মেজর (অব.) সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান হত্যা মামলার আসামি কক্সবাজারের টেকনাফ মডেল থানার বরখাস্ত হওয়া ওসি প্রদীপ কুমার দাশ দুদকের মামলায় জামিন পাননি।
চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ আদালতে দুপুরে তার জামিনের আবেদন করা হলে বিচারক শেখ আশফাকুর রহমান তা নাকচ করেন।
দুদকের আইনজীবী মাহমদুল হক বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
ঘুষ ও দুর্নীতির মাধ্যমে প্রায় ৪ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে তার বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক।
টেকনাফের বাহারছড়া তল্লাশিচৌকিতে গত ৩১ জুলাই পুলিশের গুলিতে নিহত হন সাবেক মেজর সিনহা। এ ঘটনায় নিহতের বোন শারমিন শাহরিয়ার ফেরদৌস জেলার বিচারিক হাকিম আদালতে প্রদীপসহ নয়জনের নামে মামলা করেন।
৬ আগস্ট কক্সবাজার আদালতে গিয়ে আত্মসমর্পণ করেন ওসি প্রদীপ। এরপর থেকে তিনি কারাগারে আছেন। পরে বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের নির্দেশে প্রদীপ, তার স্ত্রী ও কক্সবাজারের পুলিশ সুপারসহ আটজনের ব্যাংক হিসাব স্থগিত করা হয়।
দুদক চট্টগ্রামের সহকারী পরিচালক রিয়াজ উদ্দিন গত ২৩ আগস্ট প্রদীপ ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে মামলা করেন।
এজাহারে বলা হয়, প্রদীপের বাবা চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (চউক) একজন নিরাপত্তাপ্রহরী ছিলেন। ১৯৯৫ সালে উপপরিদর্শক (এসআই) পদে যোগ দেন প্রদীপ। ২০০২ সাল থেকে তার সম্পদের খোঁজ পাওয়া যেতে থাকে। নানা কারণে তিনি আলোচিত হতে থাকেন।
দুদক জানায়, প্রদীপের স্ত্রী চুমকি নগরের পাথরঘাটা এলাকায় তার বাবার কাছ থেকে একটি ছয়তলা বাড়ি পেয়েছেন বলে সম্পদ বিবরণীতে উল্লেখ করেছেন। কিন্তু চুমকির দুই ভাই ও আরেক বোন বাবার কাছ থেকে কোনো বাড়ি পাননি।
এ থেকে ধারণা করা হয়, প্রদীপ ঘুষ ও দুর্নীতির মাধ্যমে ওই বাড়ি করেছেন। কিন্তু কাগজপত্র তার শ্বশুরের নামে করেন। ২০১৩ সালে শ্বশুরের কাছ থেকে এটির দানপত্র করে নেন।
ওসি প্রদীপের সব সম্পত্তিই স্ত্রী চুমকির নামে। যদিও চুমকি গৃহিণী। তার বিশ্বাসযোগ্য জ্ঞাত আয়ের উৎস নেই। কিন্তু চুমকির নামে ৪ কোটি ৪৪ লাখ ১৮ হাজার ৮৬৯ টাকার সম্পদ থাকার প্রমাণ পেয়েছে দুদক। তার মধ্যে তিনি পারিবারিক ব্যয়সহ অন্যান্য ক্ষেত্রে খরচ করেছেন ২১ লাখ ৭০ হাজার টাকা।
চুমকির আগের সঞ্চয়, উপহার, বাড়িভাড়া থেকে বৈধ আয় হিসেবে ৪৯ লাখ ১৩ হাজার ২৩৪ টাকার সম্পদ পাওয়া যায়। বৈধ আয় বাদ দিলে চুমকির নামে মোট ৩ কোটি ৯৫ লাখ ৫ হাজার ৬৩৫ টাকার অবৈধ স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ পাওয়া যায়। এটি তার জ্ঞাত আয়ের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ নয়।
ওসি প্রদীপ ঘুষ ও দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জিত অর্থ দিয়ে সম্পদ কিনে স্ত্রীর নামে রেখেছেন বলে দুদকের অনুসন্ধানে পাওয়া গেছে।