ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক ও বিভাগীয় প্রধান ড. আবুল মনসুর আহাম্মদ তার একটি গবেষণা নিবন্ধে অন্যের লেখা চুরি করেছেন বলে প্রমাণ পাওয়া গেছে।
নিউজবাংলার অনুসন্ধানে দেখা গেছে, ২০১৩ সালে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক আবুল মনসুর আহাম্মদ সহযোগী অধ্যাপক থেকে অধ্যাপক পদে পদায়নের জন্য তার নিজের ১০টি গবেষণামূলক লেখা জমা দেন। এগুলোর একটিতে অনেকাংশ হুবহু তুলে দেয়া হয়েছে একটি জাতীয় দৈনিকে প্রচারিত আরেকজন শিক্ষকের লেখা থেকে। এটিকে গবেষণাকাজে চৌর্যবৃত্তি বলা হয়ে থাকে, যার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় নির্ধারিত শাস্তি রয়েছে।
ইতোমধ্যে গত ২ মে আবুল মনসুর বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সদস্য মনোনীত হন। সেখানে তিনি আচার্য ও রাষ্ট্রপতির প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করেন। ৫ জুন তিনি বিভাগের চেয়ারপারসনের দায়িত্ব পেয়েছেন।
একই অভিযোগে এ বছরের শুরুতে ওই বিভাগের আরেক শিক্ষক সামিয়া রহমানের পদানবতি হয়েছিল। তাকে সহযোগী অধ্যাপক থেকে নামিয়ে সহকারী অধ্যাপক করা হয়।
আরও পড়ুন: সামিয়ার আরও অনিয়ম: অনুমতি না নিয়ে বিদেশ ভ্রমণ
এ ছাড়া সামিয়ার গবেষণা প্রবন্ধের সহলেখক অপরাধ বিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক সৈয়দ মাহফুজুল হক মারজানকে শিক্ষাছুটি শেষে চাকরিতে যোগ দেয়ার পর দুই বছর পদোন্নতি ছাড়া একই পদে থাকতে হবে।
পত্রিকার নিবন্ধ থেকে ‘চুরি’
আবুল মনসুরের লেখা নিবন্ধের শিরোনাম ‘Copyright protection in Bangladesh: A study of Intellectual and Copyright Legislation’। এটি ২০০৯ সালে ডিসেম্বরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের সোশ্যাল সায়েন্স রিভিউ-এর ভলিউম ২৬-এ প্রকাশিত হয়।
এই লেখাটির অনেকাংশ আবুল মনসুর অন্যের লেখা থেকে নিলেও তথ্যসূত্র সঠিকভাবে ব্যবহার করেননি। যেভাবে ব্যবহার করেছেন, তাতে এটি তার নিজের লেখা বলে মনে হয়েছে। এভাবে রেফারেন্স দেয়া কোনোভাবেই গবেষণাকাজের অংশ হতে পারে না বলে মনে করেন শিক্ষাবিদরা।
নিউজবাংলার কাছে আবুল মনসুরের লেখা নিবন্ধটি রয়েছে। সেই সঙ্গে রয়েছে দ্য ডেইলি স্টার পত্রিকায় দুই কিস্তিতে প্রকাশিত চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের তখনকার শিক্ষক মোহাম্মদ মনিরুল আজমের মূল লেখাটি, যেখান থেকে অনুচ্ছেদের পর অনুচ্ছেদ তুলে দিয়েছেন আবুল মনসুর। মনিরুল আজমের লেখাটির শিরোনাম ‘Copyright Law in Bangladesh’। লেখাটি ২০০৬ সালের ২১ জানুয়ারি ও ৪ ফেব্রুয়ারি দুই কিস্তিতে প্রকাশিত হয়।
দ্য ডেইলি স্টার পত্রিকায় প্রকাশিত চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষক মোহাম্মদ মনিরুল আজমের লেখা
সোশ্যাল সায়েন্স রিভিউতে আবুল মনসুরের নিবন্ধটি যখন ছাপা হয়, তখন গবেষণা লেখায় মৌলিকত্ব যাচাইয়ের ভালো পদ্ধতি ছিল না। এখন রিভিউয়ার ছাড়াও বিভিন্ন সফটওয়্যারের মাধ্যমে লেখার মৌলিকত্ব যাচাই করা হয়ে থাকে। এ রকম একটি বহুল ব্যবহৃত সফটওয়্যার হলো টার্ন-ইট-ইন।
নিউজবাংলা টার্ন-ইট-ইন সফটওয়্যারের মাধ্যমে পরীক্ষা করে দেখেছে, লেখাটিতে ৬৩ ভাগ চৌর্যবৃত্তির ফলাফল প্রদর্শিত হচ্ছে। এ ছাড়া নিবন্ধের বাকি ৩৭ ভাগ বিভিন্ন উৎস থেকে নিয়ে সামান্য পরিবর্তন করা হয়েছে। ৯ পৃষ্ঠার নিবন্ধের পাঁচ পৃষ্ঠাই অন্যের লেখা থেকে হুবহু নেয়া হয়েছে।
হুবহু বাক্যের ছড়াছড়ি
