ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হলে প্রথম বর্ষের দুই শিক্ষার্থীকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে একই বর্ষের ছয় ছাত্রলীগ কর্মীর বিরুদ্ধে।
শুক্রবার সন্ধ্যায় হলের পুকুর পারে এ ঘটনা ঘটে।
ভুক্তভোগীরা হলেন অর্থনীতি বিভাগের রেহমান খালিদ এবং ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের আরাফাত রহমান শৈশব। এদের মধ্যে রেহমান ছাত্র ইউনিয়ন এবং আরাফাত ছাত্রদলের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত।
অভিযুক্ত ছাত্রলীগ কর্মীদের মধ্যে দুজনের নাম জানা গেছে।
এরা হলেন ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের মিম্মুর সালিম পরাগ এবং প্রিন্টিং অ্যান্ড পাবলিকেশনস স্টাডিজ বিভাগের সোপান। দুজনই ছাত্রলীগের সহসভাপতি কামাল উদ্দীন রানার ‘ছোট ভাই’ হিসেবে পরিচিত।
অভিযোগের বিষয়ে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী আরাফাত রহমান শৈশব বলেন, ‘আজকে জহুরুল হক হলের মাঠে আমাদের সঙ্গে একটি ব্যাচের খেলা ছিল। খেলা শেষে আমি এবং বন্ধু খালিদ পুকুর পারে দাঁড়িয়েছি। এরই মধ্যে অভিযুক্তরা জানতে পারে আমরা হলে ঢুকেছি। কারণ ফেসবুকে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে লেখালেখি করার কারণে তারা আমাদের রাজনৈতিক পরিচয় জানত।’
তিনি বলেন, ‘একটু পর পরাগ, সোপানসহ আরও চারজন এসে খালিদকে সার্চ করা শুরু করে। এরপর তাকে অকথ্য ভাষায় গালাগাল করে থাপ্পড় দেয়। আমি সামান্য দূরে ছিলাম। ঘটনা দেখে দৌড়ে এসে খালিদকে কেন মারা হচ্ছে জিজ্ঞেস করি। পাশ থেকে আরেকজন আমাকে দেখিয়ে বলে এ ছাত্রদল করে।
‘এরপর তারা আমাকেও খারাপ ভাষায় গালাগাল করে মারা শুরু করে। মারতে মারতে তারা আমাদের শার্ট ছিঁড়ে দেয়। এরপর আমাদের হল থেকে বের করে দেয়।’
শৈশব বলেন, ‘ঘটনার পর আমরা দুজন প্রক্টর (অধ্যাপক ড এ কে এ গোলাম রাব্বানী) স্যারকে বিষয়টি জানিয়েছি। স্যার বলেছেন, তোমরা এটি আর কাউকে জানাইয়োনা। আমি সমাধান করে দিব।’
অভিযোগের বিষয়ে মিম্মুর সালিম পরাগকে ফোন দেয়া হলে তিনি প্রতিবেদকের পরিচয় শুনে ফোন কেটে দেন। এরপর আবার ফোন দেয়া হলেও ফোন ধরেননি।
অভিযোগের বিষয়টি অস্বীকার করে আরেক অভিযুক্ত শিক্ষার্থী সোপান বলেন, ‘ঘটনা উল্টো। তাদের সঙ্গে হলের করিডোরে আমাদের প্রথম দেখা হয়। আমাদের সঙ্গে কথা শেষ করে তারা পুকুর পারের দিকে যায়৷ এ সময় দেখি তাদের একজন সিগারেট খেয়ে আমাদের হলের পরিবেশ নষ্ট করছে। তাই আমি তাকে সিগারেট খেতে নিষেধ করি।
‘এ সময় তার সঙ্গে থাকা আরাফাত আমার সঙ্গে খুব উগ্র আচরণ করে। একপর্যায়ে সে আমার ওপর চড়াও হয়। তখন আমরা তাদের আঘাত প্রতিহত করার জন্য যা দরকার করেছি। এরপর তাদের আমরা হল থেকে বের করে দিই।’
এ বিষয়ে হল ছাত্রলীগের সহসভাপতি কামাল উদ্দীন রানা বলেন, ‘ঘটনাটা আমি শুনিনি। খোঁজ নিচ্ছি।’
এ বিষয়ে প্রক্টর অধ্যাপক গোলাম রাব্বানী বলেন, ‘তারা আমাকে অবহিত করেছে। যেহেতু এটি হলের ভেতরে ঘটেছে, তাই হল প্রভোস্টকে জানিয়েছি। তিনি খতিয়ে দেখছেন।’
তবে হল প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. দেলওয়ার হোসেন বলেন, ‘এ রকম কথা তো আমাকে কেউ বলেনি। আমার খোঁজ নিতে হবে। খোঁজ নিচ্ছি।’