

সোমবার বিএনপির নয়াপল্টন কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

রিজভী বলেন, ‘গতকাল প্রধানমন্ত্রী বলেছেন-বাংলাদেশের উন্নয়ন বিশ্বকে তাক লাগিয়ে দিয়েছে। আসলেই তিনি তাক লাগিয়ে দিয়েছেন মানুষের ওপর অসহনীয় ঋণের বোঝা চাপিয়ে দিয়ে, তাক লাগিয়ে দিয়েছেন দ্রব্যমূল্যের সীমাহীন ঊর্ধ্বগতিতে মানুষের জীবনকে দুর্বিষহ করে তুলে, তাক লাগিয়ে দিয়েছেন দেশ থেকে লাখ লাখ কোটি টাকা বিদেশে পাচারের সুযোগ করে দিয়ে, ব্যাংক লুটের সুযোগ করে দিয়ে। কিন্তু তথাকথিত উন্নয়নের বাতাস দিয়ে মানুষের মন জেতা যাবে না।’

তিনি বলেন, ‘করোনায় মানুষের আয় রোজগারে যখন টানাপড়েন অবস্থা, তখন হু হু করে বাড়ছে নিত্যপণ্যের দাম। খাদ্যদ্রব্য, চাল, ডাল, তেল, লবণ, কাঁচা মরিচ, পেঁয়াজ, তরিতরকারি, মাছ-মাংশ, পোল্ট্রি মুরগি, ডিম, চিনি, দুধ থেকে শুরু করে নিত্যপ্রয়োজনীয় ও অপরিহার্য দ্রব্যগুলোর মূল্য বৃদ্ধি পাচ্ছে প্রতিদিন।

পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে রুহুল কবীর রিজভীসহ অন্য নেতারা। ছবি: নিউজবাংলা

‘ক্রমে এসব পণ্য সংগ্রহ অসম্ভব হচ্ছে দরিদ্র ও মধ্যবিত্ত মানুষগুলোর জন্য। এর পাশাপাশি গ্যাস, বিদ্যুৎ ও পানির বিলও বৃদ্ধি করা হয়েছে পাল্লা দিয়ে। গতকালও এলপিজি গ্যাসের দাম বাড়ানো হয়েছে। এর পেছনে রয়েছে সরকারের প্রচ্ছন্ন মদদে আওয়ামী লীগের কালোবাজারি, মুনাফাখোর, মজুতদার সিন্ডিকেট।’

রিজভী বলেন, ‘আয়ের তুলনায় দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন উল্লম্ফনে মধ্য ও নিম্ন আয়ের মানুষ নীরবে আর্তনাদ করছে। ঘরে ঘরে চলছে বোবা কান্না। সংসার চালানোই এখন দায় হয়ে পড়েছে।’

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, ‘এত কিছুর পরও নিশিরাতের ভোট ডাকাত সরকারের কোনো দায়দায়িত্ব আছে সেটি মনে করছে না। জনগণের প্রতি তাদের কোনো দয়ামায়া নেই। তাই আজকে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে সরকার কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না।’

দ্রব্যমূল্য বেড়ে যাওয়ার জন্য আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীদের দায়ি করেন রিজভী।

বলেন, ‘পণ্যের ঊর্ধ্বগতির জন্য যে মধ্যস্বত্বভোগীরা লাভবান হচ্ছেন, তারা সবাই আওয়ামী লীগের, কিংবা তাদের অঙ্গ সংগঠনের সঙ্গে জড়িত। বাজারে সরকারের কোনো নজরদারি নেই। তাদের নজর লুটপাটে।’

এক সময় বর্গীরা বাংলাদেশে লুট করতে আসত, আর এখন দেশের নেতারা লুট করে বিদেশে আবাস গড়ছেন বলে অভিযোগ করেন রিজভী।

পণ্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির জন্য তিনি সিন্ডিকেটকে দায়ি করেন। সেই সিন্ডিকেটের অন্যতম বাণিজ্যমন্ত্রী, খাদ্যমন্ত্রীরা নিজেরাই বলে অভিযোগ করেন তিনি।

বিএনপির এই নেতা বলেন, বাণিজ্যমন্ত্রী, খাদ্যমন্ত্রী দুজনেই ব্যবসায়ী। তারাও এ সিন্ডিকেটের সঙ্গে জড়িত।’

সংবাদ সম্মেলনে আগে ‘খাদ্য উৎপাদন, আমদানি ও বাজার পরিস্থিতি প্রেক্ষিত খাদ্য অধিকার’ সেমিনারে অধিকাংশ বক্তা চালের দাম বৃদ্ধির পেছনে খাদ্যমন্ত্রী ও তার নিয়ন্ত্রণাধীন রাইস মিলগুলোকে দায়ী করেন।

দেশে এশিয়ার মধ্যে বাংলাদেশের বাজারে চালের দাম সবচেয়ে বেশি বলে জানান বক্তারা।

এ ছাড়া ভোজ্য তেল, পেঁয়াজের দাম নিয়ে বাণিজ্যমন্ত্রী মুখে কুলুপ এঁটেছেন সিন্ডিকেটের সঙ্গে জড়িত থাকার কারণে বলেও অভিযোগ করেন তারা।

এ সময় বিএনপি নেতা রিজভী আগামী জাতীয় নির্বাচন নিয়ে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বক্তব্যও তুলে ধরেন।

স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে নিহত জেহাদের মৃত্যুবার্ষিকীতে রোববার বক্তব্যে তারেক রহমানকে উদ্ধৃত করে রিজভী বলেন, ‘ তিনি (তারেক রহমান) বলেছেন, আগামী জাতীয় নির্বাচন হতে হবে নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে। ২০১৪ কিংবা ২০১৮ সালের মতো জনগণের ভোটাধিকার নিয়ে আর জোচ্চুরি-ডাকাতি-প্রতারণা করতে দেয়া হবে না।’

তাদের এ দাবি মেনে না নিলে রাজপথে এর ফয়সালা হবে বলে জানান এই নেতা।

এসময় বিএনপি ঢাকা মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক আমানউল্লাহ আমান, দক্ষিণের আহ্বায়ক আব্দুস সালামসহ কেন্দ্রীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

এ বিভাগের আরো খবর