ঠাকুরগাঁও সদরে সনাতন ধর্মাবলম্বী ও আন্তর্জাতিক কৃষ্ণভাবনামৃত সংঘের (ইসকন) সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের আশঙ্কায় শ্রীশ্রী রসিক রায় জিউ মন্দির এলাকায় অনির্দিষ্টকালের জন্য ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে।
সদর উপজেলার আউলিয়াপুর ইউনিয়নের মাদারগঞ্জ গ্রামের এ মন্দির এলাকায় সোমবার সকাল থেকে এ নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।
রোববার রাতে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শাহরিয়ার রহমান এ নির্দেশ দেন।
গত বছরও শারদীয় দুর্গোৎসবের শুরুর দিকে এ মন্দিরে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়।
ইউএনও শাহরিয়ার জানান, মন্দির এলাকায় পূর্ব বিরোধের জেরে দুর্গাপূজার আয়োজন ১২ বছর ধরে নিষিদ্ধ। তারপরও এবার সনাতন ধর্মাবলম্বীরা মন্দিরের বাইরে উৎসব উদযাপনের প্রস্তুতি নেন। অন্যদিকে মন্দিরের ভেতরে দুর্গাপূজার প্রস্তুতি নেন ইসকন মতাদর্শীরা। এ নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে দেখা দেয় উত্তেজনা। তবে তাদের কাউকেই বিরোধপূর্ণ মন্দিরে দুর্গাপূজার অনুমতি দেয়া হয়নি।
ইউএনও নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আইনশৃঙ্খলার অবনতি হতে পারে এমন আশঙ্কায় মন্দির এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। পূজা শেষ হলে এটি প্রত্যাহার করা হবে।’
তিনি জানান, রশিক রায় জিউ মন্দিরের জমি নিয়ে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের এক পক্ষের সঙ্গে এলাকার ইসকন অনুসারীদের দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছে।
উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, প্রায় ১০০ বছর আগে আউলিয়াপুর ইউনিয়নের মাদারগঞ্জ এবং ভাতগাঁও মৌজা এলাকায় রসিক রায় জিউ মন্দির নির্মাণ করেন জমিদার বর্ধামনি চৌধুরানী। মন্দির পরিচালনার জন্য আরও ৮১ একর সম্পত্তি দান করেন তিনি।
২০০৯ সালে মন্দিরের খরচাপাতির হিসাব নিয়ে সনাতন ধর্মাবলম্বী ও ইসকন অনুসারীদের মধ্যে দ্বন্দ্ব হয়। হিন্দু পূজা উদযাপন পরিষদ তখন মন্দির পরিচালনার দায়িত্ব দেয় ইসকনকে। এতে দুই পক্ষের মধ্যে দ্বন্দ্ব প্রকট হয়। এর জেরে সংঘর্ষে মৃত্যু হয় ফুলবাবু নামে এক সনাতন ধর্মাবলম্বীর।
এ ঘটনার পর মন্দির সীমানায় দুর্গাপূজা উদযাপন নিষিদ্ধ করে প্রশাসন। তখন থেকে মন্দিরে বন্ধ আছে দুর্গাপূজা।
গত বছরও দুর্গাপূজার আগে ওই মন্দির ও এর আশপাশের এলাকায় জারি করা হয় ১৪৪ ধারা।