আবুল মনসুর আহাম্মদের নিবন্ধের ভূমিকা অংশটি মনিরুল আজমের লেখা থেকে হুবহু (লাইন বাই লাইন) তুলে দেয়া। শুধু ওই ভূমিকার শেষ বাক্যে তিনি মনিরুল আজমের নাম উল্লেখ করেছেন।
মনসুরের নিবন্ধের দ্বিতীয় পরিচ্ছদও হুবহু নেয়া হয়েছে মনিরুল আজমের লেখা থেকে, যার কোনো তথ্যসূত্র দেয়া নেই।
ওই নিবন্ধের ‘বিশ্লেষণ, তথ্য ও আলোচনা’ থেকে শুরু করে ‘প্রশাসনিক প্রতিকার’ উপশিরোনামের অনুচ্ছেদ পর্যন্ত প্রায় তিন পৃষ্ঠার লেখার বেশির ভাগ অংশও হুবহু তুলে দেয়া হয়েছে মনিরুল আজমের অনলাইন লেখা থেকে, যার কোনো রেফারেন্স নেই।
সোশ্যাল সায়েন্স রিভিউ-এর ভলিউম ২৬-এ ড. আবুল মনসুর আহাম্মদের প্রকাশিত নিবন্ধ
মনসুরের প্রবন্ধের উপসংহারের পুরোটাই নেয়া হয়েছে মোহাম্মদ মনিরুল আজমের অনলাইন লেখা থেকে, যার কোনো তথ্যসূত্র দেয়া নেই।
এ ছাড়া তার নিবন্ধের বিস্তারিত সাহিত্যিক পর্যালোচনার একটি সম্পূর্ণ পরিচ্ছদ নেয়া হয়েছে ২০০৬ সালে The Journal of Electronic Publishing (Volume 9 Issue 1, Winter 2006)-এ প্রকাশিত ড্যানিয়েল এম ডাউনস (Daniel M. Downes)-এর New Media Economy: Intellectual Property and Cultural Insurrection শীর্ষক প্রবন্ধ থেকে, যার কোনো রেফারেন্স প্রবন্ধে দেয়া নেই।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ড. তানজিম উদ্দিন খান বলেন, ‘গবেষণা একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এখানে রেফারেন্সিং (তথ্যসূত্র দেয়া), কোটেশন দেয়া, বিবলিওগ্রাফি (গ্রন্থপঞ্জি)- এগুলো সঠিকভাবে দিতে হবে। গবেষণা নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো সিরিয়াসনেস নেই। ব্যক্তিগতভাবে অনেকে কাজ করলেও প্রাতিষ্ঠানিকভাবে বিশ্ববিদ্যালয় সেটা নিশ্চিত করতে পারেনি। এখন প্লাজিয়ারিজম চেক করার অনেক সফটওয়্যার এসেছে, তবে কোনো শিক্ষকের যদি দলীয় পরিচয় বেশি থাকে, তবে সেটা (যাচাই) বাদ দেয়া হচ্ছে।’
জার্নালের তখনকার এডিটর যা বলছেন
আবুল মনসুরের নিবন্ধ যখন প্রকাশিত হয়, তখন ওই জার্নালের এডিটর ছিলেন ফরিদ উদ্দিন আহমেদ। তিনি তখন সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন ছিলেন, এখন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য।
লেখায় এ পরিমাণ চৌর্যবৃত্তি থাকার পরও কীভাবে জার্নালে প্রকাশিত হলো, জানতে চাইলে অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘তখন তো আমাদের কিছুই করার ছিল না। ওই সময় সফটওয়্যার ছিল না। যাকে দিয়ে লেখা চেক করানো হতো, তিনি যদি ঠিক বলেন, তবে সেটি মেনে নেয়া হতো।’
ফরিদ উদ্দিন বলেন, ‘আমরা কিন্তু তাকে (রিভিউয়ার) ওই স্বাধীনতাটা দিয়ে দিই। তবে তার যদি সেই বিষয়ে জ্ঞান না থাকে বা ওই লিটারেচার সম্পর্কে জানা না থাকে, তবে সমস্যা হয়। অনেকেই আবার লেখাটির মধ্যে ল্যাঙ্গুয়েজ দিয়ে ধরে ফেলে।
‘আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে থাকার সময় কয়েকজনকে ধরেছি। আমি নিজেও কমিটিতে ছিলাম। অনেকের আমরা ডিমোশন দিয়ে দিয়েছি। যেমন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে একজনকে ধরা হলো। তখন আমি কমিটির চেয়ারম্যান ছিলাম। তাকে কিন্তু স্যাক করা হয়েছিল।
‘শুধু যে সোশ্যাল সায়েন্স জার্নালে এমন হয়েছে, তা নয়। বহু জার্নালে এমন লেখা আছে। এর চেয়েও খারাপ লেখা, যা ১০০ ভাগ কপি করা হয়েছে, দুনিয়ার ভুল নিয়ে জমা দিয়েছে। আপনার হাতে সোশ্যাল সায়েন্স পড়েছে শুধু। অন্য সায়েন্স পড়লে আরও দেখতে পাবেন, সেখানে কী আছে!’
