বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

বড় বিনিয়োগ নিয়ে আসছে সৌদি আরব

  •    
  • ১১ অক্টোবর, ২০২১ ০৮:১৬

সৌদি আরব পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপের আওতায় ঢাকা থেকে পায়রা বন্দর পর্যন্ত রেলপথ নির্মাণ এবং কক্সবাজারকে আন্তর্জাতিক মানের পর্যটনকেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলায় আগ্রহী।

দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যিক সম্পর্ক জোরদার করতে বাংলাদেশে বড় অঙ্কের বিনিয়োগ করতে চায় সৌদি আরব। বিদ্যুৎ, জ্বালানি, পর্যটন, অবকাঠামোসহ নানা খাতে বিনিয়োগ করতে চায় দেশটি।

বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) সূত্রে জানা গেছে, সৌদি আরব পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপের আওতায় ঢাকা থেকে পায়রা বন্দর পর্যন্ত রেলপথ নির্মাণ এবং কক্সবাজারকে আন্তর্জাতিক মানের পর্যটনকেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলায় আগ্রহ প্রকাশ করেছে।

এ ছাড়া বিদ্যুৎকেন্দ্র, কৃষি প্রক্রিয়াকরণ, স্বাস্থ্য ও বাংলাদেশে পেট্রোকেমিক্যাল প্রক্রিয়াজাতশিল্পে বিনিয়োগ করতে চায় দেশটি।

বর্তমানে সৌদি আরবের সঙ্গে বাংলাদেশের দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যের পরিমাণ অনেক বেশি। ২০২০-২১ অর্থবছরে বাংলাদেশ সৌদি থেকে ১০৯ কোটি ডলারের পণ্য আমদানি করেছে। বিপরীতে রপ্তানি করেছে মাত্র ২৬ কোটি ডলার। এই ঘাটতি কমিয়ে আনতে বাংলাদেশ সরকার এ দেশে সৌদি বিনিয়োগ বাড়াতে চায়।

বিডার এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বাংলাদেশের ১৩৭টি পণ্যের সৌদি বাজারে প্রবেশের জন্য শুল্কমুক্ত সুবিধার ব্যাপারেও ইতিবাচক দেশটি। সৌদি বিনিয়োগমন্ত্রী বাংলাদেশ সফরকালে এ বিষয়ে ঘোষণা আসতে পারে।’

আগামী ২৮-২৯ নভেম্বর বাংলাদেশের বিনিয়োগ সম্মেলনে যোগ দিতে সৌদি বিনিয়োগমন্ত্রী বাংলাদেশ সফরে আসবেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেসরকারি খাতবিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানের নেতৃত্বে একটি উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধিদল গত মাসে সৌদি আরব সফর করেন। সফরকালে সৌদি বাণিজ্যমন্ত্রী মজিদ বিন আব্দুল্লাহ আল কাসাবির সঙ্গে বৈঠক করেন তারা।

ওই বৈঠকে সৌদি আরবের বাজারে ১৩৭টি বাংলাদেশি পণ্যের শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকার দেয়ার জন্য সৌদি সরকারকে অনুরোধ করেন সালমান এফ রহমান। এ ছাড়া সৌদি আরবের গুরুত্বপূর্ণ দুই মন্ত্রীর সঙ্গেও বৈঠক করে বাংলাদেশের প্রতিনিধিদলটি।

বিডা কর্তৃপক্ষ বলেছে, বাংলাদেশের এ প্রস্তাব ইতিবাচক দৃষ্টিতে বিবেচনা করছে সৌদি সরকার। ১৩৭টি পণ্যের মধ্যে বেশির ভাগই রপ্তানিযোগ্য পণ্য। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে তৈরি পোশাক, চমড়া ও চামড়াজাত পণ্য, হিমায়িত মাছ, পাটপণ্য ইত্যাদি।

বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরা বলেছেন, সৌদি আরব বাংলাদেশি পোশাকের ভালো বাজার হতে পারে। তবে সেখানে রপ্তানি বাড়াতে বাংলাদেশকে ব্র্যান্ডিং করতে হবে। পোশাক প্রদর্শনীর আয়োজন করতে হবে। বাংলাদেশি ব্যবসায়ীদের সেখানে অংশ নিতে হবে।

যোগাযোগ করা হলে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান মো. সিরাজুল ইসলাম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমরা সৌদি তিন মন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করেছি। তারা সবাই বাংলাদেশে সাম্প্রতিক উন্নয়নের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন। বিভিন্ন খাতে বিনিয়োগে আগ্রহ দেখিয়েছেন।’

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সৌদি আরব অবকাঠামো খাতে বিনিয়োগ করতে বেশি আগ্রহী। বিশেষ করে বিদ্যুৎ, জ্বালানি, কৃষি ও খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ, বন্দর উন্নয়নে উৎসাহ দেখিয়েছে তারা।

পতেঙ্গা টার্মিনালে ১০০ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের প্রস্তাব করেছে সৌদি আরব। এ ছাড়া চট্টগ্রামের বে-টার্মিনালেও বিনিয়োগে তাদের আগ্রহ আছে বলে জানাান তিনি।

সিরাজুল ইসলাম জানান, ‘সফরকালে আমরা আসলে বাংলাদেশকে মার্কেটিং করেছি। বিনিয়োগের পরিমাণ নিয়ে কোনো আলোচনা হয়নি।’

বিডার চেয়ারম্যান আরও জানান, বাংলাদেশের সঙ্গে বিনিয়োগসংক্রান্ত একটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) ঝুলে আছে। সৌদি সরকার বলেছে, যেকোনো সময় এটি সই হবে। এটি হলে বাংলাদেশে পিপিপিতে অনেক প্রকল্পে বিনিয়োগের সুযোগ প্রসারিত হবে বলে জানান তিনি।

বিডার কর্মকর্তারা বলেছেন, বাংলাদেশের প্রতিনিধিদলের সদস্যরা সফরকালে সৌদি বিনিয়োগমন্ত্রী খালিদ আল ফালিহর সঙ্গেও বৈঠক করেন। বৈঠকে বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণে বাংলাদেশের বিভিন্ন সুবিধা তুলে ধরা হয়।

পাশাপাশি সৌদি বিনিয়োগকারীদের জন্য প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী একটি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল নির্ধারণ করার প্রস্তাব দেয়া হয়। সৌদি বিনিয়োগমন্ত্রী বাংলাদেশের এই প্রস্তাবকে স্বাগত জানান।

বিডার চোরম্যান বলেন, ‘আমরা তিন মন্ত্রীকে বাংলাদেশের আসন্ন বিনিয়োগ সম্মেলনে অংশগ্রহণ করতে বলেছি। আশা করছি, সৌদি বিনিয়োগমন্ত্রী আসবেন।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সভাপতি রিজওয়ান রহমান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘সৌদি আরবের বিশাল ফান্ড আছে। আমরা চাইলে তাদের কাছ থেকে এই ফান্ড আনতে পারি। তবে বিনিয়োগটা হতে হবে অবকাঠামো খাতে এবং বড় প্রকল্পে।’

তিনি বলেন, সৌদি আরবের সঙ্গে আমরা পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপে (পিপিপি) বিনিয়োগ করতে পারি। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে পিপিপির আওতায় প্রকল্প করা এখনও জটিল ও সময়সাপেক্ষ।

একটা প্রকল্প করতে যদি পাঁচ বছর লেগে যায়, তা হলে কেউই পিপিপির প্রতি উৎসাহিত হবে না। পিপিপিকে আরও সহজ করতে হবে এবং প্রকল্পের সময় কমপক্ষে এক বছরে নামিয়ে আনতে হবে। এ জন্য প্রত্যেক মন্ত্রণালয়ে আলাদা পিপিপি উইং গঠনের দাবি জানান তিনি।

এ বিভাগের আরো খবর