পাবনার সুজানগর উপজেলার ইউপি চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম শাহজাহানের বিরুদ্ধে সরকারি সহায়তার অর্থ আত্মসাতের প্রমাণ পাওয়া গেছে তদন্তে।
তদন্ত কমিটির জমা দেয়া প্রতিবেদনে এর সত্যতা পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক (ডিসি) বিশ্বাস রাসেল হোসেন।
ডিসি মঙ্গলবার নিউজবাংলাকে জানান, চেয়ারম্যানের বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে তদন্ত প্রতিবেদনটি পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে।
সিরাজুল ইসলাম শাহজাহান উপজেলার দুলাই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান। তার বিরুদ্ধে করোনাকালে সরকারের দেয়া মানবিক সহায়তার অর্থ আত্মসাতের লিখিত অভিযোগ ডিসির কাছে দেন উপকারভোগীরা।
লিখিত অভিযোগে বলা হয়, গত রোজার ঈদের সময় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে দরিদ্রদের জন্য জনপ্রতি ৫০০ টাকা করে বরাদ্দ আসে। দুলাই ইউনিয়নে ১৫০ জন সেই সহায়তা পাওয়ার তালিকায় নাম লেখান।
চেয়ারম্যান শাহজাহান সেই বরাদ্দ থেকে জনপ্রতি ৫০ টাকা করে কেটে রাখেন। আবার অনেকের টাকা না দিয়ে ভুয়া স্বাক্ষর ও টিপসই দিয়ে মাস্টাররোল পূরণ করেছেন।
অভিযোগ পেয়ে তদন্তের জন্য উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রাফিউল ইসলামকে আহ্বায়ক, উপজেলা অ্যাকাডেমিক সুপারভাইজার মনোয়ার হোসেন ও উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা নাজমুল হুদাকে সদস্য করে কমিটি করেন ডিসি।
সেই কমিটি গত ২৯ জুন সরেজমিনে ঘটনা তদন্ত করে। কমিটির জমা দেয়া প্রতিবেদনের একটি কপি সংবাদমাধ্যমের কর্মীদের হাতেও এসেছে।
তাতে দেখা গেছে, উপকারভোগী অন্তত ১৫ জনকে ৫০০ টাকার বদলে দেয়া হয়েছে ৪০০ ও ৪৫০ টাকা। আর তিনজনের নাম তালিকায় থাকলেও তারা কোনো টাকা পাননি। অথচ তাদের নামে টাকা তোলার সই আছে।
তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক রাফিউল ইসলাম বলেন, ‘আমরা অভিযোগকারী ও অভিযুক্ত চেয়ারম্যানের বক্তব্য শুনেছি। চেয়ারম্যান ইউপি সচিবের সহায়তায় ভাতাভোগীদের ৫০০ টাকার বদলে ৪৫০ টাকা করে বিতরণ করেছেন বলে সাক্ষ্য দিয়েছেন ট্যাগ অফিসার ও উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম।
‘আরেক ট্যাগ অফিসার উপসহকারী প্রকৌশলী মনিরুল ইসলামও একই ধরনের বক্তব্য দিয়েছেন। চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম শাহজাহান অভিযোগ অস্বীকার করলেও তার বক্তব্যের সপক্ষে কোনো প্রমাণ দিতে পারেননি। কাজেই তার বিরুদ্ধে মানবিক সহায়তার অর্থ আত্মসাতের যে অভিযোগ উঠেছে, তা সত্য বলে প্রমাণিত হয়েছে।’