এখন শাহাজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ে যাওয়ার পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তিক্ত অভিজ্ঞতা থেকে বের হতে পেরেছেন দাবি করে অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন বলেন, ‘আমি এখানে টার্ন-ইট-ইন সফটওয়্যারটি নিয়ে এসেছি। এটাতে আমি বিশ্ববিদ্যালয়ের সব শিক্ষককে অ্যাকসেস দিয়ে দিয়েছি। তাদের সেটা সেভাবে মেনে চলতে হবে। আমি বলতে পারি, এখন আমার এই বিশ্ববিদ্যালয় ৯৮ ভাগ প্লাজিয়ারিজমের বাইরে।’
আগে যারা অনিয়ম করেছেন, তাদের জন্য এখন কী ব্যবস্থা নেয়া যেতে পারে, এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘আসলে এখানে তো আমাদেরও দায় থাকে। এ দোষ আমাদেরও। এটা আমাদের ব্যর্থতা। আমি অত পেছনে যেতে রাজি না। তবে এখন থেকে যেন সেটি নিশ্চিত করা হয়, তা দেখতে হবে। আমাদের তখন নানা ধরনের সীমাবদ্ধতা ছিল। আমার ওপরে অনেকে ছিল। আমি ঠিকভাবে লেখা দেখার মতো জায়গা তৈরি করে পারি নাই। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষ যেন এখন এসব বিষয়ে ব্যবস্থা নেন, সেটি অনুরোধ করব আমি।’
জার্নালের বর্তমান এডিটর যা বললেন
সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের বর্তমান ডিন সাদেকা হালিম নিউজবাংলাকে বলনে, ‘এটা আমাদের স্বীকৃত জার্নাল।’
কীভাবে এখানে লেখা পর্যালোচনা করা হয়, জানতে চাইলে অধ্যাপক সাদেকা হালিম বলেন, ‘আমি ডিন হয়েছি ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বরে। আমি দায়িত্ব নেয়ার পর থেকে প্রতিটি আর্টিকেলে প্লাজিয়ারিজম চেক করার জন্য আমাদের যে টিম আছে, তারা বিষয়টি দেখে। এ ছাড়া বিভিন্ন সফটওয়্যারের মাধ্যমে দেখা হয়। আমি সব সময় আমাদের শিক্ষকদের বলে দিই যে, যেহেতু লেখাটা আপনাদের, তাই আপনারা এটা ভালোভাবে চেক করে নেবেন।’
তিনি বলেন, ‘অনেকেই শুরুতে জানেন না আর্টিকেল কীভাবে লিখতে হয়। আস্তে আস্তে যখন ম্যাচিউরড পর্যায়ে যান, তখন বুঝতে পারেন। এখন শিক্ষকরা নিজেরা চেক করে নেন। তারপরও আমরা অফিস থেকে চেক করে যদি দেখি, এটা বেশি কপি হয়েছে বা প্যারাফ্রেজ করতে পারেনি, তবে আমরা সেটি আবার তাদের ফেরত দিয়ে দিই। এরপর এটি রিভিউয়ারের কাছে যায়। তিনি কমেন্টস দেন। তার ওপরে সেই শিক্ষকরা কাজ করেন। এরপর ফাইনালি সেটা সাবমিট করা হয়।’
এখন প্লাজিয়ারিজম বা চৌর্যবৃত্তির তেমন সুযোগ নেই জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আগে শিক্ষকদের সেভাবে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়নি। তারা সচেতন ছিলেন না। এখন সেটা আছে। সে ক্ষেত্রে অনেককেই দোষ দিতে পারি না। তবে আপনি যদি সিনিয়র হয়ে যান, আর তারপরেও এভাবে প্লাজিয়ারিজম করেন, তবে সেটার দায়দায়িত্ব আপনাকেই নিতে হবে।’
এ বিষয়ে ড. আবুল মনসুর আহাম্মদের বক্তব্য নেয়ার চেষ্টা করেছে নিউজবাংলা। তবে একাধিকবার তার মোবাইল ফোনে কল করা হলেও তিনি ধরেননি, জবাব দেননি খুদে বার্তার। এরপর তার হোয়াটসঅ্যাপ নম্বরে বার্তা পাঠান নিউজবাংলা প্রতিবেদক। তিনি সেটি ‘সিন’ করার পরপরই নিউজবাংলা প্রতিবেদককে ব্লক করে দেন।
মোহাম্মদ মনিরুল আজম এখন দেশের বাইরে আছেন। তার সঙ্গে নিউজবাংলার যোগাযোগ সম্ভব হয়নি। তিনি এখন স্টকহোম বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষক। এ বিষয়ে মন্তব্যের জন্য তাকে মেইল করা হলেও উত্তর পাওয়া যায়নি।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক ও বিভাগীয় প্রধান ড. আবুল মনসুর আহাম্মদ
চৌর্যবৃত্তি কখন বলা হবে?
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন শিক্ষক বলেন, ‘অন্য কারও লেখা নিলে সে ক্ষেত্রে সেটি যদি কোটেশন হয়ে থাকে, তাহলে বড় না হওয়া ভালো। তবে সেটার সঙ্গে ফুটনোট ও রেফারেন্স সেকশনে লেখকের নাম, আর্টিকেল হলে ইনভার্টেট কমার মধ্যে সেটির নাম, মেইন টেক্সটের নাম, ভলিউম নম্বর যাবে। অবশ্যই সংস্করণ উল্লেখ করতে হবে। অনেক ক্ষেত্রে এটা পরিবর্তন হয়। এটা অবশ্যই করতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘বড় লেখা নেয়ার ক্ষেত্রে যদি এমন হয়, আধা পৃষ্ঠা নিয়ে নেয়া হচ্ছে, তবে সেটাকে সামারাইজ করতে হবে। সামারাইজ করে নিচে ফুটনোট ব্যবহার করতে হবে। সেটা সঠিকভাবে রেফারেন্স দিতে হবে। সেখানে উল্লেখ করতে হবে অমুক বা তমুক আর্টিকেলের তিন পৃষ্ঠা নেয়া হয়েছে। তবে অনেক সময় পাঁচ-ছয় লাইন হলে টেক্সটের মধ্যে ওই অংশটিকে ইটালিক হরফ করে দিতে হয়। এখানে আলাদা প্যারাগ্রাফ করতে হবে। এতে লেখকের নাম দিয়ে দিতে হবে। এসব যদি না থাকে সেটা শাস্তিযোগ্য।’
নীতিমালা নেই
গবেষণাকাজে প্লাজিয়ারিজম নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এখনও কোনো নীতিমালা নেই, তবে সেটি তৈরি করা হচ্ছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক এ এস এম মাকসুদ কামাল নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এখনও এটা আমরা ঠিক করতে পারিনি। তাই নীতিমালার মধ্যে কী কী থাকবে, সেটি আগে থেকেই জানাতে চাই না। তবে সেটি আন্তর্জাতিক মানসম্মত হবে।’
যেহেতু বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনো নীতিমালা নেই, সে ক্ষেত্রে এখন কারও চৌর্যবৃত্তি ধরা পড়লে কী ব্যবস্থা নেয়া হবে, জানতে চাইলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এ বিষয়ে সিন্ডিকেট থেকে ব্যবস্থা নেয়া হয়। শোকজ দেয়া হয়, ট্রাইব্যুনাল গঠন করা হয়। সেখানে যার নামে অভিযোগ, তার নিজের একজন লোক রাখার সুযোগ আছে। তাদের সঙ্গে পর্যালোচনা হয়। যদি দোষী সাব্যস্ত হয়, তবে চাকরি চলে যাবে। এটা আইনেই আছে।’
তিনি উদাহরণ দিয়ে বলেন, ‘একটা লেখা পেয়েছি, যেটাতে ৯৭ ভাগ চুরি করা। সেখানে শাস্তি দেয়া হয়েছে ডিমোশন। তবে আমি বলেছি, চাকরি গেলে সেটা ভালো হতো। এখন সুপ্রিম কোর্ট থেকে অনেকেই রায় নিয়ে আসে। একজনকে ডিমোশন দেয়া হলো, তবে আরেকজনের চাকরি যাবে কেন; এমন করলে তো বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মান যাবে। এগুলো ঠিক করতে হবে।’
আবুল মনসুর ২০০৮ সালের ২৫ মার্চ গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগে প্রভাষক হিসেবে যোগ দেন। সাত মাস ২২ দিনের মাথায় ২০০৮ সালের ৩ নভেম্বর তিনি সহকারী অধ্যাপক হিসেবে পদন্নতি পান। এরপর এক বছর দুই মাসের মাথায় সহযোগী অধ্যাপক এবং এক বছর ৯ মাসের মাথায় তিনি অধ্যাপক হিসেবে পদোন্নতি পেয়েছেন।